জাবিতে ছাত্রদল নেতার বিরুদ্ধে ছাত্রীদের গালাগাল ও হুমকি অভিযোগ
| জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় | ফাইল ছবি |
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিন্যান্স ফেস্ট-২০২৫ অনুষ্ঠানে অনিয়মের অভিযোগ জানানোয় দুই ছাত্রীসহ কয়েকজন শিক্ষার্থীকে গালাগাল ও হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের এক নেতার বিরুদ্ধে। গতকাল শনিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চের পেছনে এ ঘটনা ঘটে। আজ রোববার ভোরে ভুক্তভোগীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এ কে এম রাশিদুল আলমের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযুক্ত ইমাম হোসেন (সজন) বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ৫০তম ব্যাচের শিক্ষার্থী এবং ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ শাখা ছাত্রদলের সভাপতি।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং ক্লাবের আয়োজনে অনুষ্ঠিত ফিন্যান্স ফেস্ট-২০২৫ অনুষ্ঠানটি দুটি অংশে ভাগ করা হয়েছিল– ‘ফিনফেস্ট ১০.৫–কে রান’ ও জব ফেয়ার। শনিবার রাতে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীদের ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানের উপস্থাপক ক্রেস্ট নেওয়া শিক্ষার্থীদের নাম ভুলভাবে ঘোষণা করেন। এছাড়া জব ফেয়ার সেগমেন্টে অংশ নেওয়া ফিন্যান্স ৫২তম ব্যাচের কোনো শিক্ষার্থীকে মঞ্চে ডাকা হয়নি।
এই অনিয়মের প্রতিবাদ জানায় ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ৫২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী রৌনক জাহান (তানিশা)। এরপর তানিশার সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডা শুরু হয়।
লিখিত অভিযোগে বলা হয়েছে, বাগ্বিতণ্ডার এক পর্যায়ে ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও ছাত্রদল নেতা ইমাম হোসেন ভয়ভীতি দেখিয়ে রৌনক জাহানকে বলেন, ‘তোকে আমি দেখে নেব।’ একইভাবে হুমকি দেয়ায় ৫২তম ব্যাচের আরেক শিক্ষার্থী তানিজিন নুসরাত (মুনা) প্রতিবাদ করলে তাঁকেও একই ধরনের হুমকি এবং অশালীনভাবে গালাগাল করা হয়। এরপর একই ব্যাচের নাসিমুল ইকবাল বিষয়টির প্রতিবাদ জানালে তাঁকেও সরাসরি জীবননাশের হুমকি দেন ইমাম হোসেন এবং বলেন, ‘ইভেন্ট শেষে তোকে মেরে ফেলব’। এ ছাড়া উপস্থিত নারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক ও অপমানজনক আচরণ করেন ছাত্রদলের ওই নেতা।
ঘটনার বিচার চেয়ে শনিবার রাত চারটায় শিক্ষার্থীরা প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলমের বাসভবনের সামনে যান। এ সময় জাকসুর সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলামও উপস্থিত ছিলেন। পরে প্রক্টর বাসভবন থেকে নেমে লিখিত অভিযোগ গ্রহণ করেন এবং সময় চান। এরপর শিক্ষার্থীরা প্রক্টরের কার্যালয়ের সামনে বিচারের দাবিতে অবস্থান করেন। তবে রোববার দুপুর পর্যন্ত প্রক্টর তাঁদের সঙ্গে দেখা করেননি।
অভিযোগের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এ কে এম রাশিদুল আলম বলেন, ‘আমরা অভিযোগ পেয়েছি। এটি অন্তর্বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ঘটে। ওই বিভাগের সভাপতির সঙ্গে কথা হয়েছে, তিনি বিকেলে বসবেন বলে জানিয়েছেন।’
ভুক্তভোগী তানিজিন নুসরাত বলেন, ‘যখন ইমাম ভাই আমার বান্ধবীর সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন, তখন আমি প্রতিবাদ করলে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন এবং তেড়ে আসেন। এই ঘটনায় দ্রুত বিচার হওয়া প্রয়োজন।’
ভুক্তভোগী নাসিমুল ইকবাল বলেন, ‘যখন আমার বন্ধুদের সঙ্গে অসদাচরণ করা হয়, তখন আমি পাশেই ছিলাম। আমি সরাসরি জানতে চাইলে আমাকে হুমকি দেন এবং বলেন, ইভেন্ট শেষে আমাকে মেরে ফেলবেন। আমি নিরাপত্তা শঙ্কায় রয়েছি।’
এ বিষয়ে ছাত্রদল নেতা ইমাম হোসেনের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে সাংবাদিক পরিচয় জানিয়ে তিনি পরে দেখা করে কথা বলবেন বলে সংযোগ কেটে দেন।
Comments
Comments