[tenolentSC] / results=[3] / label=[ছবি] / type=[headermagazine]

সাঈদীর জন্য দুই দিনের কর্মসূচি দিয়েছে জামায়াত

প্রকাশঃ
অ+ অ-

দলের সাবেক নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ‘জানাজায় বাধা, গায়েবানা জানাজায় বিভিন্ন স্থানে হামলা, একজনকে গুলি করে হত্যার’ প্রতিবাদে দুই দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

নিজস্ব প্রতিবেদক: দলের সাবেক নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ‘জানাজায় বাধা, গায়েবানা জানাজায় বিভিন্ন স্থানে হামলা, একজনকে গুলি করে হত্যার’ প্রতিবাদে দুই দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। কর্মসূচির মধ্যে আছে ১৮ আগস্ট শুক্রবার দেশব্যাপী প্রয়াত নেতার জন্য দোয়া অনুষ্ঠান এবং ২৩ আগস্ট বুধবার বিভিন্ন স্থানে হামলা ও হত্যার প্রতিবাদে মিছিল।

বুধবার এক অজ্ঞাত স্থান থেকে সংবাদ সম্মেলনে জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমির মুজিবুর রহমান এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন। পরে সংবাদ সম্মেলনের বক্তব্য ও ভিডিও গণমাধ্যমে পাঠানো হয়।

জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমির বলেন, ‘আল্লামা সাঈদীর গায়েবানা জানাজায় হামলা করে ফোরকান উদ্দিনকে শহীদ করার প্রতিবাদে এবং ধর্মীয় অধিকারের ওপর নগ্ন হস্তক্ষেপ ও সাংবিধানিক অধিকারে বাধা প্রদান, গ্রেপ্তার ও পুলিশের গুলিতে আহত করার প্রতিবাদে আমি এই কর্মসূচি ঘোষণা করছি।

উপরিউক্ত কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে বাস্তবায়নের জন্য জামায়াতের সকল জনশক্তি, দেশের আপামর জনগণ ও প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করছি।’

একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধে আমৃত্যু কারাদণ্ডে দণ্ডিত দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী ১৪ আগস্ট রাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। পুলিশের পাহারায় ভোররাতে তাঁর লাশ গ্রামের বাড়ি পিরোজপুরে নেওয়া হয়। গতকাল দুপুরে পিরোজপুর শহরে তাঁর জানাজা শেষে দাফন করা হয়।

লিখিত বক্তব্যে জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমির বলেন, সারা দেশে স্বতঃস্ফূর্তভাবে আল্লামা সাঈদীর গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয়, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দেশের বিভিন্ন স্থানে গায়েবানা জানাজায় অংশগ্রহণকারী মুসল্লিদের ওপর হামলা চালায়। চট্টগ্রামে কয়েক যুগ ধরে তাফসির করে আসছেন আল্লামা সাঈদী। ঐতিহাসিক জমিয়াতুল ফালাহ মসজিদে গায়েবানা জানাজার উদ্যোগ নিলে পুলিশ তাতে বাধা দেয়। একপর্যায়ে পুলিশ গুলি ছোড়ে। পুলিশের গুলিতে ২০ জনের বেশি লোক আহত হন। পুলিশ প্রায় ৩০ জনকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়। কক্সবাজার জেলা সদর ও চকরিয়া উপজেলায় পুলিশের গুলিতে ফোরকান উদ্দিন নিহত এবং অনেকে আহত হন। এ ছাড়া গত দুই দিনে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, রাজশাহী, খুলনা, বগুড়া, জামালপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে দুই শতাধিক নেতা-কর্মীকে অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার করা হয়। এর তীব্র নিন্দা জানান জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমির।

সাঈদীর মৃত্যুর পর ঢাকায় হট্টগোলের ঘটনার উল্লেখ করে জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমির বলেন, বিদেশে অবস্থানরত দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর এক সন্তানের আসার সময় সামনে রেখে ঢাকায় সাঈদীর জানাজার সময় ১৬ আগস্ট নির্ধারণ করা হয়। তাঁর মৃত্যুর সংবাদ শোনার পর হাজার হাজার তৌহিদি জনতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে সমবেত হতে থাকে। রাত যত বাড়তে থাকে জনতার উপস্থিতি তত বৃদ্ধি পায়। একপর্যায়ে হাসপাতাল চত্বর ও শাহবাগের আশপাশের এলাকা লোকে লোকারণ্য হয়ে পড়ে। জনতার ব্যাপক ভিড় দেখে রাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আল্লামা সাঈদীর লাশ সরাসরি পিরোজপুর নেওয়ার উদ্যোগ নেয়। সাধারণ জনতা লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্সের সামনে শুয়ে পড়ে ঢাকায় জানাজা করার সুযোগ দেওয়ার দাবি জানাতে থাকে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সমবেত জনতার ওপর মুহুর্মুহু সাউন্ড গ্রেনেড, গুলি ও টিয়ার গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে। একপর্যায়ে পুলিশ হাসপাতালের অভ্যন্তরে গুলি, সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ার গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে হাসপাতালের পরিবেশ মারাত্মকভাবে কলুষিত করে এবং আতঙ্কজনক পরিস্থিতির অবতারণা করে। পুলিশের আক্রমণে হাসপাতালে আগত রোগীদের আত্মীয়স্বজন ও মসজিদের সাধারণ মুসল্লিরা আহত হন। এ সময় পুলিশের হামলায় অর্ধশতাধিক মানুষ আহত হন।

পিরোজপুরে জানাজায় বাধা দেওয়ার অভিযোগ করে জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমির বলেন, জানাজায় যাতে জনগণ অংশগ্রহণ করতে না পারে, সে জন্য সরকার প্রশাসনকে ব্যবহার করে রাস্তার বিভিন্ন স্থানে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে আশপাশের জেলাগুলোর যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়। দ্রুত জানাজা শেষ করার জন্য চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। পৃথিবীর কোনো অমুসলিম দেশেও জানাজায় বাধা দেওয়ার ঘটনা ঘটেনি।

সংবাদ সম্মেলনে দলের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এ টি এম মা’ছুম, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল হালিম, কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সেক্রেটারি মতিউর রহমান আকন্দ, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য নূরুল ইসলাম বুলবুল, আবদুর রহমান মুসাসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

Fetching live reactions...
Was this article helpful?

Comments

Comments

Loading comments…
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন