[tenolentSC] / results=[3] / label=[ছবি] / type=[headermagazine]

চাঁপাইনবাবগঞ্জে কাটা হলো সড়কের পাশের দুই শতাধিক গাছ

প্রকাশঃ
অ+ অ-

সড়কের পাশের গাছ কেটে নেওয়া হচ্ছে। শুক্রবার দুপুরে চাঁপাইনবাবগঞ্জের আমনূরা এলাকায় | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

প্রতিনিধি চাঁপাইনবাবগঞ্জ: চাঁপাইনবাবগঞ্জে সড়কের পাশের দুই শতাধিক বড় গাছ কাটা হয়েছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জের আমনূরা থেকে রাজশাহী-গোদাগাড়ী সড়কে প্রায় সাড়ে চার কিলোমিটার সড়কে থাকা এসব গাছ কাটা হয়।

আমনূরা কদমতলা মোড়ের বাসিন্দা নজরুল ইসলাম বলেন, সড়কের পাশে ২৫০ মিটার নালা নির্মাণের জন্য সাড়ে চার কিলোমিটারজুড়ে তরতাজা ছায়াদানকারী গাছগুলো কাটা হলো কোন যুক্তিতে, তিনি বুঝতে পারছেন না। এর মধ্যে মরা গাছ পাঁচ-ছয়টির বেশি ছিল না। কাটা গাছগুলোর ডালপালা দ্রুত সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

গাছগুলোর দাবিদার চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা পরিষদের ভাষ্য, সব বিধিমালা অনুসরণ করে ২৭৩টি গাছের দরপত্র আহ্বান করে সর্বোচ্চ দরদাতার কাছে গাছগুলো বিক্রি করা হয়েছে। এর মধ্যে মরা, আধা মরা, পরিপক্ব ও বিদ্যুতের লাইনের কাছে থাকা গাছ রয়েছে। ঠিকাদার ইতিমধ্যে বেশির ভাগ গাছ কেটে নিয়েছেন।

অবসরপ্রাপ্ত স্থানীয় এক স্কুলশিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ৩০ থেকে ৩৫ বছর ধরে গাছগুলোকে ছায়া দিতে দেখে এসেছেন। এখন গাছগুলোর অভাবে এলাকা খাঁ খাঁ করছে। হঠাৎ পাল্টে গেছে দৃশ্যপট। প্রভাবশালী, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও ঠিকাদারদের ভয়ে স্থানীয় লোকজন প্রতিবাদও করতে পারচ্ছেন না।

গাছ কেটে ফেলে রাখা হয়েছে। শুক্রবার দুপুরে চাঁপাইনবাবগঞ্জের আমনূরা এলাকায় | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আফাজ উদ্দীন বলেন, বন বিভাগকে জানিয়ে তাদের প্রতিনিধিদের নিয়ে মূল্য নির্ধারণ কমিটির মাধ্যমে মূল্য নির্ধারণ করার পর গত বছরের ১৩ নভেম্বর জেলা পরিষদের উন্নয়ন সমন্বয় সভায় ২৭৩টি গাছ বিক্রির সিদ্ধান্ত হয়। জেলা উন্নয়ন সমন্বয় সভায় তা অনুমোদিত হয়। ৩২ লাখ ৮ হাজার টাকায় সর্বোচ্চ দরদাতার কাছে গাছগুলো বিক্রি করা হয়েছে। এতে সব বৈধ প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়েছ। কোনো অতিরিক্ত গাছ কাটা হয়নি।

এদিকে এসব গাছের মালিকানা দাবি করেছে বরেন্দ্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ)। এ জন্য সম্প্রতি জেলা পরিষদকে চিঠিও দিয়েছে বিএমডিএ। এ বিষয়ে মো. আফাজ উদ্দীন বলেন, মালিকানার পক্ষে বিএমডিএর কাছে কোনো প্রমাণ নেই। এ নিয়ে শিগগিরই তাদের সঙ্গে বৈঠক হবে।

শ্রমিকেরা সড়কের পাশের গাছ কাটছেন। শুক্রবার দুপুরে চাঁপাইনবাবগঞ্জের আমনূরা এলাকায় | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

স্থানীয় মানুষের ভাষ্য, আমনূরা ঝিলিম বাজারে রাস্তার পাশে পানি নিষ্কাশনের জন্য সড়ক ও জনপথ বিভাগ নির্মাণ করছে ২৫০ মিটার পাকা নালা। এ জন্য মাত্র কয়েকটি গাছ কাটার প্রয়োজন ছিল। কিন্তু নালার বিপরীত পাশে রাস্তার ওপারের গাছগুলো বা সাড়ে চার কিলোমিটারজুড়ে কেন গাছ কাটার প্রয়োজন পড়ল, সে প্রশ্ন তাঁদের।

সড়ক ও জনপথ বিভাগের চাঁপাইনবাবগঞ্জের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মেহেদি খান বলেন, ২৫০ মিটার নালা নির্মাণের জন্য চার-পাঁচটি গাছ কাটার প্রয়োজন ছিল। এ জন্য পাঁচ-ছয় মাস আগে মৌখিকভাবে জেলা পরিষদকে জানিয়েছিলেন। গাছগুলো ৪০ থেকে ৫০ বছরের পরিপক্ব। পরে এগুলোয় পচন ধরবে। তখন দাম পাওয়া যাবে না। এ ছাড়া বিক্রি করা গাছের মধ্যে মরা গাছ, বিদ্যুতের লাইনের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ গাছও রয়েছে। খরতাপের কথা বিবেচনা করে পাঁচ-ছয় দিন থেকে আপাতত গাছ কাটা বন্ধ রাখা হয়েছে।

কেন্দুল গ্রামের এক খেতমজুর বলেন, ‘রাস্তার পাঞ্জরে জমিতে কাম করার পর দুপ্পহরে গাছের ছায়ার নিচে বইস্যা প্যাটে দুটা দিতুন। গামছা পাইত্যা খানিক জিরাইতুং। এখুন তো হামরা খুব কষ্টে পইরা গেনু। হামারঘে কষ্টের কথা কেই বা বুঝবে।’

Fetching live reactions...
Was this article helpful?

Comments

Comments

Loading comments…
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন