‘ঠান্ডাখান দিন দিন বাড়েছে’
![]() |
| পঞ্চগড়ে কনকনে শীতের মধ্যে বিলুপ্তপ্রায় গরুর হাল দিয়ে জমি চাষ করছেন এক কৃষক। আজ সোমবার | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
দুই দিন ধরে কুয়াশা এত ঘন যে কিছু দেখা যাচ্ছেনা। ঠান্ডা দিন দিন বাড়ছে। ঠান্ডায় হাত-পা শিক নাগছে। তবে কী করবেন, আমাদের ঠান্ডা গরম নেই, কৃষক মানুষ, কাজ করে খেতে হবে—বলছিলেন ফয়জুল ইসলাম (৬৯)। আজ সোমবার সকালে পঞ্চগড় পৌরসভার তুলারডাঙ্গা এলাকায় প্রায় বিলুপ্ত গরুর হাল দিয়ে ফসলি জমি চাষ করতে গিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা হয়। চারপাশ তখন ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন।
দুই দিন ধরে দেশের উত্তরাঞ্চলের জেলা পঞ্চগড়ে কুয়াশার দাপট বাড়ছে, আর হিমেল বাতাসে শীতের তীব্রতা বেড়েছে। গত কয়েক দিনের তুলনায় তাপমাত্রা কিছুটা বেড়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ কমলেও কুয়াশার কারণে কনকনে ঠান্ডা অনুভূত হচ্ছে। শীতের কারণে খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ বিপাকে পড়েছেন।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার জানায়, সোমবার সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়ায় দিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। তবে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা এ নয়। এদিন চুয়াডাঙ্গায় রেকর্ড করা হয়েছে ১১ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়ায় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৭ শতাংশ এবং বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ১০ থেকে ১২ কিলোমিটার। রাতভর উত্তরের ঝিরিঝিরি বাতাসের পর ভোরে ঘন কুয়াশা শুরু হয়। সকাল ১০টার পর পূর্ব আকাশে সূর্য উঁকি দিলেও রোদ ছড়িয়ে শীত কমাতে পারেনি।
সোমবার সকালে পঞ্চগড় সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, চারদিক কুয়াশায় ঢাকা। উত্তরের হিমেল বাতাসে কনকনে শীত অনুভূত হচ্ছে। গ্রামের বেশির ভাগ পথ নীরব ও সুনসান। সাধারণ মানুষ প্রয়োজন মতো গরম কাপড় জড়িয়ে বের হয়েছেন। কেউ কেউ ফসলি জমিতে হালচাষ ও বীজ বপন করছেন, আবার কেউ কেউ খেত থেকে সবজি তুলে বাজারে নিয়ে যাচ্ছেন। মহাসড়কে যানবাহন হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে।
সকাল সাড়ে আটটার দিকে কথা হয় ভ্যানচালক বশিরুল ইসলামের (৪৪) সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘সকালে বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর মনে হয় ঠান্ডায় হাত-পা ককোড়া হয়ে গেছে। রাস্তায় এত কুয়াশা, দশ হাত দূরও দেখা যায় না। এবার মনে হচ্ছে আসল ঠান্ডা এসেছে।’
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্র নাথ রায় মুঠোফোনে বলেন, 'ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে তেঁতুলিয়ায় শীত বেশি। বর্তমানে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ না থাকলেও ঘন কুয়াশা এবং উত্তর-পশ্চিম থেকে আসা হিমেল বাতাসে শীত বেশি অনুভূত হচ্ছে। আকাশে হালকা মেঘ ও ঘন কুয়াশার কারণে সূর্যের তীব্রতা ভূপৃষ্ঠে পৌঁছাতে পারছে না। তাই দিনের বেলায়ও শীত অনুভূত হচ্ছে। সামনে এই এলাকার তাপমাত্রা আরও কমতে পারে।'

Comments
Comments