প্রতিনিধি মুন্সিগঞ্জ

মুন্সিগঞ্জ জেলার মানচিত্র

মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলায় বিলের পানি থেকে পাঁচ মাস বয়সী যমজ দুই বোনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল সোমবার সন্ধ্যা সোয়া সাতটার দিকে উপজেলার কুকুটিয়া ইউনিয়নের বিবন্দী গ্রামের বিল থেকে লাশ দুটি উদ্ধার করা হয়।

অভিযোগ পাওয়া গেছে, শিশু দুটিকে পানিতে ফেলে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় শিশু দুটির মা ও বাবা পরস্পরকে দোষারোপ করছেন। তাঁদের দুজনকে আটক করেছে পুলিশ। শিশু দুটির নাম লামিয়া ও সামিয়া।

স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বছর দেড়েক আগে বিবন্দী গ্রামের মো. সোহাগের (৩২) সঙ্গে পার্শ্ববর্তী দয়াহাঁটা মজিদপুর গ্রামের শান্তা আক্তারের (১৮) পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। সোহাগ দিনমজুরের কাজ করতেন। বিয়ের কয়েক মাস পর থেকে বিভিন্ন কারণে শান্তা ও সোহাগের ঝগড়া হতো। পাঁচ মাস আগে এই দম্পতির যমজ মেয়ের জন্ম হয়। যমজ সন্তান জন্মের পর সংসারে অভাব-অনটন দেখা দেয়। এতে এই দম্পতির মধ্যে ঝগড়া আরও বেড়ে যায়। গতকাল সন্ধ্যার দিকে শান্তা প্রতিবেশীদের জানান, তাঁর মেয়েদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। একপর্যায়ে বাড়ির পাশে বিলের পানি থেকে দুই শিশুকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। তাদের শ্রীনগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন।

সোহাগের স্বজনদের অভিযোগ, সোহাগ বিকেলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গ্রামের পাশের বাজারে গিয়েছিলেন। তখন দুই শিশু শান্তার কোলে ছিল। শিশু দুটিকে শান্তাই বিলের পানিতে ফেলে হত্যা করেছেন। তবে একই সুরে পাল্টা অভিযোগ শান্তার স্বজনদেরও। তাঁরা বলেন, শিশু দুটিকে সোহাগ পানিতে ফেলে বাজারে গিয়েছিলেন।

কুকুটিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আবদুল কাইয়ুম বলেন, ‘শিশু দুটিকে তাঁদের মধ্যে কেউ পানিতে ফেলেছেন এমন কানাঘুষা আছে। বিষয়টি নিয়ে সোহাগ ও শান্তার পক্ষে-বিপক্ষেও নানা কথা শোনা যাচ্ছে। আমরা প্রকৃত ঘটনা জানার চেষ্টা করছি।’

এ ঘটনার পর থেকে শান্তা অনেকটাই বাক্‌রুদ্ধ হয়ে পড়েছেন। শান্তা ও তাঁর স্বামী সোহাগকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ শ্রীনগর থানায় নিয়ে গেছে।

শ্রীনগর থানার ওসি মোহাম্মদ নাজমুল হুদা আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বলেন, শিশু দুটির বাবা-মাকে আটক করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে ধারণা করা হচ্ছে, শিশুদুটিকে হত্যার সঙ্গে তাদের বাবা-মা জড়িত। এ ঘটনায় একটি মামলা প্রক্রিয়াধীন আছে। ওই দম্পতিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হবে।