এমপি আনোয়ারুল হত্যা: স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিলেন তানভীর
![]() |
| তানভীর ভূঁইয়া। সিএমএম আদালতে নেওয়ার সময় ছবিটি তোলা |ফাইল ছবি |
নিজস্ব প্রতিবেদক: সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম হত্যা মামলায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন এই মামলার আরেক আসামি তানভীর ভূঁইয়া। ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (এসিএমএম) তোফাজ্জল হোসেন আজ মঙ্গলবার তাঁর জবানবন্দি রেকর্ড করেন।
মঙ্গলবার তানভীর ভূঁইয়াকে আদালতে হাজির করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়ার আবেদন করে ডিবি। জবানবন্দি রেকর্ডের পর তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়।
পুলিশ ও আদালত সূত্রে জানা গেছে যে হত্যার পরিকল্পনাকারী আক্তারুজ্জামানের সহযোগী শিমুল ভূঁইয়ার ভাতিজা তানভীর। জবানবন্দিতে তিনি এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার দায় স্বীকার করেছেন।
জবানবন্দিতে তানভীর ভূঁইয়া আদালতকে বলেছেন, পরিকল্পনা অনুযায়ী তিনি গত ৬ মে বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে কলকাতায় যান। এরপর কলকাতার নিউ টাউনের একটি আবাসিক হোটেলে ওঠেন। পরে পরিকল্পনা অনুযায়ী চাচা শিমুল ভূঁইয়ার কথামতো সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীমকে প্রলুব্ধ করে তাঁকে কলকাতায় নিয়ে আসেন।
পুলিশ ও আদালতসংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, আট দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে গত শুক্রবার এই মামলার তিন আসামি সৈয়দ আমানুল্লাহ (প্রকৃত নাম শিমুল ভূঁইয়া), তানভীর ভূঁইয়া ও শিলাস্তি রহমানকে আদালতে হাজির করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। আদালত তাঁদের প্রত্যেকের আবার পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
দুদিন জিজ্ঞাসাবাদ শেষে গতকাল সোমবার শিলাস্তি রহমানকে আদালতে হাজির করা হয়। তিনি ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এরপর তাঁকে কারাগারে পাঠান আদালত।
সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম ১২ মে কলকাতায় যান। পরদিন কলকাতার নিউ টাউন এলাকার সঞ্জিভা গার্ডেন্সের একটি ফ্ল্যাটে তাঁকে খুন করা হয়। ওই ফ্ল্যাটের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ ও অন্যান্য তথ্য বিশ্লেষণ করে কলকাতা পুলিশ বাংলাদেশ পুলিশকে এ তথ্য জানায়।
এরপর ঢাকা থেকে শিমুল ভূঁইয়া, তানভীর ভূঁইয়া ও শিলাস্তি রহমানকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে তাঁদের কাছ থেকে আনোয়ারুল আজীমকে হত্যা ও তাঁর লাশ গুম করার ঘটনার বিস্তারিত তথ্য পায় পুলিশ। তদন্তসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন যে আনোয়ারুল আজীমকে হত্যার পর তাঁর লাশ টুকরা টুকরা করে ব্যাগে ভরে সরানো হয়। এর কিছু অংশ কলকাতার একটি খালে ফেলা হয়েছে।
এ নিয়ে আলোচনার মধ্যেই আনোয়ারুল আজীমের মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ২২ মে তাঁর বাবাকে অপহরণ করার অভিযোগ এনে শেরেবাংলা নগর থানায় একটি মামলা করেন। ওই মামলায় তিন আসামিকে আদালতে হাজির করে দ্বিতীয় দফায় রিমান্ডে পায় গোয়েন্দা পুলিশ।
তদন্তসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ভাষ্যমতে, আনোয়ারুল আজীম খুনের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন শিমুল ভূঁইয়া। তাঁর বাড়ি খুলনার ফুলতলার দামোদর ইউনিয়নে। তিনি চরমপন্থী সংগঠন পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টির প্রধান। এর আগে গণেশ নামের এক ব্যক্তিকে খুন করে যশোরের অভয়নগর থানার এক মামলায় তিনি সাত বছর (১৯৯১-৯৭) কারাগারে ছিলেন। ইমান আলী নামের আরেক ব্যক্তিকে খুনের ঘটনায় আবার ২০০০ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত জেল খাটেন তিনি।

Comments
Comments