[tenolentSC] / results=[3] / label=[ছবি] / type=[headermagazine]

কক্সবাজারে ঘুরতে গিয়ে নিখোঁজ সিলেটের ছয় যুবক

প্রকাশঃ
অ+ অ-

প্রতিনিধি কক্সবাজার ও টেকনাফ

কক্সবাজারে নিখোঁজ সিলেটের শাহিন আহমদ, এমাদ উদ্দিন, খালেদ আহমদ, মারুফ আহমদ, রশিদ আহমদ | ছবি: সংগৃহীত

কক্সবাজার শহরে রাজমিস্ত্রির কাজ করতে এসে পাঁচ দিন ধরে নিখোঁজ রয়েছেন সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার খলাছড়া ইউনিয়নের পশ্চিম লোহারমহল গ্রামের ছয়জন। সবার মুঠোফোনও বন্ধ রয়েছে।

পরিবারের সন্দেহ, মানব পাচারকারী চক্র ছয়জনকে কাজের কথা বলে টেকনাফে নিয়ে সমুদ্রপথে মালয়েশিয়ায় পাচার করেছে। কিংবা অপহরণকারী চক্রের ফাঁদে পড়ে তাঁরা কোথাও আটকা থাকতে পারেন। এ ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহযোগিতা চেয়েছেন নিখোঁজ ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যরা।

নিখোঁজ ছয়জন হলেন পশ্চিম লোহারমহল গ্রামের রশিদ আহমদ (২০), একই গ্রামের মারুফ আহমদ (১৮), শাহিন আহমদ (২১), এমাদ উদ্দিন (২২), খালেদ হাসান (১৯) ও আবদুল জলিল (৫৫)।

নিখোঁজ সবাই ১৫ এপ্রিল কাজের উদ্দেশ্যে সিলেটের জকিগঞ্জ থেকে কক্সবাজারের উদ্দেশে রওনা দেন। পরদিন কক্সবাজারে পৌঁছে সবাই পরিবারের সঙ্গে মুঠোফোনে কথাও বলেন। এরপর সবার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। নিখোঁজ ব্যক্তিদের পরিবারের কয়েকজন সদস্য আজ সোমবার বিকেলে কক্সবাজার শহরে পৌঁছে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জকিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘জকিগঞ্জের ছয়জন কাজের উদ্দেশ্যে কক্সবাজারে গিয়ে নিখোঁজ থাকার ঘটনা জানতে পেরেছি। পরিবারের সদস্যরা থানায় এসে নিখোঁজের বিষয়টি পুলিশকে জানিয়েছেন। আমরা (পুলিশ) তাঁদের সহায়তা করে যাচ্ছি।’

ওসি বলেন, নিখোঁজ ছয়জনের মুঠোফোন ট্র্যাক করে দুজনের সর্বশেষ অবস্থান কক্সবাজারের টেকনাফে পাওয়া গেছে। পরিবারের সদস্যরা নিখোঁজ ব্যক্তিদের সন্ধানে কক্সবাজার ও টেকনাফে গেছেন।

এ প্রসঙ্গে টেকনাফ মডেল থানার ওসি মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন বলেন, জকিগঞ্জের ছয়জন নিখোঁজ থাকার বিষয়টি তিনি জেনেছেন। তবে আজ রাত আটটা পর্যন্ত কেউ নিখোঁজ ব্যক্তিদের বিষয়ে অভিযোগ দেননি। পুলিশের অনুসন্ধান চলছে।

পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন জানান, টেকনাফে মুক্তিপণের জন্য লোকজনকে অপহরণ এবং ট্রলারে সমুদ্রপথে মানব পাচার বেড়েছে। সম্প্রতি বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সদস্যরা সেন্ট মার্টিন দ্বীপের পশ্চিমে গভীর সাগর থেকে ২১৪ জনসহ মালয়েশিয়াগামী একটি ট্রলার জব্দ করেছে, যার অধিকাংশ রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ ও কিশোরী।

নিখোঁজ এমাদ উদ্দিনের চাচাতো ভাই আবদুল বাছিত সাংবাদিকদের জানান, ১৬ এপ্রিল সন্ধ্যায় কক্সবাজারে পৌঁছে সবাই মুঠোফোনে পরিবারকে অবগত করেন। সবাই কর্মস্থলে যাচ্ছেন বলে জানান। কিন্তু ১৭ এপ্রিল থেকে সন্ধান মিলছে না। সবার ফোনও বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। প্রথমে বিষয়টি স্বাভাবিক ধরে নিলেও পাঁচ দিনেও কারও মুঠোফোন চালু না হওয়া পরিবারের সদস্যদের মধ্যে সন্দেহের সৃষ্টি করে। দুশ্চিন্তায় অনেকে দিশাহারা হয়ে পড়েন।

আবদুল বাছিত বলেন, নিখোঁজের বিষয়ে জকিগঞ্জ থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে চাইলে পুলিশ তাঁদের কক্সবাজারে এসে খোঁজখবর নিতে বলে। জকিগঞ্জ থানার পুলিশ কক্সবাজার ও টেকনাফ থানার পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে।

নিখোঁজ খালেদ হাসানের বাবা ও ইউপি সদস্য সফর উদ্দিন বলেন, নানাভাবে চেষ্টা করেও গত পাঁচ দিন তিনি ছেলেসহ নিখোঁজ ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না। ছেলের জন্য কান্নায় ভেঙে পড়ছেন তাঁর স্ত্রী।

সফর উদ্দিন বলেন, আগামীকাল টেকনাফ থানায় গিয়ে নিখোঁজের বিষয়ে পুলিশের সহযোগিতা চাওয়া হবে। তাঁরাও আজ বিকেল থেকে কক্সবাজার শহরের বিভিন্ন জায়গায় নিখোঁজ ব্যক্তিদের সন্ধান করে ব্যর্থ হয়েছেন।

চট্টগ্রামে একজন ঠিকাদারের অধীন নিখোঁজ ছয়জন কক্সবাজারে আসেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। পরিবারের সদস্যদের সন্দেহ, কাজের কথা বলে কেউ ছয়জনকে কৌশলে টেকনাফে নিয়ে জিম্মি করতে পারেন। অথবা জোরপূর্বক মালয়েশিয়ায় পাচারের জন্য ট্রলারে তুলে দিতে পারেন। কিন্তু মুক্তিপণ দাবি করে সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কেউ তাঁদের ফোন করেননি।

Fetching live reactions...
Was this article helpful?

Comments

Comments

Loading comments…
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন