[tenolentSC] / results=[3] / label=[ছবি] / type=[headermagazine]

পঞ্চগড়ে আটকা মাইক্রোবাস সরানোর চেষ্টা করতে গিয়ে চালকের মৃত্যু

প্রকাশঃ
অ+ অ-

একতা এক্সপ্রেস ট্রেনটি প্রতিরোধ ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের মুখে পড়ে আবার পঞ্চগড় রেলওয়ে স্টেশনে ফিরে যায়। গতকাল বুধবার রাতে  | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

পরিবারের সদস্যদের নিয়ে মাইক্রোবাসে বাড়ি ফিরছিলেন চালক আখিরুল ইসলাম (২৮)। পথে একটি খোলা রেলক্রসিংয়ে হঠাৎ মাইক্রোবাসটি আটকে যায়। স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় তিনি পেছন থেকে গাড়িটি ঠেলে সরানোর চেষ্টা করছিলেন। একপর্যায়ে পরিবারের সবাই নিরাপদ দূরত্বে সরে যান। মাইক্রোবাসটি অক্ষত থাকলেও ট্রেনে কাটা পড়ে আখিরুলের মৃত্যু হয়। দুর্ঘটনাটি বুধবার রাত ৮টার পর পঞ্চগড় সদর উপজেলার ধাক্কামারা ইউনিয়নের টেংগনমারী রেলক্রসিংয়ে ঘটে।

পঞ্চগড় রেলওয়ে স্টেশন কর্তৃপক্ষ জানায়, রাত ৮টায় পঞ্চগড় থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়া বিশেষ একটি ট্রেনের সঙ্গে এই দুর্ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর বিক্ষুব্ধ স্থানীয়রা প্রায় তিন ঘণ্টা রেলপথ অবরোধ রাখেন। এ সময় রাত ৯টা ১০ মিনিটে ছাড়ানো একতা এক্সপ্রেস ট্রেনও বাধার মুখে পড়ে আবার পঞ্চগড় রেলওয়ে স্টেশনে ফিরে আসে। পরে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ট্রেনটি প্রায় দুই ঘণ্টা দেরিতে ঢাকার উদ্দেশে ছাড়ে।

নিহত আখিরুল ইসলাম পঞ্চগড় সদর উপজেলার মাগুরা ইউনিয়নের মাগুরা-বান্দেরাপাড়া এলাকার আবুল হোসেনের ছেলে। তিনি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মাইক্রোবাস চালক ছিলেন।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ধাক্কামারা ইউনিয়ন পরিষদের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য সাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘পঞ্চগড় রেলওয়ে স্টেশন থেকে ট্রেন ছাড়ার মাত্র তিন–চার মিনিটের মধ্যেই টেংগনমারী রেলক্রসিংয়ে এসে পড়ে। এখানে কোনো গেটম্যান নেই। রাত আটটা তিন–চার মিনিটের সময় মাইক্রোবাসটি খোলা রেলক্রসিংয়ে আটকে যায়। আখিরুল একাই নেমে গাড়ি ঠেলতে থাকেন। আমরা কয়েকজন এগিয়ে গিয়ে সহায়তা করি। ট্রেন আসতে দেখে আখিরুল দ্রুত পরিবারের সদস্যদের গাড়ি থেকে নামিয়ে দেন। মাইক্রোবাসটি সফলভাবে রেললাইন পার হয়ে সড়কে উঠলেও তিনি পেছনে ঠেলতে থাকা অবস্থায় ট্রেনে কাটা পড়ে প্রাণ হারান। আমাদের চোখের সামনে তার করুণ মৃত্যু হয়।’

দুর্ঘটনার পর আশপাশের এলাকার শত শত মানুষ সেখানে জড়ো হন। আখিরুলের লাশ ঘটনাস্থলে রেখে তারা রেললাইনে অবস্থান নিয়ে অবরোধ শুরু করেন। তারা ট্রেন চলাচলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে রেলক্রসিংয়ে নিরাপত্তা জোরদার, গেটম্যান নিয়োগ এবং নিহতের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ প্রদানের দাবি করেন।

প্রথমে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা লাশ উদ্ধার করতে গেলে বাধার মুখে পড়েন। পরে জেলা প্রশাসক কাজী মো. সায়েমুজ্জামান, পুলিশ সুপার রবিউল ইসলাম, সেনাবাহিনী সদস্য এবং রেলওয়ে কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে আসেন। জেলা প্রশাসকের আশ্বাসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। নিহতের স্বজনেরা পরে লাশ বাড়ি নিয়ে যান। রাত ১১টা ২০ মিনিটে একতা এক্সপ্রেস ট্রেন ঢাকার উদ্দেশে ছাড়ে।

পুলিশ সুপার রবিউল ইসলাম বলেন, ‘খবর পেয়ে জেলা প্রশাসকসহ আমরা ঘটনাস্থলে যাই। উত্তেজিত জনতাকে বুঝিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা হয়। পরে রাত ১১টা ২০ মিনিটে পঞ্চগড় থেকে একতা এক্সপ্রেস ঢাকার উদ্দেশে ছাড়ে।’

Fetching live reactions...
Was this article helpful?

Comments

Comments

Loading comments…
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন