কুড়িগ্রামে ৯ আওয়ামী লীগ নেতা বিএনপিতে যোগ
![]() |
| কুড়িগ্রামে আওয়ামী লীগের ৯ নেতার বিএনপিতে যোগ দিয়েছেন। গতকাল শনিবার | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
কুড়িগ্রামে কয়েকজন সাবেক ও বর্তমান আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মী বিএনপিতে যোগ দেওয়াকে কেন্দ্র করে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়েছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, ছাত্রসংগঠন ও নাগরিক সমাজ এটিকে ‘ফ্যাসিস্টদের পুনর্বাসন’ এবং ‘শহীদদের রক্তের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা’ হিসেবে উল্লেখ করছে।
শনিবার কুড়িগ্রাম জেলা বিএনপির কার্যালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে এসব নেতা-কর্মী বিএনপিতে যোগ দেন। জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মোস্তাফিজার রহমান, যুগ্ম আহ্বায়ক হাসিবুর রহমান এবং সদস্যসচিব ও কুড়িগ্রাম-২ আসনের বিএনপির মনোনীত প্রার্থী সোহেল হোসনাইন কায়কোবাদ ফুল দিয়ে তাদের দলীয় স্বাগত জানান।
বিএনপিতে যোগ দেওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে আছেন পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক ও বর্তমান কাউন্সিলর আনিসুর রহমান, আল হারুনুজ্জামান হারুন, মোস্তফা কামাল, জমশেদ আলী, আবদুল মালেক, সাবেক সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর সহিরন বেগম, মুক্তা বেগমসহ মোট ৯ জন।
ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনা ও আলোচনা শুরু হয়। অনেকেই বিএনপির এই সিদ্ধান্তকে রাজনৈতিক নৈতিকতার প্রশ্নে বিতর্কিত বলে মন্তব্য করছেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কুড়িগ্রাম জেলা আহ্বায়ক লোকমান হোসেন বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট সরকারের মদদপুষ্ট নেতাদের দলে নিয়ে বিএনপি রাজনৈতিক দেউলিয়াত্ব দেখিয়েছে। এতে শত শত শহীদ ও সহস্রাধিক আহত মানুষের আত্মত্যাগের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা হয়েছে।’
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কুড়িগ্রাম জেলা আহ্বায়ক মুকুল মিয়া বলেন, ‘বিতর্কিত নেতাদের রাজনৈতিক আশ্রয় দেওয়া মানে পতিত আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের সুযোগ দেওয়া। এটি জুলাই আন্দোলনে শহীদদের রক্তের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা।’
জামায়াতে ইসলামীও এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। কুড়িগ্রাম জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি নিজাম উদ্দিন বলেন, ‘২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর লগি-বইঠা হামলার সময় ছাত্রশিবিরের কর্মী রফিকুল হত্যা মামলার আসামিসহ পতিত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের নেতাদের বিএনপিতে আশ্রয় দেওয়ায় আমরা লজ্জিত।’
তবে জেলা বিএনপি ভিন্ন ব্যাখ্যা দিয়েছে। আহ্বায়ক মোস্তাফিজার রহমান বলেন, ‘যাঁরা যোগ দিয়েছেন, তাঁরা আওয়ামী লীগের প্রথিতযশা নেতা নন। ৯ জনের মধ্যে দুই-একজন আগে পদে থাকলেও বাকিরা ৫ আগস্টের আগেই পদত্যাগ করেছেন। তাদের নামে কোনো মামলা নেই।’

Comments
Comments