ভোলায় দলবদ্ধ ধর্ষণ মামলার দুই ছাত্রদল নেতাকে বহিষ্কার
প্রতিনিধি ভোলা
| ছাত্রদলের লোগো | ছবি: সংগৃহীত |
ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলায় এক ব্যক্তিকে নির্যাতন ও স্ত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ মামলার আসামি ছাত্রদলের দুই নেতাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। পাশাপাশি তাঁদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতেও বলা হয়েছে সংগঠনের পক্ষ থেকে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বহিষ্কৃত দুজন হলেন তজুমদ্দিন ডিগ্রি কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক মো. রাসেল ও যুগ্ম আহ্বায়ক জয়নাল আবেদীন ওরফে সজীব।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ছাত্রদলের সব পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের বহিষ্কৃতদের সঙ্গে কোনোরূপ সাংগঠনিক সম্পর্ক না রাখার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে মো. রাসেল ও জয়নাল আবেদীনের বিষয়ে যথাযথ আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ এবং অপরাধের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
এর আগে তজুমদ্দিন উপজেলা শ্রমিক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. ফরিদ উদ্দিনকেও সংগঠন থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হয়।
আরও পড়ুন
|
তজুমদ্দিনে স্বামীকে নির্যাতনের পর গৃহবধূকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে মামলা |
এ ঘটনায় মামলার তিন নম্বর আসামিকে (৪০) গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তজুমদ্দিন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মহব্বত খান বলেন, গতকাল মামলার তিন নম্বর আসামিকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তিনি নির্যাতিত ব্যক্তির দ্বিতীয় স্ত্রী।
গত সোমবার তজুমদ্দিন উপজেলায় শ্রমিক দল, যুবদল, কলেজ ছাত্রদলের নেতা-কর্মীসহ সাতজনের বিরুদ্ধে গৃহবধূকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে মামলা হয়। ভুক্তভোগী ওই গৃহবধূর স্বামী তজুমদ্দিন উপজেলার একটি ইউনিয়নের বাসিন্দা। তবে ঢাকায় থাকেন। তিনি দুই বিয়ে করেছেন। ওই ব্যক্তি বলেন, ১৪-১৫ দিন আগে তিনি ঢাকা থেকে বাড়ি আসেন। পরে গত শনিবার দ্বিতীয় স্ত্রী তাঁকে তাঁর বাসায় ডেকে নেন। সেখানে রাতের বেলা উপজেলা শ্রমিক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফরিদ উদ্দিন, যুবদল কর্মী মো. আলাউদ্দিন, তজুমদ্দিন সরকারি কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি মো. রাসেল আহমেদ ওরফে রাসেল রানাসহ পাঁচ-ছয়জনের একটি দল ঘরের ভেতর প্রবেশ করেন। তাঁরা এসেই মারধর শুরু করেন। দ্বিতীয় স্ত্রী সংসার করবেন না উল্লেখ করে তাঁরা চার লাখ টাকা দিতে চাপ দেন। তবে তিনি এত টাকা দিতে পারবেন না জানালে আবার রড-হাতুড়ি দিয়ে মারতে থাকেন। তাঁকে অন্য একটি ঘরে আটকে রেখে রাতভর নির্যাতন করেন।
আরও পড়ুন
|
তজুমদ্দিনে গণধর্ষণ প্রতিবাদে বিএনপির দুই পক্ষের আলাদা মানববন্ধন, ইটপাটকেল সংঘর্ষ |
ওই ব্যক্তি আরও বলেন, খবর পেয়ে রোববার সকালে তাঁর প্রথম স্ত্রী ঘটনাস্থলে আসেন। প্রথম স্ত্রীকে দেখে আবারও রড-হাতুড়ি দিয়ে তাঁকে বেধড়ক পেটানো শুরু করেন। এ সময় প্রথম স্ত্রী হামলাকারীদের হাত-পা ধরে স্বামীকে ছেড়ে দিতে বলেন। একপর্যায়ে তাঁরা চার লাখ টাকার বদলে এক লাখ টাকা দিতে বলেন। তখন প্রথম স্ত্রী তাঁর শ্বশুরকে ফোন করে টাকার জন্য বলেন। টাকা আসছে শুনে হামলাকারীরা প্রথম স্ত্রীকে ঘরে রেখে স্বামীকে দোকানে চা খাওয়ার কথা বলে বাইরে নিয়ে যান।
ওই নারী প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর স্বামীকে বের করে নিয়ে যাওয়ার পর সন্ত্রাসীরা ঘরের দরজা-জানালা আটকে তাঁকে ধর্ষণ করেন। তিনি চিৎকার করলে বাড়ির নারীরা দরজা-জানালা খুলতে চেষ্টা করেন। কিন্তু তাঁকে রক্ষা করতে পারেননি।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন