[tenolentSC] / results=[3] / label=[ছবি] / type=[headermagazine]

প্রাচীন মাজারে ভাঙচুর, ময়মনসিংহবাসীর প্রশ্ন—কারা দায়ী?

প্রকাশঃ
অ+ অ-
ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার সহনাটী ইউনিয়নের টেঙ্গাপাড়া গ্রামের শাহজাহান উদ্দিন আউলিয়া (রহ.)-এর মাজারে গত বৃহস্পতিবার রাতে ভাঙচুর করা হয়। শনিবার বিকেলে তোলা | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

ময়মনসিংহ শহর থেকে গৌরীপুর উপজেলার টেঙ্গাপাড়া গ্রামের দূরত্ব প্রায় ৪৩ কিলোমিটার। গ্রামে আছে প্রাচীন একটি মাজার। তবে কত প্রাচীন, তা কেউ ঠিক জানে না। মাজারের সীমানাপ্রাচীরের ভেতরে থাকা পুরোনো তিনটি গাছ দেখে স্থানীয়রা ধারণা করছেন এগুলো প্রায় ২০০ বছরের বেশি পুরোনো।

প্রাচীন মাজারটিতে কখনো গানবাজনা বা ওরস আয়োজন হতো না। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার রাতের কোনো এক সময় মাজারটিতে ভাঙচুর চালানো হয়।

মাজার কেন ভাঙা হলো, তা স্থানীয় বাসিন্দারা জানতে পারছেন না। এ ঘটনায় আজ শনিবার বিকেলে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে থানায় মামলা হয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে শাহজাহান উদ্দিন আউলিয়া (রহ.)-এর মাজারের সীমানাপ্রাচীর ভেঙে ভেতরে গোবর ও মলমূত্র ছিটানো হয়। শুক্রবার সকালে মাজারের এমন অবস্থা দেখে স্থানীয়রা অসন্তোষ প্রকাশ করেন।

মাজারের পাশের বাড়ির বাসিন্দা রকিবুল ইসলাম বলেন, ‘শীতের রাত হওয়ায় সবাই তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে গিয়েছিলেন। মাজারের ইট ভাঙার শব্দ আমরা শুনিনি। মাজারে এমন কিছু ঘটত না, যে কেউ ভাঙতে চাইবে। কারা ও কেন ভাঙল, তা বুঝতে পারছি না।’

স্থানীয় সুলতান মিয়া (৭০) বলেন, ‘মাজারটি আমার বাবা-দাদারাও একই অবস্থায় দেখেছেন। মাজারের গোড়ায় থাকা ডেফলগাছগুলো দুই-দেড়শ বছরের বেশি পুরোনো। মাজারে খারাপ কোনো কাজ না হলেও কেন ভাঙা হলো, বোঝা যাচ্ছে না। আমরা গ্রামের কাউকেই সন্দেহ করতে পারছি না।’

গ্রামের বাসিন্দা শহীদুল্লাহ্ ফকির (৬৫) বলেন, ‘মাজারে ভাঙচুর করা হয়েছে, গোবর ছিটানো হয়েছে, পায়খানা ও শাবল দিয়ে কবর ফাঁটা হয়েছে। এটি খুবই খারাপ হয়েছে। যারা করেছে, তাদের বিচার চাই।’

মাজারে অন্তত ৩৫ বছর ধরে প্রতিদিন মাগরিবের নামাজের আগে মোমবাতি জ্বালান খাদেম মো. সায়েদুল ইসলাম ও তাঁর স্ত্রী জরিনা খাতুন। আজ শনিবার সন্ধ্যার আগমুহূর্তে মোমবাতি জ্বালাতে আসেন তিনি। এই দম্পতি মাজারটি পরিষ্কার ও দেখভাল করেন। জরিনা খাতুন বলেন, ‘বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মোমবাতি জ্বালিয়ে গিয়েছিলাম। পরদিন সকালে এসে দেখি মাজার ভাঙচুর করা, গোবর ও পায়খানা করা হয়েছে। পরে সবাইকে বিষয়টি জানাই।’

এ ঘটনায় আজ বিকেলে গৌরীপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দেন মাজারের খাদেম মো. সায়েদুল ইসলাম। অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে দেওয়া অভিযোগটি বিকেলেই মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়েছে।

মাজারের খাদেম মো. সায়েদুল ইসলাম বলেন, ‘মাজার নিয়ে কারও রাগ-ক্ষোভ ছিল না। কারা ও কেন ভাঙল, তা আমরা জানি না। মাজারটি কেন ভাঙল, আল্লাহ জানেন।’

মাজার-সংলগ্ন মসজিদের ইমাম ওমর ফারুক বলেন, ‘আমি ছুটিতে ছিলাম। সাত দিন পর আজ শনিবার এসেছি। মাজার কারা ভাঙল, তা আমি জানি না।’

গৌরীপুর থানার ওসি মো. কামরুল হাসান বলেন, ‘কেউ শত্রুতাবশত বা মাদকাসক্ত মাজারটি ভাঙচুর করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। থানায় মামলা হয়েছে। আমরা তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করছি। তদন্ত ছাড়া কিছু বলা যাচ্ছে না।’

Fetching live reactions...
Was this article helpful?

Comments

Comments

Loading comments…
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন