গোপালগঞ্জে ‘ঘুষের’ ১০ লাখ টাকাসহ সড়ক বিভাগের পিয়ন আটক
![]() |
| গ্রেপ্তার মোশারফ ও মনির | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
গোপালগঞ্জে পুলিশ ১০ লাখ টাকাসহ শরীয়তপুর সড়ক বিভাগের এক পিয়ন ও প্রাইভেট কারের চালককে আটক করেছে। এ সময় একটি প্রাইভেট কারও জব্দ করা হয়।
গতকাল বুধবার বিকেল সাড়ে ৪টায় শহরের পুলিশ লাইনস মোড়ে নিয়মিত তল্লাশি চলাকালীন তাদের আটক করা হয়। পুলিশের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, তল্লাশির সময় প্রাইভেট কারের ভেতরে থাকা একটি ব্যাগে মোট ১০ লাখ টাকা পাওয়া যায়। জিজ্ঞাসাবাদে প্রাইভেট কারের আরোহী ও পিয়ন মোশারফ হোসেন অসংলগ্ন কথাবার্তা বলেন। বিষয়টি সন্দেহজনক মনে হলে পুলিশ কার ও টাকা জব্দ করে এবং দুজনকে গোপালগঞ্জ সদর থানায় নেয়।
আটক মোশারফ হোসেন মাদারীপুর সদর উপজেলার চর খসরু গ্রামের বাসিন্দা। প্রাইভেট কারের চালক হলেন শরীয়তপুরের দক্ষিণ মধ্যপাড়া এলাকার মো. মনির হোসেন (৪০)।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সড়ক বিভাগের দায়িত্বশীলরা জানান, শরীয়তপুর সড়ক বিভাগের একটি কাজের দরপত্রের অনুমোদনের জন্য ওই টাকা গোপালগঞ্জ সড়ক সার্কেলের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী ও জোনের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীকে দেওয়ার জন্য আনা হয়েছিল। খামের ওপর ‘সার্কেল’ অর্থাৎ গোপালগঞ্জ সড়ক সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী জিকরুল ইসলামের দপ্তরের নাম লেখা ছিল।
তবে মোশারফ হোসেন পুলিশকে জানিয়েছিলেন, টাকা গোপালগঞ্জ সড়ক সার্কেলের উপসহকারী প্রকৌশলী সাজ্জাদ হোসেনকে দেওয়ার জন্য এনেছিলেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সড়ক বিভাগের আরও কয়েকজন দায়িত্বশীল বলছেন, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সাদেকুল ইসলাম ও তত্ত্বাবধায়ক জিকরুল ইসলাম কৌশলে এ ঘটনার দায় উপসহকারী প্রকৌশলী সাজ্জাদ হোসেনের ওপর চাপাচ্ছেন।
এ বিষয়ে গোপালগঞ্জ সড়ক সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী জিকরুল ইসলাম বলেন, ‘গতকাল রাতে শরীয়তপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী সাহেব আমাকে মোবাইলে বিষয়টি জানিয়েছিলেন। আমি এটা নিয়ে মাথা ঘামাইনি। কারণ, এটি আমার বিষয় নয়। আমি ৩০ বছরের চাকরিজীবনে কোনো দিন ফিল্ডে কাজ করি নি। এই সরকারের আমলে গোপালগঞ্জে বদলি হওয়ার পর প্রথমবার ফিল্ডে কাজ করছি। আমি তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে কোনো ঠিকাদারের বিল বা টেন্ডারের সঙ্গে জড়িত নই। তবে নতুন নিয়ম অনুযায়ী এখন থেকে নির্বাহী প্রকৌশলী তাঁর দপ্তর থেকেই সব ধরনের টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবেন।’
গোপালগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অর্থ ও প্রশাসন) মোহাম্মদ আফতাব উদ্দিন বলেন, ‘পুলিশ লাইনস মোড় থেকে ১০ লাখ টাকাসহ এই দুজনকে আটক করা হয়েছে। উপসহকারী প্রকৌশলী সাজ্জাদ হোসেনকেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আনা হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।’
শরীয়তপুর সড়ক বিভাগ দীর্ঘদিন ধরে গোপালগঞ্জ সড়ক সার্কেল ও জোনের অধীনে কাজ করে আসছে।

Comments
Comments