প্রতিনিধি ময়মনসিংহ
![]() |
ময়মনসিংহের ফুলপুরে উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি দেবাশীষ তালুকদার ওরফে শুভকে মারধর শেষে চেংদোলা করে থানা থানায় নিয়ে যায় ছাত্রদলের লোকজন। শুক্রবার রাতে | ছবি: ভিডিও থেকে |
ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি দেবাশীষ তালুকদার ওরফে শুভ (৩৪) এবং আওয়ামী লীগের সমর্থক আজিজুল ইসলামকে (৫০) মারধর করে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। ছাত্রদলের নেতা–কর্মীরা গতকাল শুক্রবার রাতে দুজনকে আটকে মারধর করে থানায় হস্তান্তর করেন। তবে পুলিশ জানিয়েছে, এ দুজনের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোনো মামলা নেই।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দেবাশীষ তালুকদার উপজেলার পূর্ব বাখাই গ্রামের বাসিন্দা। তিনি ছাত্রলীগের ২০১৪ সালের কমিটিতে উপজেলা শাখার সভাপতি ছিলেন। তাঁকে ফুলপুর থানা রোডে পোস্ট অফিসের সামনে থেকে ধরা হয়। আজিজুল ইসলাম ফুলপুর উপজেলার রূপসী ইউনিয়নের খাসকান্দা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি আওয়ামী লীগের সমর্থক হিসেবে পরিচিত। ফুলপুর বাজারে কাজে এলে গতকাল রাত সাড়ে আটটার দিকে দিউ মোড় থেকে তাঁকে আটক করা হয়।
দেবাশীষ ও আজিজুলকে মারধর করে থানায় হস্তান্তরের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিরা জানান, গতকাল রাত সাড়ে আটটার দিতে প্রথমে আজিজুল ইসলামকে ধরেন ময়মনসিংহ উত্তর জেলা ছাত্রদলের সহসভাপতি এ কে এম আরিফুল হকের নেতৃত্বে ছাত্রদলের কিছু নেতা–কর্মী। আজিজুলকে মারধর করে পুলিশের হাতে দেওয়ার সময় ভিডিওতে বলতে শোনা যায়, তিনি সাধারণ মানুষের ওপর অত্যাচার করতেন।
আজিজুলকে থানায় দেওয়ার পর রাত সাড়ে ৯টার দিকে ধরা হয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি দেবাশীষ তালুকদারকে। ভিডিওতে দেখা যায়, দেবাশীষকে মারধর করে চ্যাংদোলা করে ১০-১৫ জনের একটি দল থানায় নিয়ে যায়। দুজনের মধ্যে আজিজুল ইসলাম বেশি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং পরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এ বিষয়ে ময়মনসিংহ উত্তর জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি ও বর্তমান উপজেলা যুবদলের কর্মী এ কে এম আরিফুল হক বলেন, ‘আজিজুলকে ধরে থানায় হস্তান্তরের পর দেবাশীষকে ধরা হয়। আজিজুলকে মারধর করা হয়নি, সে ভয় পেয়ে এমন হয়েছে। দেবাশীষ যেন পালাতে না পারে, সে জন্য আমি কলার ধরে রেখেছিলাম, পোলাপান উত্তেজিত হয়ে মেরেছে। ৫ আগস্টের পর আমি কাউকে একটি থাপ্পড়ও দিইনি।’
আরিফুলের ভাষ্য, আজিজুলের আওয়ামী লীগে কোনো পদ না থাকলেও তিনি বিগত সময় দা, লাঠি ও বন্দুক নিয়ে ঘুরতেন।
ফুলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল হাদি বলেন, ছাত্রদলের নেতারা দুজনকে আটক করে থানায় দিয়ে যান। তবে তাঁদের বিরুদ্ধে থানায় সুনির্দিষ্ট কোনো মামলা নেই। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় করা একটি মামলায় সাবেক ছাত্রলীগ সভাপতিকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আজ শনিবার আদালতে পাঠানো হয়েছে।