প্যারোলে মুক্তি পাওয়া যুবদল নেতা বাবার জানাজায়, কোমরে দড়ি থাকায় ক্ষোভ
![]() |
| রাজবাড়ীতে প্যারোলে মুক্তি পেয়ে কোমরে দড়ি বাঁধা অবস্থায় বাবার জানাজায় যুবদল নেতা। গতকাল সোমবার | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
রাজবাড়ীতে প্যারোলে মুক্তি পেয়ে বাবার জানাজায় অংশ নেন অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইনে গ্রেপ্তার যুবদল নেতা সাইদুল ইসলাম ওরফে তাজেল। তবে জানাজার সময় তাঁর কোমরে দড়ি বেঁধে রাখায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তাঁর দলের নেতা-কর্মীরা।
গতকাল সোমবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে সদর উপজেলার খানখানাপুর ইউনিয়নের দত্তপাড়া এলাকায় নিজ বাড়ির উঠানে বাবার জানাজায় অংশ নেন সাইদুল। জানাজা শেষে দাফন হওয়ার পর সন্ধ্যায় তাঁকে আবার কারাগারে নেওয়া হয়।
সাইদুল ইসলাম খানখানাপুর ইউনিয়ন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক। তাঁর বাবার নাম মমিন মিয়া। সাইদুল কেন্দ্রীয় কৃষক দলের সহসভাপতি ও রাজবাড়ী জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আসলাম মিয়ার অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
৯ নভেম্বর রাজবাড়ী সদর উপজেলার গোয়ালন্দ মোড় ও খানখানাপুর দত্তপাড়া গ্রামে অভিযান চালিয়ে যৌথ বাহিনী সাইদুল ইসলাম ও আকাশ মোল্লাকে আটক করে। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করা হয় বলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জানায়। পরে তাঁদের বিরুদ্ধে অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করা হয়।
রাজবাড়ী সদর থানার ওসি মাহামুদুর রহমান বলেন, যুবদল নেতা সাইদুল ইসলাম রাজবাড়ী জেলা কারাগারে ছিলেন। গত রোববার রাত সাড়ে নয়টার দিকে তাঁর বাবার মৃত্যু হলে আমাদের জানানো হয়। গতকাল সকালে পরিবারের পক্ষ থেকে প্যারোলে মুক্তির আবেদন করা হয়। জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের অনুমতিক্রমে বিকেল চারটার দিকে তাঁকে মুক্তি দেওয়া হয়।
তিনি আরও বলেন, ২০ থেকে ২২ জন পুলিশ সদস্যের সতর্ক পাহারায় সাইদুল ইসলামকে জানাজায় নিয়ে যাওয়া হয়। জানাজা শেষে এক থেকে সোয়া ঘণ্টা অবস্থানের পর সন্ধ্যায় তাঁকে পুনরায় জেল কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
এদিকে সাইদুল ইসলামকে ‘হয়রানিমূলক’ মামলায় গ্রেপ্তার ও জানাজায় অংশ নেওয়ার সময় কোমরে দড়ি বেঁধে রাখায় অনেক নেতা-কর্মী ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। খানখানাপুর ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘সাইদুল ইসলামের বিরুদ্ধে এমন ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক, রাজনীতি আজ প্রতিহিংসায় পরিণত হয়েছে। আমরা যুবদল নেতা সাইদুল ইসলামের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করছি।’
ওই ঘটনার পর কেন্দ্রীয় কৃষক দলের সহসভাপতি ও রাজবাড়ী জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আসলাম মিয়া ফেসবুকে কোমরে রশি বাঁধা অবস্থায় জানাজায় অংশ নেওয়ার ভিডিও পোস্ট করে লেখেন, ‘কারও বাবা–মা চিরকাল বাঁচে না, একদিন আমি–আপনিও চলে যাব পরপারে, যখন আমাদের ডাক আসবে! কিন্তু কষ্টের বিষয় তখন হয়, যখন কোনো বাবার শেষনিশ্বাসের সময় তার সন্তান পাশে থাকে না! যখন শেষনিশ্বাসের সময় বলে যেতে পারে না—মা, ভাই, বোনকে দেখে রাখিস। কবে শেষ হবে এই প্রতিহিংসার রাজনীতি? কবে...?’

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন