{getBlock} $results={3} $label={ছবি} $type={headermagazine}

জামালপুরে ‘ডিবি পুলিশ দেখে পালাতে গিয়ে’ আসামির মৃত্যুর ঘটনায় হত্যা মামলা

প্রকাশঃ
অ+ অ-

প্রতিনিধি জামালপুর

মরদেহ | প্রতীকী ছবি

জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলার আদারভিটা ইউনিয়নের পলিশা এলাকার একটি সেতুর ঢাল থেকে মো. শাহীন আলম (৪৩) নামের এক আসামির লাশ উদ্ধারের ঘটনায় হত্যা মামলা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে নিহত ব্যক্তির স্ত্রী মাদারগঞ্জ থানায় মামলাটি করেন। মামলায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করা হয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছিল, গত সোমবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) একটি দল দেখে শাহীন আলম পালাচ্ছিলেন। এ সময় তিনি মাটিতে পড়ে মারা যেতে পারেন। পুলিশের দাবি, নিহত ব্যক্তি গরু চোর চক্রের সঙ্গে জড়িত। তবে শাহীন আলমের স্ত্রী জরিনা বেগমের দাবি, তাঁর স্বামীকে হত্যা করা হয়েছে। এ জন্য তিনি হত্যা মামলা করেছেন।

গতকাল সকালে উপজেলার আদারভিটা ইউনিয়নের পলিশা এলাকার একটি সেতুর ঢালে শাহীন আলমের লাশ পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয় লোকজন। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে লাশটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। নিহত শাহীন আলম জামালপুর শহরের নাছিরপুর এলাকার মৃত জাহেদ আলীর ছেলে। তিনি পিকআপ ভ্যানের চালক ছিলেন। বিভিন্ন থানায় তাঁর নামে হত্যা, গরু চুরিসহ ১১টি মামলা আছে। লাশের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হওয়ার পর গতকাল রাতেই তাঁর দাফন করা হয়।

নিহত শাহীন আলমের এক স্বজন বলেন, প্রায় পাঁচ বছর ধরে তিনি (শাহীন) চুরি করেন না। কিস্তিতে একটি গাড়ি কিনে সেটাই ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে চালান। ওই দিন (সোমবার) রাতে গাড়ি নিয়ে তাঁর ঢাকায় যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তিনি কীভাবে ও কেন মাদারগঞ্জের ওই এলাকায় গেলেন, বিষয়টি তাঁরা বুঝতে পারছেন না।

পুলিশের ভাষ্য, গাড়ি নিয়ে তাঁরা পালিয়ে যাচ্ছিলেন। সেটাই যদি হয়, তাহলে পুলিশ তাঁদের পেছনে গেল না কেন? চলন্ত একটি গাড়িতে চোর আছে পুলিশ বুঝল কীভাবে? বুঝেও যদি থাকে, একজনকে নামালেন আর অন্যরা পালিয়ে গেছেন? তা ছাড়া তাঁর লাশ যেখানে পাওয়া গেছে, সেখান থেকে অনেক দূরে ছিল গাড়িটি। তাদের ধারণা, সেখানে অন্য কিছু হয়েছে। ঘটনার সঠিক তদন্ত করলেই সব বের হয়ে আসবে।

মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেছেন, তাঁর স্বামী শাহীন আলম গরুসহ বিভিন্ন ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। পাঁচ মাস আগে বাড়ি থেকে বের হয়ে যান। এরপর মাঝেমধ্যে মুঠোফোনে তাঁদের খোঁজখবর রাখতেন। মামলায় বাদী বলেছেন, সোমবার রাত ১০টার দিকে তিনি শাহীন আলমকে কল করেন। তাঁর অবস্থান সম্পর্কে জানতে চান। তখন তিনি জানান, কাজের জন্য বাইরে আছেন। পরে কথা বলবেন। পরদিন মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মাদারগঞ্জ থানা–পুলিশের মাধ্যমে তিনি জানতে পারেন, ওই এলাকায় তাঁর মরদেহ পড়ে আছে। পরে থানায় গিয়ে স্বামীর লাশ শনাক্ত করেন তিনি।

বাদীর ভাষ্য, তাঁর স্বামীকে অজ্ঞাতনামা আসামিরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে সোমবার দিবাগত রাত তিনটা থেকে সকাল ছয়টার মধ্যে হত্যা করে ওই এলাকায় লাশ ফেলে রাখে।

হত্যা মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করে জামালপুরের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (মাদারগঞ্জ সার্কেল) মো. সাইদুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় তদন্তকাজ চলছে। পুলিশের এই কর্মকর্তাকে প্রশ্ন করা হয়, ‘গতকাল আপনি জানিয়েছিলেন, স্থানীয় লোকজনের ধাওয়ায় পিকআপ ভ্যান রেখে পালাতে গিয়ে মাটিতে পড়ে শাহীন আলমের মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে।’ এখন থানায় হত্যা মামলা হলো, এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সেটা আমাদের প্রাথমিক ধারণা ছিল। সবচেয়ে বড় বিষয়, ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।’

মামলার একটি অংশে পুলিশের ওপর গাড়ি উঠিয়ে দেওয়ার কথা রয়েছে। ওই সময় সেখানে মাদারগঞ্জ থানার পুলিশ ছিল কি? এর জবাবে পুলিশ কর্মকর্তা মো. সাইদুর রহমান বলেন, ‘না, সেখানে জামালপুর জেলা ডিবির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. নাজমুস সাকিব ও তাঁর টিম ছিল।’

একটি মন্তব্য করুন

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন