থানায় ঘুমন্ত পুলিশ সদস্যের সঙ্গে গ্রেপ্তার ছাত্রলীগ নেতার সেলফি
![]() |
| ঘুমে পুলিশের সেলফি তুলে ফেসবুকে দেন গ্রেপ্তার ছাত্রলীগ নেতা | ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া |
‘ঘুম ভালোবাসিরে এএএ...। জীবন যেমনই হোক, বিনোদন মিস করা যাবে না।’
এই ক্যাপশনের সঙ্গে থানার চেয়ারে বসে ঘুমন্ত এক পুলিশ সদস্যের ছবি পোস্ট করেছেন সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা। বুধবার রাতে থানায় পুলিশি হেফাজতে থাকা অবস্থায় নিজের ফেসবুক আইডিতে তিনি সেলফি তোলেন।
ছবিতে দেখা যায়, ছাত্রলীগ নেতার পেছনে চেয়ারে বসা একজন পুলিশ কনস্টেবল। এরপর ভিডিও কলে আরেক ছাত্রলীগ নেতার সঙ্গে কথা বলেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টি ছড়িয়ে পড়ার পর থানায় পুলিশের হেফাজতে থাকা আসামির মুঠোফোন ও ফেসবুক ব্যবহারের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। গ্রেপ্তারের পর তাকে হাজতখানায় না রেখে কর্তব্যরত কর্মকর্তার কক্ষে রাখা হয়েছে, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
ছাত্রলীগ নেতার নাম শোয়াইব উল ইসলাম ওরফে মহিম (২১)। তিনি পটিয়া উপজেলার বড়লিয়া ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা আবুল বশরের ছেলে এবং ওই ওয়ার্ডের ছাত্রলীগের সভাপতি। ফেসবুকেও তিনি শোয়াইব উল ইসলাম ওরফে মহিম নামেই পরিচিত।
পুলিশ জানায়, রাত একটার দিকে পটিয়া পৌর সদরের কাগজীপাড়া এলাকা থেকে শোয়াইবকে গ্রেপ্তার করা হয়। বিজয় দিবস উপলক্ষে যুবলীগের একটি কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের কারণে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলা রয়েছে।
থানায় আনার পর শোয়াইব নিজের ফেসবুকে লিখেন, ‘আমার জন্য সবাই দোয়া করবেন। আমি পটিয়া থানায়। দেখা হবে আবারও, ফিরব বীরের বেশে কোনো একদিন। জয় বাংলা।’
পরবর্তীতে থানার ভেতর থেকে হাতকড়া পরা একটি ছবি পোস্ট করে তিনি লেখেন, ‘এই দিন দিন নয়, দিন আরও আছে।’ এছাড়া দায়িত্বে থাকা এক পুলিশ সদস্যের সঙ্গে ঘুমন্ত অবস্থায় সেলফি তুলে ফেসবুকে পোস্ট করেন। ছবির ক্যাপশনে লেখা, ‘ঘুম ভালোবাসিরে এএএ...। জীবন যেমনই হোক, বিনোদন মিস করা যাবে না।’
অন্য একটি ছবিতে তাকে তুহিন নামের আরেক ছাত্রলীগ নেতার সঙ্গে ভিডিও কলে দেখা যায়। ছবিটি ফেসবুকে পোস্ট করে তুহিন লেখেন, ‘গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আপসহীন লড়াইয়ে দখলদার বাহিনীর হাতে অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার পটিয়া উপজেলার বড়লিয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের কর্মী মো. শোয়াইব-উল ইসলাম মহিমের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানাচ্ছি।’
জানতে চাইলে পটিয়া থানার ওসি জিয়াউল হক বলেন, শোয়াইবকে বুধবার রাতে গ্রেপ্তারের পর থানায় আনা হয় এবং বৃহস্পতিবার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। থানায় থাকা অবস্থায় অভিযানে গিয়েছিলেন দলটির আরেকটি টিম। সেই সুযোগে নিজের কাছে লুকানো মুঠোফোন দিয়ে থানার ভেতর থেকে সেলফি তুলে ফেসবুকে পোস্ট করেন। পরে মুঠোফোনটি উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিক তল্লাশিকালে এটি পাওয়া যায়নি।
ওসি জিয়াউল হক আরও বলেন, দায়িত্বে অবহেলার কারণে ওই সময় দায়িত্বরত পুলিশ কনস্টেবলের বিরুদ্ধে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ব্যবস্থা নিচ্ছেন।
বিকেলে শোয়াইবের ফেসবুক আইডিতে পোস্টগুলো দেখা যায়নি, মুছে ফেলা হয়েছে। তবে এর আগেই সব পোস্টের স্ক্রিনশট ও ছবি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

Comments
Comments