রাজাকার হিসেবে আঁকা গোলাম আযমের ছবি কালো করে দিল দুর্বৃত্তরা
![]() |
| চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজাকার হিসেবে আঁকা গোলাম আযমের ছবি কালো কালিতে ঢেকে দিল দুর্বৃত্তরা | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে রাস্তায় রাজাকার হিসেবে আঁকা যুদ্ধাপরাধে দণ্ডিত জামায়াত নেতা গোলাম আযমের ছবি দুর্বৃত্তরা কালো কালি দিয়ে ঢেকে দিয়েছে। শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ–উপাচার্য (একাডেমিক) মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খানের মন্তব্যের প্রতিবাদে সোমবার প্রশাসনিক ভবনের সামনে এই ছবি আঁকা হয়েছিল। কিন্তু আজ মঙ্গলবার সকালে শিক্ষার্থীরা দেখে ছবি কালি দিয়ে ঢাকা হয়ে গেছে। রাতের আঁধারে একদল দুর্বৃত্ত এই কাজ করেছে বলে দাবি শিক্ষার্থীদের।
শুধু গোলাম আযম নন, শিক্ষার্থীরা সহ–উপাচার্য মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খানের ব্যঙ্গাত্মক ছবিও এঁকেছিলেন। এটিও কালো কালি দিয়ে ঢাকা হয়েছে। প্রশাসনিক ভবনের সামনে দায়িত্বে থাকা নিরাপত্তা প্রহরী আবুল হাশেম বলেন, ‘আমি ভোর চারটা পর্যন্ত প্রশাসনিক ভবনের সামনে ছিলাম। তারপর ঘুমাতে যাই। সকাল ছয়টায় এসে দেখি, ছবিগুলোতে কালি দেওয়া হয়েছে। কে ছবিগুলোতে কালি দিয়েছে, আমি দেখিনি।’
এর আগে রোববার শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় সহ–উপাচার্য (একাডেমিক) মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান বলেন, ‘যে সময় আমি (পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী) দেশ থেকে পালানোর চেষ্টা করছি, আমি জীবিত থাকব না মৃত থাকব, সে বিষয়ে কোনো ফয়সালা হয়নি; সে সময় পাকিস্তানি যোদ্ধারা বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করবে, এটি আমি মনে করি রীতিমতো অবান্তর।’ এছাড়া তিনি মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেন।
![]() |
| চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে রাস্তায় রাজাকার হিসেবে আঁকা যুদ্ধাপরাধে দণ্ডিত জামায়াত নেতা গোলাম আযমের ছবি | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
অধ্যাপক শামীম উদ্দিন খানের বক্তব্য ছড়িয়ে পড়ার পর সমালোচনা শুরু হয়। বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলসহ ছয়টি সংগঠন তাঁর পদত্যাগের দাবি জানায়। এ দাবিতে তারা সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টায় প্রশাসনিক ভবনে তালা দেয়। ফলে রাত প্রায় পৌনে ৯টা পর্যন্ত ভবনটিতে আটকা ছিলেন সহ–উপাচার্য (একাডেমিক) মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান, সহ–উপাচার্য (প্রশাসনিক) মো. কামাল উদ্দিন এবং ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম। এই সময়ই প্রশাসনিক ভবনের সামনে ছবি দুটি আঁকা হয়।
চাকসুর এজিএস ও ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আইয়ুবুর রহমান বলেন, ‘যারা মুক্তিযুদ্ধকে মানেন না, যারা গোলাম আযমের আদর্শকে ধারণ করে, তারা হয়তো কালি দিয়েছে। কারও কোনো ছবি বা প্রতিকৃতি পছন্দ না হলে, সে ছবির বিপরীতে আরেকটি আঁকতে পারে। তবে এভাবে মুছে দেওয়া বলপ্রয়োগের মধ্যে পড়ে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের খুঁজে বের করা উচিত।’
ছবিগুলোতে কে কালি দিয়েছে তা জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর মো. নুরুল হামিদ বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে কিছু জানি না। আমাদের প্রক্টর স্যার বিস্তারিত বলতে পারবেন।’ পরে প্রক্টর অধ্যাপক হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীকে একাধিকবার ফোন করা হয়, কিন্তু তিনি রিসিভ করেননি।


Comments
Comments