[tenolentSC] / results=[3] / label=[ছবি] / type=[headermagazine]

খুলনা-১ আসনে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রার্থীদের হিড়িক

প্রকাশঃ
অ+ অ-
উপরে (বাঁ থেকে) কৃষ্ণ নন্দী, গোবিন্দ হালদার ও কিশোর কুমার এবং নিচে (বাঁ থেকে) অচিন্ত্য কুমার মন্ডল, সুনীল শুভ রায় ও প্রসেনজিৎ দত্ত | ছবি: সংগৃহীত

হিন্দু অধ্যুষিত খুলনার দাকোপ ও বটিয়াঘাটা উপজেলা নিয়ে গঠিত খুলনা-১ আসনে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থীসহ হিন্দু সম্প্রদায়ের আটজন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। টানা প্রায় তিন দশক ধরে এই আসনে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রার্থীরাই সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে আসছেন। এবার আওয়ামী লীগ নির্বাচনের বাইরে থাকায় ভোটের ফলাফল কোন দিকে যাবে, তা নিয়েই নজর রয়েছে স্থানীয়দের।

খুলনা-১ আসনে জামায়াতসহ ছয়টি রাজনৈতিক দল হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রার্থী দিয়েছেন। এছাড়া স্বতন্ত্র হিসেবে দুজন হিন্দু প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। বিএনপির দুই নেতা মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করলেও শেষ পর্যন্ত জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক ও সংসদ সদস্য আমীর এজাজ খানই জমা দিয়েছেন। জামায়াত ডুমুরিয়া উপজেলা হিন্দু কমিটির সভাপতি কৃষ্ণ নন্দীকে প্রার্থী করেছে।

মনোনয়নপত্র দাখিল শেষে মিয়া গোলাম পরওয়ার জানিয়েছেন, জামায়াতে ইসলামী ৮–দলীয় সমঝোতার ভিত্তিতে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। আরও দুটি দল যুক্ত হওয়ায় জোটের সংখ্যা দশ। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন পর্যন্ত আসনভিত্তিক সমঝোতার চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।

জেলার ছয়টি আসনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া ৪৬ জনের মধ্যে ১১ জন হিন্দু সম্প্রদায়ের। এর মধ্যে মাত্র দুজন স্বতন্ত্র প্রার্থী। বাকিরা দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করতে চান। এই ১১ জনের মধ্যে আটজনই খুলনা-১ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। অর্থাৎ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রার্থীদের প্রায় ৭৩ শতাংশই এই আসনে লড়তে চান।

খুলনা-১ আসনে সবচেয়ে বেশি ১৩টি মনোনয়নপত্র জমা হয়েছে। এতে রয়েছেন বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের সুনীল শুভরায়, জাতীয় পার্টির মো. জাহাঙ্গীর হোসেন, জামায়াতের কৃষ্ণ নন্দী, সিপিবির কিশোর কুমার রায়, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. আবু সাঈদ, জেএসডির প্রসেনজিৎ দত্ত, বিএনপির আমীর এজাজ খান, বাংলাদেশ মাইনরিটি জাতীয় পার্টির প্রবীর গোপাল রায়, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের ফিরোজুল ইসলাম, গণ অধিকার পরিষদের জি এম রোকনুজ্জামান, বাংলাদেশ সম অধিকার পরিষদের সুব্রত মণ্ডল, স্বতন্ত্র প্রার্থী গোবিন্দ হালদার ও চালনা পৌরসভার সাবেক মেয়র অচিন্ত্য কুমার মণ্ডল।

এই প্রার্থীদের মধ্যে সংসদ নির্বাচনে অভিজ্ঞ বিএনপির আমীর এজাজ খান, ইসলামী ফ্রন্টের সুনীল শুভরায় ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. আবু সাঈদ। সিপিবির কিশোর কুমার রায় দাকোপ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী অচিন্ত্য কুমার মণ্ডল চালনা পৌরসভার মেয়র ছিলেন। বাকিরা তুলনামূলকভাবে কম পরিচিত।

বিএনপির প্রার্থী আমীর এজাজ খান বলেন, ‘তিন দশকের বেশি সময় ধরে এলাকার মানুষের পাশে আছি। হিন্দু-মুসলমান সব সম্প্রদায়ের মানুষের ভালোবাসা পেয়েছি। সবাইকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করতে চাই। জয়ের ব্যাপারে পুরোপুরি আশাবাদী।’

দলীয় ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, খুলনা-১ আসনে ১৯৯১ সালের পর থেকে ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির একতরফা নির্বাচন ছাড়া বিএনপি কখনো জেতেনি। এরপর সব সময় সংখ্যালঘু প্রার্থী জিতেছেন। একসময় বাম দলের প্রভাব থাকলেও জামায়াতের অবস্থান সবসময় দুর্বল ছিল। সাম্প্রতিক সময়ে জামায়াতের সাংগঠনিক কার্যক্রম বেড়েছে।

জামায়াতের প্রার্থী কৃষ্ণ নন্দী বলেন, ‘হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান ও মুসলমান সব ধর্মের মানুষের কাছ থেকেই ইতিবাচক সাড়া পাচ্ছি। খুলনা-১ আসনে জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী।’

মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ধর্ম নয়, ন্যায়, ইনসাফ ও সুশাসনই জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতির মূল ভিত্তি। ভিন্ন ধর্মাবলম্বীরাও এই দর্শন সমর্থন করলে জামায়াতে যুক্ত হতে পারেন।

খুলনা-১ আসনে ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ১১৯টি। মোট ভোটার ৩ লাখ ৩ হাজার ৫৪২ জন। এ আসনে এবার পুরুষ ভোটারের চেয়ে নারী ভোটারের সংখ্যা বেশি। পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৫০ হাজার ৩৪২ আর নারী ভোটার ১ লাখ ৫৩ হাজার ১৯৭ জন।

Fetching live reactions...
Was this article helpful?

Comments

Comments

Loading comments…
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন