নিজস্ব প্রতিবেদক ঢাকা
![]() |
রোডমার্চে অংশ নেওয়া নেতা–কর্মীদের হাতে বিভিন্ন স্লোগান–সংবলিত প্ল্যাকার্ড দেখা যায় | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
চার প্রধান দাবিতে রাজধানী থেকে ঢাকা–চট্টগ্রাম রোডমার্চ শুরু করেছে দেশের বামপন্থী দল ও সংগঠনগুলোর সমন্বয়ে গঠিত ‘সাম্রাজ্যবাদবিরোধী দেশপ্রেমিক জনগণ’। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী আজ শুক্রবার সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে উদ্বোধনী সমাবেশের মধ্য দিয়ে এই কর্মসূচি শুরু করেন অংশগ্রহণকারীরা। কর্মসূচির মূল স্লোগান ‘মা মাটি মোহনা, বিদেশিদের দেব না’।
রোডমার্চের উদ্বোধনী সমাবেশের শুরুতে বিভিন্ন সংগীত পরিবেশনা করেন গণতান্ত্রিক সাংস্কৃতিক ঐক্যের সদস্যরা।
![]() |
‘সাম্রাজ্যবাদবিরোধী দেশপ্রেমিক জনগণ’ আজ চার দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে থেকে ঢাকা চট্টগ্রাম রোডমার্চ শুরু করেছে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
চারটি প্রধান দাবির মধ্যে রয়েছে নিউমুরিং টার্মিনালসহ চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবস্থাপনা বিদেশিদের হাতে না দিয়ে রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনায় বন্দর পরিচালনা করা, রাখাইনে করিডর দেওয়ার উদ্যোগ বাতিল, স্টারলিংকের সঙ্গে চুক্তি বাতিল, মার্কিন ও ভারতসহ সাম্রাজ্যবাদী শক্তির সঙ্গে সব অসম চুক্তি বাতিল ও জনসম্মুখে প্রকাশ করা।
রোডমার্চে অংশ নেওয়া নেতা–কর্মীদের হাতে বিভিন্ন স্লোগান–সংবলিত প্ল্যাকার্ড দেখা যায়। এসবের মধ্যে রয়েছে ‘ইন্টেরিম সরকার, সাম্রাজ্যবাদের পাহারাদার’, ‘বন্দর-করিডর’, বিদেশিদের দেব না’, জাতীয় স্বার্থবিরোধী সকল অসম চুক্তি বাতিল কর’, ‘মার্কিন ভারতসহ সকল সাম্রাজ্যবাদী আধিপত্যের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াও’, ‘চট্টগ্রাম বন্দর বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়া চলবে না’, ‘মার্কিন কোম্পানি স্টারলিংকের সঙ্গে চুক্তি বাতিল কর’ প্রভৃতি স্লোগান।
রোডমার্চ উদ্বোধনী সমাবেশে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, ‘আমরা মনে করি, চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থান ও মুক্তিযুদ্ধের আকাঙ্ক্ষা হলো গণতন্ত্রের আকাঙ্ক্ষা। এই আকাঙ্ক্ষা হলো আধিপত্যবাদ আর সাম্রাজ্যবাদবিরোধী আকাঙ্ক্ষা। ইতিপূর্বে বিভিন্ন আন্দোলনে প্রাণ বিসর্জন দেওয়া সব শহীদের প্রতি আমরা শ্রদ্ধা জানাই। আমাদের সাম্রাজ্যবাদবিরোধী এই আন্দোলন দীর্ঘদিনের।’
![]() |
রোড মার্চ শুরুর আগে গণতান্ত্রিক সাংস্কৃতিক ঐক্যের শিল্পীরা গান পরিবেশন করেন | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
রুহিন হোসেন আরও বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আমরা আহ্বান করছি, অবিলম্বে বন্দর ইজারাসহ রাষ্ট্রবিরোধী করিডর দেওয়ার চিন্তা বাদ দিতে হবে। আগামীকালের পর আর কোনো নতুন কর্মসূচি আসবে না। কিন্তু সরকার যদি এই দায়িত্ব পালন না করে, আগামীকাল সমাবেশে ঘোষণাপাঠের সঙ্গে সঙ্গে আন্দোলনের বৃহত্তর কর্মসূচি ঘোষণা করব।’
রোডমার্চ উদ্বোধনী সমাবেশে অংশ নেন সিপিবির সাবেক সভাপতি নেতা মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ, বাংলাদেশ জাসদের স্থায়ী কমিটির সদস্য মুশতাক হোসেন, গণমুক্তি আন্দোলনের আহ্বায়ক নাসিরউদ্দিন আহমেদ, তেল গ্যাস খনিজ সম্পদ রক্ষা কমিটির প্রতিষ্ঠাতা সদস্যসচিব এম এম আকাশ, গণমঞ্চের মাসুদ খান, গার্মেন্টস শ্রমিক নেতা সত্যজিৎ বিশ্বাস, সাংস্কৃতিক অঙ্গনের নেতা কামাল হোসেন, বাসদ মার্ক্সবাদের প্রধান সমন্বয়ক মাসুদ রানা, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট লিগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবির জাহিদ প্রমুখ।
ঢাকা–চট্টগ্রাম রোডমার্চ কর্মসূচিতে একাত্মতা পোষণ করেছেন অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী ও অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বিষয়টি জানিয়ে বলেন, ‘তাঁরা শারীরিক অসুস্থতার জন্য উপস্থিত হতে পারেননি। কিন্তু তাঁরা আমাদের সঙ্গে রয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন, বাম ছাত্র সংগঠন, নারী সংগঠনও এই কর্মসূচির সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করেছেন।’
আয়োজকেরা জানান, রোডমার্চ কর্মসূচির অংশ হিসেবে শুক্রবার ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ এবং বিকেলে কুমিল্লার টাউন হল মাঠে সমাবেশের আয়োজন করবেন তাঁরা। এ ছাড়া আগামীকাল শনিবার ফেনী জেলা শহীদ মিনারে গণমিছিল এবং বিকেল পাঁচটায় চট্টগ্রাম বন্দরে সমাবেশ আয়োজন করা হবে।
![]() |
বিভিন্ন সংগঠনের কর্মীরা মিছিল নিয়ে রোড মার্চে যোগ দিতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আসেন | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |