প্রতিনিধি ভোলা

আদালত | প্রতীকী ছবি

ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলায় যুবক স্বামীকে রাতভর নির্যাতনের পর তাঁর স্ত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় করা মামলার ২ নম্বর আসামি শ্রমিক দলের বহিষ্কৃত নেতা মো. ফরিদ উদ্দিন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে ভোলা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. হাসান শাহাদাত তাঁর জবানবন্দি রেকর্ড করেন।

আদালতের পুলিশ পরিদর্শক মো. নাছির উদ্দিন এবং তজুমদ্দিন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মহব্বত খান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

ওসি মহব্বত খান বলেন, মামলার প্রধান আসামি যুবদল কর্মী মো. আলাউদ্দিনের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রক্রিয়াধীন। এ ছাড়া গতকাল সন্দেহভাজন হিসেবে আটক সরকারি তজুমদ্দিন ডিগ্রি কলেজ ছাত্রদলের বহিষ্কৃত আহ্বায়ক মো. রাসেলকে জিজ্ঞাসাবাদের পর মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। এ নিয়ে মামলার পাঁচ আসামিকে গ্রেপ্তার করা হলো। বাকি আসামিদের ধরতে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।

গত সোমবার তজুমদ্দিন উপজেলায় শ্রমিক দল, যুবদল, ছাত্রদলের নেতা-কর্মীসহ সাতজনের বিরুদ্ধে এক গৃহবধূকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে একটি মামলা হয়। মামলার এজাহার, পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত শনিবার রাতে এক ব্যক্তিকে (৩০) তজুমদ্দিন উপজেলার একটি গ্রামে ডেকে নেন তাঁর তৃতীয় স্ত্রী (৪০)। পরে আসামিরা ওই ব্যক্তিকে আটকে রেখে চার লাখ টাকা দাবি করেন। একপর্যায়ে ওই ব্যক্তিকে রড দিয়ে পিটিয়ে আহত করা হয়। পরদিন রোববার সকালে তাঁর প্রথম স্ত্রী (৩০) আসামিদের কাছ থেকে স্বামীকে ছাড়িয়ে আনতে গিয়ে দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন।

এ ঘটনার পর মামলার ২ নম্বর আসামি উপজেলা শ্রমিক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. ফরিদ উদ্দিনকে সংগঠন থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়। পরে সরকারি তজুমদ্দিন ডিগ্রি কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক মো. রাসেল ও যুগ্ম আহ্বায়ক জয়নাল আবেদীন ওরফে সজীবকেও বহিষ্কার করা হয়।

গণ অধিকারের বিক্ষোভ

এদিকে সারা দেশে দলবদ্ধ ধর্ষণ, চাঁদাবাজি, দখলদারি ও নৈরাজ্যের প্রতিবাদে ভোলা প্রেসক্লাব চত্বরে বিক্ষোভ সমাবেশ ও গণমিছিল করেছেন গণ অধিকার পরিষদের জেলা শাখার নেতা-কর্মীরা। আজ শুক্রবার বিকেলে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য দেন জেলা গণ অধিকার পরিষদের সাবেক সদস্যসচিব আতিকুর রহমান আবু তৈয়ব, সদর উপজেলার সাবেক আহ্বায়ক হাসান মাহমুদ, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সুমন দেওয়ান, লালমোহন উপজেলার আহ্বায়ক আবদুল্লাহ আল মামুন, সদর উপজেলার সাবেক সদস্যসচিব ফিরোজ আহমেদ প্রমুখ। সমাবেশ শেষে তাঁরা গণমিছিল বের করেন।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, সারা দেশের মতো তজুমদ্দিনে এক নারী দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। পুলিশ মামলার আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করেছে। এখন মামলাটিকে দ্রুত বিচারের আওতায় এনে আসামিদের মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিত করতে হবে। আসামিরা শাস্তি না পেলে এ ধরনের ঘটনা ঘটতেই থাকবে।