[tenolentSC] / results=[3] / label=[ছবি] / type=[headermagazine]

এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়ি ভাড়া ৫ শতাংশ দিতে চায় সরকার, শিক্ষকদের না

প্রকাশঃ
অ+ অ-
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আন্দোলনরত বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা। ১৬ অক্টোবর | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

মূল বেতনের ২০ শতাংশ (ন্যূনতম ৩ হাজার টাকা) বাড়িভাড়াসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলনরত বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়ি ভাড়া এবার সরকার পাঁচ শতাংশ (ন্যূনতম ২ হাজার টাকা) দিতে রাজি হয়েছে। তবে শিক্ষক-কর্মচারীরা বলছেন, এটি তারা মেনে নেবেন না। তাদের দাবি, এ বছর ১০ শতাংশ হারে বাড়ি ভাড়া দিতে হবে এবং আগামী অর্থবছরে আরও ১০ শতাংশ হারে বাড়ানোর নিশ্চয়তা দিতে হবে।

আন্দোলনকারী শিক্ষক-কর্মচারীদের একটি প্রতিনিধি দল আজ দুপুরের পর সচিবালয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক সি আবরারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাৎকারের পর উপদেষ্টা সাংবাদিকদের জানান, বর্তমানে বাজেট বরাদ্দ প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পর্যায়ে রয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে অর্থ মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানোর কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, অর্থ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ১ নভেম্বর থেকে ৫ শতাংশ বাড়িভাড়া দেওয়া সম্ভব এবং ন্যূনতম টাকা দুই হাজার হবে। এখন যেখানে টাকা নেই, সেখানে এর বেশি দেওয়া সম্ভব নয়। শিক্ষক-কর্মচারীদের এ তথ্য জানানো হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, সামনের অর্থবছরের বাজেটে আরও বাড়ি ভাড়া বৃদ্ধি করার জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ করা হবে। কিন্তু শিক্ষক-কর্মচারীরা এ প্রস্তাবে রাজি নয়, তারা দাবি করছেন, এখনই ১০ শতাংশ দিতে হবে এবং আগামী বছরও ১০ শতাংশ দিতে হবে।

শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, ‘এটা আমাদের এখতিয়ারের বাইরে। সংস্থান থাকলে আমরা করতাম।’ তিনি আরও জানান, বর্তমান বাজেট অনুযায়ী ৫ শতাংশের বেশি বাড়ানো সম্ভব নয়। তবে আসন্ন পে কমিশনে বাড়ির ভাড়া বৃদ্ধি করার ইঙ্গিত রয়েছে।

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব রেহানা পারভীন বলেন, হিসাব করে দেখা গেছে, দুই হাজার টাকা করে দিলে প্রায় ৯০ শতাংশ শিক্ষক-কর্মচারী প্রায় ১০ শতাংশ হারে বাড়ি ভাড়া পাবেন।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আন্দোলনকারী শিক্ষক-কর্মচারীরা এখন পর্যন্ত এই প্রস্তাব গ্রহণযোগ্য মনে করছেন না।

দাবি না মানলে ‘মার্চ টু যমুনা’
বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষক ও কর্মচারীরা দাবি পূরণ না হলে ‘মার্চ টু যমুনা’ কর্মসূচি পালন করতে বাধ্য হবেন বলে জানিয়েছে। তারা আজ বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত সরকারকে সময় বেঁধে দিয়েছেন।

আজ বৃহস্পতিবার বেলা পৌনে তিনটায় সচিবালয় থেকে ফিরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এই কথা জানান এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের সদস্য সচিব দেলোয়ার হোসেন আজিজী।

সচিবালয়ে শিক্ষা উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনার প্রসঙ্গে দেলোয়ার হোসেন আজিজী বলেন, 'উপদেষ্টা মহোদয় আলোচনা করেননি। আলোচনার নামে শিক্ষকদের সঙ্গে আইওয়াশ করেছেন।' 

তিনি প্রধান উপদেষ্টাকে শিক্ষকদের দাবি পূরণে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, 'আমাদের আর কারও উপর ভরসা নেই। একমাত্র ভরসা আপনি। যদি চাইলে সমস্যা সমাধান করতে পারেন। আর যদি না চান, তবে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়বে।' 

দেলোয়ার হোসেন আজিজী আরও বলেন, প্রধান উপদেষ্টা উদ্যোগ না নিলে শিক্ষকরা বিকেল পাঁচটায় ‘মার্চ টু যমুনা’ কর্মসূচি পালন করতে বাধ্য হবেন। প্রয়োজনে প্রধান উপদেষ্টা বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পাঠালেও শিক্ষকরা দাবি আদায় না হলে ক্লাসে ফিরবেন না।

বর্তমানে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও কর্মচারীদের বেতন-ভাতার জন্য সরকার আর্থিক অনুদান দেয়, যা এমপিও (মাসিক পে অর্ডার) নামে পরিচিত। দেশে ছয় লাখের বেশি শিক্ষক-কর্মচারী এমপিওভুক্ত। এর মধ্যে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের অধীনে আছেন ৩ লাখ ৯৮ হাজার, মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের অধীনে পৌনে ২ লাখ এবং কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের অধীনে ২৩ হাজারের বেশি শিক্ষক ও কর্মচারী। যেসব প্রতিষ্ঠানের আয় বেশি, তারা এমপিওর বাইরে শিক্ষক ও কর্মচারীদের বেতন দেয়। তবে বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের সেই সক্ষমতা নেই। 

এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা এখন মূল বেতনের ২০ শতাংশ (ন্যূনতম ৩ হাজার টাকা) বাড়িভাড়া, চিকিৎসা ভাতা ১৫০০ টাকা এবং কর্মচারীদের উৎসব ভাতা ৭৫ শতাংশ বাড়ানোর দাবিতে পাঁচ দিন ধরে ঢাকায় কর্মসূচি চালাচ্ছেন। কখনো জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে, কখনো কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে, কখনো হাইকোর্টের সামনে বা শাহবাগ মোড়ে এই কর্মসূচি হচ্ছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলও তাদের দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়েছে। 

একটি মন্তব্য করুন

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন