বীরশ্রেষ্ঠদের স্মৃতি রক্ষায় অবহেলা, সংকটে জাদুঘর ও গ্রন্থাগারগুলো
![]() |
| বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ল্যান্সনায়েক নূর মোহাম্মদ শেখ গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর। নড়াইল সদর উপজেলার নূর মোহাম্মদনগরে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
মহান মুক্তিযুদ্ধে সর্বোচ্চ বীরত্বের স্বীকৃতি পাওয়া বীরশ্রেষ্ঠদের স্মৃতি সংরক্ষণের জন্য দেশের বিভিন্ন জেলায় গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর গড়ে তোলা হয়েছে। নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস এবং বীরশ্রেষ্ঠদের আত্মত্যাগ তুলে ধরাই ছিল এই প্রতিষ্ঠানগুলো গড়ার মূল উদ্দেশ্য।
কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, অধিকাংশ জায়গায় এসব প্রতিষ্ঠান চলছে অবহেলা, জনবল সংকট ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে। কোথাও ভবন জীর্ণ, কোথাও পর্যাপ্ত বই বা প্রদর্শনী নেই, আবার কিছু জাদুঘর নিয়মিত খোলা হয় না। এ কারণে দর্শনার্থী ও পাঠকের সংখ্যা দিন দিন কমছে। জেলা পরিষদ বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে থাকা এসব প্রতিষ্ঠান কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে না বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর
নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলার রুহুল আমিননগরে (সাবেক বাঘপাচড়া গ্রাম) এই প্রতিষ্ঠান নানা সমস্যা নিয়ে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে। দর্শনার্থীদের আকৃষ্ট করার মতো কোনো বিশেষ উদ্যোগ নেই। জনবলও কম; কেয়ারটেকার একাই সব দায়িত্ব সামলাচ্ছেন। এ কারণে প্রতিষ্ঠার প্রায় দেড় যুগেও স্মৃতি জাদুঘরটি পূর্ণতা পায়নি। এর ফলে দর্শনার্থীর সংখ্যা দিন দিন কমছে।
সরেজমিন দেখা গেছে, গ্রন্থাগার ও জাদুঘরের ভেতরের দেয়ালের রং ফিকে, ৯টি বৈদ্যুতিক পাখার মধ্যে ৫টি কাজ করছে না। জানালার কাচ ভাঙা, দরজা নষ্ট, চেয়ার ভাঙাচোরা। গ্রন্থাগার থাকলেও কোনো সংবাদপত্র বা মাসিক পত্রিকা নেই। তাকের ওপর রাখা মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক বইগুলোও লাইব্রেরিয়ান না থাকায় অযত্নে পড়ে আছে।
জেলা সদর থেকে জাদুঘর দেখতে আসা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের নারী কর্মকর্তা সানজিদা আক্তার বলেন, ‘জাদুঘরে বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিনের ব্যক্তিগত বা কর্মজীবনের ব্যবহৃত জিনিসপত্র বা পর্যাপ্ত স্মৃতিচিহ্ন নেই। এখানে শুধু কিছু ছবি, সরকারি-বেসরকারি পদক ও কিছু মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক বই রয়েছে, যা একজন বীরশ্রেষ্ঠের স্মৃতি ধরে রাখার জন্য যথেষ্ট নয়।’
স্থানীয় বাসিন্দা গোলাম মোস্তফা জানান, ২০০৮ সালে তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে এই স্মৃতি জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। তখন উদ্যোগটি যথাযথ ছিল। স্বাধীনতার পর দীর্ঘ সময় পার হলেও বীরশ্রেষ্ঠদের স্মৃতি রক্ষায় খুব কমই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। তবে পরবর্তী রাজনৈতিক সরকার ১৫ বছর ক্ষমতায় থাকা সত্ত্বেও জাদুঘরটিকে পূর্ণতা দেওয়ার কোনো উদ্যোগ নেয়নি।
কেয়ারটেকার নাছির উদ্দিন বলেন, তিনিই একমাত্র কর্মচারী। প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দর্শনার্থীরা জাদুঘর দেখতে আসেন। তবে সপ্তাহের শুক্র ও শনিবার দর্শনার্থীর সংখ্যা বেশি থাকে। দর্শনার্থীদের পরিদর্শনের সুবিধা দেওয়া, জাদুঘরের ধোয়া-মোছা, ঝাড়ু দেওয়া, টয়লেট পরিষ্কার করা—সবকিছুই একাই করতে হয়। তাই দর্শনার্থীদের সেবা দিতে একজন লাইব্রেরিয়ানসহ আরও জনবল থাকলে সুবিধা হতো।
বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আবদুর রউফ গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর
ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার সালামতপুরে বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আবদুর রউফ গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘরটি ২০০৮ সালে উদ্বোধন করা হয়। প্রায় ৫ হাজার ১৭৯টি বই থাকলেও স্মৃতি জাদুঘর হিসেবে এটি কার্যত গুরুত্বহীন।
বীরশ্রেষ্ঠের ব্যবহৃত স্মৃতিচিহ্ন বলতে আছে মাত্র দুটি প্লেট ও একটি বাটি। পাঠক উপস্থিতি খুবই কম। যোগাযোগ ব্যবস্থা খারাপ হওয়ায় দর্শনার্থীও আসেন না। একজন লাইব্রেরিয়ান ও একজন দারোয়ান কাম কেয়ারটেকারের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি পরিচালিত হয়। দুজনের জন্য ভবনে আলাদা দুটি কক্ষ আছে। তবে কাউকে স্থায়ীভাবে চাকরি দেওয়া হয়নি; তারা মজুরিভিত্তিতে (মাস্টাররোল) কাজ করছেন। বারবার আবেদন–নিবেদন করার পরও চাকরি স্থায়ী না হওয়ায় কাজের প্রতি আগ্রহ কম।
লাইব্রেরির পাঠকদের রেজিস্টার করার জন্য একটি খাতা রয়েছে। খাতা ঘেঁটেই দেখা যায় পাঠকের সর্বশেষ নিবন্ধন ২০২৪ সালের ১১ জানুয়ারি। এর আগে ২০২৩ সালের ২০ ডিসেম্বর, তার আগেরটি ২০১৮ সালের ১৩ আগস্ট। একটি আলমারিতে উইপোকা ধরে ৫ থেকে ৭ শত বই নষ্ট হয়েছে। নষ্ট হওয়া বইয়ের সঠিক সংখ্যা জানা যায়নি, একই কারণে তালিকাও নেই।
ফরিদপুর শহর থেকে সালামতপুরের দূরত্ব ৪০ কিলোমিটার। ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের কামারখালী বাজার থেকে গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘরের দূরত্ব চার কিলোমিটার। সড়কটি বারবার নদীভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত এবং চলাচলের অনুপযুক্ত। বর্তমানে নদীভাঙন রোধে কাজ চললেও দীর্ঘদিন ধরে সড়কটি বেহাল। মাইক্রোবাস বা বাস চলাচলের কোনো সুযোগ নেই।
কামারখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রাকিব হোসেন চৌধুরী বলেন, এ প্রতিষ্ঠানে পাঠক ও দর্শক যাওয়ার পথে মূল সমস্যা যাতায়াত। হেঁটেও কেউ চলাচল করতে চায় না। এখানে একটি উন্নত মানের লাইব্রেরি আছে, যেখানে অনেক মূল্যবান বই রয়েছে। তা জানাতে এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রচারণা চালানো যেতে পারে। প্রতিষ্ঠান ঘিরে বীরশ্রেষ্ঠের মৃত্যুদিন ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে আয়োজনের পরিসর বাড়ানো যেতে পারে, তিনি মনে করেন।
বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহি মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর
ভোলার আলীনগরে বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহি মোহাম্মদ মোস্তফা কামালের নামে নির্মিত গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর চরম অবহেলায় রয়েছে। চারপাশে বনজঙ্গল, ভেতরে ভাঙাচোরা আসবাব। পর্যাপ্ত বই নেই, কোনো স্মারক নেই। সাত বছর ধরে এখানে কোনো লাইব্রেরিয়ান নেই। একজন কেয়ারটেকার দিনমজুরি ভিত্তিতে কাজ করছেন। স্থানীয় শিক্ষার্থীরা জানান, দর্শনার্থী না থাকায় জাদুঘরটি কার্যত অকেজো।
সরেজমিনে দেখা গেছে, তিন বছর আগে রং করলেও ছাদ থেকে পলেস্তারা খসে পড়ছে। স্মৃতি পাঠাগারের সামনে বনজঙ্গল ছড়িয়ে আছে। আগে মালি গিয়ে বাগান সংস্কার করলেও এখন তা বন্ধ। এখানে সাত বছর ধরে লাইব্রেরিয়ান নেই, কেয়ারটেকার আছেন। তিনি খোলার ২২ দিন ৭০০ টাকা করে দিনমজুরি পান। পাঠাগারে ১৭টি বুকশেলফের মধ্যে ৯টি ঠিক আছে। উদ্বোধনী সময়ে দেওয়া শিশুসাহিত্য, বিজ্ঞান ও রচনাবলিসহ নানা বইয়ের শেলফ ভাঙা ও খালি। গত ১০ বছরে নতুন কোনো বই দেওয়া হয়নি। মোস্তফা কামালের জীবনী বা বীরত্বগাথা নিয়ে কোনো বই বা নথি পাওয়া যায়নি।
![]() |
| বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামাল গ্রন্থাগার-জাদুঘরের বেহাল দশা, অবহেলায় হারিয়ে যাচ্ছে শৌর্যের স্মৃতি। সম্প্রতি তোলা | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
দেখা গেছে, পাঠাগারের ফ্যান ঠিক আছে, কিন্তু তিনটি বাল্ব জ্বলে, বাকি বাল্বগুলো বিকল। রিডিং টেবিল নষ্ট, ৪০টি চেয়ারের ৩০টি আছে, বাকিগুলো ভাঙা। ফুলবাগান পরিষ্কার করা দরকার। ভবনের দেওয়ালে শেওলা পড়েছে। মাঠের মধ্যে গরু চরে। পতাকাস্ট্যান্ড নেই।
মুক্তিযোদ্ধা ও স্থানীয়রা বলছেন, বীরশ্রেষ্ঠের স্মৃতি সংরক্ষণে কোনো পরিকল্পিত উদ্যোগ নেই। ফলে নতুন প্রজন্ম তাঁর সম্পর্কে জানতে পারছে না। প্রাথমিক স্তরের বই ছাড়া কোথাও তাঁর বীরত্ব যথাযথভাবে উপস্থাপিত নেই। অনেক শিক্ষার্থী এমনকি তাঁর জন্মস্থানও জানে না।
ভোলা নাজিউর রহমান ডিগ্রি কলেজের ইংরেজি প্রভাষক কামাল হোসেন শাহিন বলেন, বীরশ্রেষ্ঠের নামের গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘরের জনপ্রিয়তা বাড়াতে সবাইকে এগিয়ে আসা উচিত। সরকারি দিবস, মেলা, সাহিত্য মেলাসহ সব অনুষ্ঠান এবং প্রতিযোগিতার আয়োজন করা উচিত।
গ্রন্থাগার ও জাদুঘরটি দেখভালের দায়িত্ব ভোলা জেলা পরিষদের। পরিষদের প্রশাসক এবং ভোলার জেলা প্রশাসক শামীম রহমান বলেন, তিনি নতুন এসেছেন। খোঁজ নিয়ে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেবেন।
বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখ গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর
নড়াইল সদর উপজেলার মহিষখোলা (বর্তমান নূর মোহাম্মদ নগর) গ্রামে বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখ গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর স্থাপন করা হয়েছে। এটি বীরশ্রেষ্ঠের জন্মস্থান। নড়াইল জেলা পরিষদের তত্ত্বাবধানে ৬৬ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই প্রতিষ্ঠানটিতে বীরশ্রেষ্ঠের ব্যবহৃত জিনিসপত্র ছাড়াও প্রায় ৬ হাজার বই আছে। ২০০৮ সালের ১৮ মার্চ এটি উদ্বোধন করা হয়।
সম্প্রতি সরেজমিন দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানটি তালাবদ্ধ অবস্থায় আছে। বাইরে থেকে দেখা যায়, কয়েকটি জানালার কাচ ভাঙা। আশপাশে কেউ নেই। এরপর গ্রন্থাগারের কেয়ারটেকার ইউনুস শেখকে ফোন করা হয়। তিনি জানান, দাপ্তরিক কাজে তিনি নড়াইল জেলা পরিষদে আছেন। তাই গ্রন্থাগারটি বন্ধ।
এ সময় এলাকার কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বীরশ্রেষ্ঠের স্মরণে এবং এলাকাবাসীর জ্ঞানের প্রসারের জন্য কোটি টাকা খরচ করে গ্রন্থাগার ও জাদুঘর নির্মাণ করা হলেও কাঙ্ক্ষিত সুফল মিলছে না। জনবলসংকটে মাঝেমধ্যে এটি বন্ধ থাকে। দূরদূরান্ত থেকে অনেক অতিথি এসেও ফিরে যান। লাইব্রেরিতে ছয় হাজার বই থাকলেও লাইব্রেরিয়ানের অভাবে সঠিক ব্যবহার সম্ভব হচ্ছে না।
পরে জেলা পরিষদে গিয়ে আবার কথা হয় কেয়ারটেকার ইউনুস শেখের সঙ্গে। তিনি বলেন, মাঝে মাঝে লাইব্রেরিয়ান নিয়োগ দেওয়া হলেও তারা থাকে না। শুরু থেকেই তিনি এখানে কেয়ারটেকার হিসেবে কাজ করছেন। বর্তমানে পুরো প্রতিষ্ঠানটি তিনি একাই চালাচ্ছেন। তাই তিনি বাইরে থাকলে প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকে। বিভিন্ন অনুষ্ঠানের সময় অনেক মানুষের সমাগম হয়, তখন একা সামলানো কঠিন। তিনি আরও বলেন, ভালোভাবে রক্ষণাবেক্ষণ না করলে ভবন, বই ও আলমারিগুলো নষ্ট হচ্ছে। একজন লাইব্রেরিয়ান, আয়া ও প্রহরী নিয়োগ দিলে ভালো হতো।
জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আছাদুজ্জামান বলেন, তিনি সম্প্রতি এখানে যোগদান করেছেন। দ্রুতই প্রতিষ্ঠানটি পরিদর্শন করবেন। সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহি হামিদুর রহমান গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর
ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার হামিদনগরে অবস্থিত বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহি হামিদুর রহমান গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর তুলনামূলক ভালো অবস্থায় আছে। প্রতিদিন প্রায় দেড় শতাধিক পাঠক এখানে আসেন। তবে এখনও স্থায়ী জনবল নেই।
মহেশপুর উপজেলার খোর্দ্দখালিশপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান। তাঁর নাম অনুসারে গ্রামের নাম রাখা হয়েছে ‘হামিদনগর’। ২০০৮ সালে এই গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করা হয়।
সম্প্রতি ওই গ্রন্থাগার ও জাদুঘরে গিয়ে কথা হয় লাইব্রেরিয়ান ও হামিদুর রহমানের ভাতিজা মোস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গে। তিনি জানান, বর্তমানে লাইব্রেরিতে পাঁচ হাজারের বেশি বই আছে। প্রতিদিন ১৫০ থেকে ১৬০ জন পাঠক ও দর্শনার্থী এখানে আসেন। প্রতিদিন দুইটি করে পত্রিকা রাখা হয়। বইয়ের পাশাপাশি পাঠকেরা পত্রিকাও পড়েন।
![]() |
| ঝিনাইদহের মহেশপুর অবস্থিত বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
জাদুঘরে হামিদুর রহমানের তেমন কোনো স্মৃতিচিহ্ন দেখা যায়নি, তবে এখানে কিছু ছবি ও ম্যুরাল চিত্র আছে। গ্রন্থাগারে ঢুকে দেখা গেল কয়েকজন ছাত্রী বই পড়ছেন। তারা জানান, মাঝেমধ্যেই এখানে আসেন বই পড়তে। বাইরে সময় নষ্ট না করে লাইব্রেরিতে সময় কাটান। এই লাইব্রেরিতে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সম্পর্কিত বই পাওয়া যায়, তাই তারা বেশি আগ্রহ নিয়ে এখানে আসেন।
স্থানীয় বাসিন্দা কামরুল ইসলাম বলেন, লাইব্রেরির জনপ্রিয়তা ক্রমেই বাড়ছে। পাশেই বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমানের নামে কলেজ থাকায় শিক্ষার্থীরা সব সময় এখানে আসেন। কিন্তু লাইব্রেরিটি বিকেল ৫টা পর্যন্ত খোলা থাকে। শুক্র ও শনিবার বন্ধ থাকে। ফলে পাঠক ও দর্শনার্থীরা প্রকৃত সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তিনি বলেন, স্থানীয় মানুষকে চিন্তা করে সন্ধ্যা পর্যন্ত এবং সপ্তাহে সাত দিন লাইব্রেরি খোলা রাখা প্রয়োজন।
লাইব্রেরিয়ান মোস্তাফিজুর রহমান জানান, তিনি ছাড়াও মুকুল জোয়ার্দ্দার নামে আরেকজন কেয়ারটেকার আছেন। তারা সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত খোলা রাখতে চান। কিন্তু মাসে মাত্র ১৫ হাজার টাকায় চুক্তিভিত্তিতে কাজ করতে হচ্ছে, যা দিয়ে জীবনধারণ করা কঠিন। জেলা পরিষদ থেকে তাদের বেতন দেওয়া হয়। ২০০৮ সাল থেকে দায়িত্ব পালন করলেও আজও তাদের চাকরি স্থায়ী করা হয়নি। তিনি লাইব্রেরি আরও জনপ্রিয় ও পাঠকপ্রিয় করতে তাদের চাকরি স্থায়ীকরণের দাবি করেন।



Comments
Comments