সহিংসতা ও সড়ক অবরোধ: সীতাকুণ্ডে যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের ৪ নেতাকে বহিষ্কার
বিএনপি চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দল ও যুবদলের চার নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে। সাবেক যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরীর মনোনয়ন না পাওয়াকে কেন্দ্র করে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ ও টায়ারে আগুন দেওয়ার ঘটনায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
রাতে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিটি বিএনপির মিডিয়া সেলের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে পোস্ট করা হয়।
বহিষ্কৃত নেতাদের মধ্যে রয়েছেন সীতাকুণ্ড উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি আলাউদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক হেলাল উদ্দিন বাবর, সীতাকুণ্ড পৌরসভার আহ্বায়ক মো. মামুন এবং যুবদলের সোনাইছড়ীর সাধারণ সম্পাদক মমিন উদ্দিন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সোমবার সন্ধ্যার পর দলীয় মনোনয়নকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম উত্তর জেলার সীতাকুণ্ডে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কদমরসুল, ভাটিয়ারী বাজার ও জলিল গেট এলাকায় সহিংসতা, হানাহানি ও রাস্তা অবরোধসহ জনস্বার্থবিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হওয়ায় ওই চার নেতাকে প্রাথমিক সদস্যসহ সব পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
এয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য সোমবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে ২৩৭ আসনের দলীয় প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড) আসনে দলীয় প্রার্থী হিসেবে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী মোহাম্মদ সালাউদ্দিনের নাম ঘোষণা করা হয়। বাদ পড়েন সাবেক যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরী।
সন্ধ্যা সাতটার দিকে খবর ছড়িয়ে পড়লে বিএনপির নেতা–কর্মীরা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ভাটিয়ারী, সলিমপুরসহ বিভিন্ন স্থানে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখান। রাত নয়টার দিকে ভাটিয়ারী রেলস্টেশন এলাকায় রেললাইনের ওপর কাঠের স্লিপার রাখে আগুন ধরিয়ে দেন। এতে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এই সময় তারা নানা ধরনের স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ চালিয়ে যান।
রাত ১১টার দিকে আসলাম চৌধুরীর পক্ষে বিক্ষুব্ধ নেতা–কর্মীদের সরে যাওয়ার নির্দেশ দিলে তারা মহাসড়ক ও রেলপথ থেকে সরে যায়। ফলে চার ঘণ্টা আটকে থাকা যানবাহন ও ট্রেন চলাচল পুনরায় শুরু হয়।
চট্টগ্রাম উত্তর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি মো. মোরসালীন বলেন, আসলাম চৌধুরী মনোনয়ন না পাওয়ার খবরে নেতা–কর্মীরা বিভিন্ন স্থানে অবরোধ করলে যানজট সৃষ্টি হয়। এর ফলে আসলাম চৌধুরী নিজেও চট্টগ্রাম থেকে বাড়ি ফেরেন দেরিতে। পরে তিনি বিক্ষুব্ধ নেতা–কর্মীদের রাস্তা থেকে সরে যাওয়ার বার্তা দেন। মোরসালীন নিজে বিভিন্ন ইউনিটে খবর পাঠিয়ে নেতা–কর্মীদের সরিয়ে দেন।
আজ মঙ্গলবার বেলা তিনটায় জলিল টেক্সটাইল গেট এলাকায় বাদশা ফেয়ারল্যান্ড নামে একটি কমিউনিটি সেন্টারে দলের একটি সভা হবে। সেখানে সভার সিদ্ধান্ত দলীয় হাইকমান্ডকে পাঠানো হবে।
দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার পর রাতেই কাজী মোহাম্মদ সালাউদ্দিনের অনুসারী নেতা–কর্মীরা বাঁশবাড়িয়া, বাড়বকুণ্ডসহ বিভিন্ন স্থানে আনন্দ মিছিল করেছে।
উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব কাজী মোহাম্মদ মহিউদ্দিন জানান, আজকের সভা দলীয় সভা নয়। মনোনয়ন বিষয়ে পর্যালোচনা সভা আরও ২-৩ দিন পরে ডাকা হবে। তিনি বলেন, আসলাম চৌধুরী ও দলকে আলাদা করা যাবে না। তবে কেন তিনি মনোনয়ন পাননি, তা কেবল দলের হাইকমান্ড এবং আসলাম চৌধুরী জানেন। দলের হাইকমান্ড যা সিদ্ধান্ত দিয়েছেন, তা মেনে সবাইকে মিলিতভাবে দলীয় প্রার্থীকে বিজয়ী করতে কাজ করতে হবে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন