[tenolentSC] / results=[3] / label=[ছবি] / type=[headermagazine]

১৫০ টাকার ওপরে পেঁয়াজ, ডিসেম্বরে দাম বাড়ার কারণ কী?

প্রকাশঃ
অ+ অ-
পেঁয়াজ | গ্রাফিক্স: পদ্মা ট্রিবিউন 

পেঁয়াজের দাম হঠাৎ বেড়ে গেছে। রাজধানীর বাজারে এক কেজি পেঁয়াজের দাম এখন ১৫০ টাকার ওপরে চলে গেছে। মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজির দাম ২০ থেকে ৩০ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে।

নতুন আগাম পেঁয়াজ এখনও বাজারে আসেনি। এছাড়া পেঁয়াজ আমদানি করার অনুমতিও মেলেনি। তাই দোকানিরা জানিয়েছেন, পেঁয়াজের দাম বাড়ার মূল কারণ এই।

আজ শনিবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার, মোহাম্মদপুর টাউন হল, কৃষি মার্কেট ও উত্তরার হজ ক্যাম্প বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, পেঁয়াজের দাম বেড়ে গেছে।

দুপুরে কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা গেছে, পাবনার ভালো মানের পুরোনো পেঁয়াজ এক পাল্লা বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ টাকায়। খুচরা হিসেবে কিনলে প্রতি কেজির দাম পড়ছে ১৬০ টাকা। তবে ১৪০ টাকাতেও পেঁয়াজ পাওয়া যাচ্ছে।

কারওয়ান বাজারের কয়েকটি দোকানে আগাম পেঁয়াজ এসেছে। দাম পড়ছে প্রতি কেজি ১২০ থেকে ১৩০ টাকা।

কারওয়ান বাজারের পেঁয়াজ বিক্রেতা নীরব মিয়া জানিয়েছেন, ডিসেম্বর মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহের পর নতুন পেঁয়াজ বাজারে আসতে শুরু করবে। তখন দাম পড়বে, প্রতি কেজি ৭০-৮০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাবে। তিনি বলেন, এ সময়ে প্রতিবছরই পেঁয়াজের দাম বাড়ে। এবার ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি হয়নি, তাই দাম বেশি।

মোহাম্মদপুর টাউন হল, কৃষি মার্কেট ও উত্তরার হজ ক্যাম্প বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৫০-১৬০ টাকায়। তবে বিক্রেতারা জানিয়েছেন, তাদের প্রতি কেজি খরচ পড়ছে ১৪০-১৪৮ টাকা।

দেশের অন্যতম বড় পাইকারি পেঁয়াজের বাজার হলো পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার বোয়ালমারী। আড়তদার রাজা হোসেন জানান, সরবরাহ কমে যাওয়ায় বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার পেঁয়াজের দাম হঠাৎ বেড়ে গেছে।

শুক্রবার বোয়ালমারী বাজারে পাইকারিতে প্রতি মণ পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৪ হাজার ৫০০ থেকে ৪ হাজার ৬০০ টাকায়, অর্থাৎ প্রতি কেজি ১১২-১১৫ টাকা। বুধবার দাম ছিল ৩ হাজার ৪০০ থেকে ৩ হাজার ৫০০ টাকা।

রাজা হোসেন বলেন, মূলত শুক্রবার স্থানীয় পাইকারি বাজারে সরবরাহ কমে যাওয়ায় পাইকারি ও খুচরা বাজারে দাম বেড়ে গেছে। তবে সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় আজ শনিবার সাঁথিয়ার বাজারে দাম আবার সাড়ে ৩ হাজার টাকায় নেমেছে।

১০-১৫ দিনের মধ্যে বাজারে মুড়িকাটা পেঁয়াজ আসতে শুরু করবে। কিন্তু বৃহস্পতি ও শুক্রবার দাম বেশি দেখে অনেক কৃষক জমিতে থাকা মুড়িকাটা পেঁয়াজ বাজারে এনেছেন। এসব পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৩০ টাকায়। মুড়িকাটা পেঁয়াজ আসায় সরবরাহ বেড়ে গেছে, যা পুরোনো পেঁয়াজের দাম কমার আরও একটি কারণ।

প্রতিবছর নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসে পেঁয়াজের দাম বাড়ার কারণ ট্যারিফ কমিশন বিশ্লেষণ করেছে। তাদের মতে, চারটি কারণে দাম বাড়ে। প্রথমত, উৎপাদন থেকে ভোক্তা পর্যন্ত প্রতিটি ধাপে মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য; দ্বিতীয়ত, পেঁয়াজ সংরক্ষণের অভাব; তৃতীয়ত, মৌসুমের শেষ পর্যায়; চতুর্থত, বৃষ্টিতে পেঁয়াজ নষ্ট হয়।

পেঁয়াজ সংরক্ষণের মৌসুম জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত। সরকারি সংরক্ষণাগার না থাকায় কৃষক নিজেরাই পেঁয়াজ সংরক্ষণ করেন। ট্যারিফ কমিশন মনে করছে, সংরক্ষণের অভাবই দাম বাড়ার একটি বড় কারণ।

নভেম্বর ও ডিসেম্বর পেঁয়াজের মৌসুমের শেষ সময়। এ সময়ে কৃষকের ঘরে মজুত কম থাকে, তাই দাম বেড়ে যায়।

কৃষকের কাছ থেকে বাজারে পৌঁছানো পর্যন্ত পেঁয়াজ একাধিকবার হাত বদল হয়। প্রতিটি ধাপে মধ্যস্বত্বভোগীরা মুনাফা নেন। এ কারণে মৌসুমে পেঁয়াজের দাম বাড়ে।

পেঁয়াজ উৎপাদনকারী জেলা যেমন পাবনা, ফরিদপুর, রাজবাড়ী, মেহেরপুরসহ অনেক এলাকায় গত মাসে বেশি বৃষ্টি হয়েছে। এতে অনেক আগাম পেঁয়াজ নষ্ট হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, এ কারণেও বাজারে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে।

একটি মন্তব্য করুন

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন