[tenolentSC] / results=[3] / label=[ছবি] / type=[headermagazine]

নিউক্লিয়ার বর্জ্য সংরক্ষণ নিয়ে দুশ্চিন্তা বাড়ছে

প্রকাশঃ
অ+ অ-
পারমাণবিক চুল্লি | গ্রাফিক্স: পদ্মা ট্রিবিউন 

একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে জ্বালানি থেকে শক্তি উৎপাদন করা হয়। শক্তি উৎপাদনের পর যে বর্জ্য থেকে যায়, তা লাখ লাখ বছর ধরে তেজস্ক্রিয় থাকে। এই বর্জ্যের সবচেয়ে বড় সমস্যা সৃষ্টিকারী উপাদানের একটি হলো আয়োডিন-১২৯ বা আই-১২৯। এটি এক ধরনের শক্তিশালী তেজস্ক্রিয় পদার্থ, যা সহজে ক্ষয় হয় না। এই উপাদান মানবদেহে প্রবেশ করলে, বিশেষ করে থাইরয়েডে পৌঁছালে, ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়তে পারে। এ কারণেই আই-১২৯ নিয়ন্ত্রণ বা নিউক্লিয়ার বর্জ্য ব্যবস্থাপনা খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে ধরা হয়।

বর্তমানে বিভিন্ন দেশে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য আলাদা আলাদা পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়। কিছু দেশ এসব বর্জ্য মাটির গভীরে পুঁতে রাখে, আবার কিছু দেশ ফিল্টার করে পরিবেশে ছেড়ে দেয়। ফ্রান্স সরাসরি সমুদ্রে ফেলে দেয়। যুক্তরাষ্ট্রের এমআইটি-সহ বেশ কয়েকটি জাতীয় গবেষণাগার এসব কৌশলের তুলনা করেছে। গবেষকেরা আই-১২৯ পরিবেশে ছড়ালে তা মানুষ ও প্রকৃতির ওপর কী প্রভাব ফেলতে পারে, সেই তথ্য সংগ্রহ করেছেন।

আই-১২৯ এমন এক পদার্থ, যা দেখা, গন্ধ নেওয়া বা অনুভব করা যায় না। কিন্তু এটি নিউক্লিয়ার বর্জ্যের বড় সমস্যা। কারণ, এটি বহু বছর ধরে সক্রিয় থাকে। আই-১২৯ উপাদানের অর্ধজীবন প্রায় ১ কোটি ৫৭ লাখ বছর। এটি মাটি ও পানির মধ্য দিয়ে সহজেই ছড়িয়ে পড়তে পারে। যুক্তরাষ্ট্রে বর্জ্য সংরক্ষণ নীতিতে আই-১২৯-কে বড় ধরনের ঝুঁকির উপাদান হিসেবে ধরা হয়। পরিবেশ সংরক্ষণ সংস্থা (ইপিএ) পানিতে আই-১২৯-এর পরিমাণ প্রতি লিটারে সর্বোচ্চ ৫ দশমিক ৬৬ ন্যানোগ্রাম পর্যন্ত সীমিত করেছে—যা যেকোনো তেজস্ক্রিয় উপাদানের জন্য নির্ধারিত সর্বনিম্ন সীমা।

বিভিন্ন দেশে নিউক্লিয়ার বর্জ্য ও পারমাণবিক জ্বালানি ব্যবস্থাপনায় ভিন্নতা দেখা যায়। ফ্রান্স খরচ হয়ে যাওয়া পারমাণবিক জ্বালানি পুনর্ব্যবহার করে। সেখানে প্রতিবছর প্রায় ১৫৩ কিলোগ্রাম আই-১২৯ সমুদ্রে ফেলা হয়। যদিও এটি অনুমোদিত সীমার মধ্যে, গবেষকেরা দেখেছেন এই পদ্ধতিতে ব্যবহৃত আই-১২৯-এর প্রায় ৯০ শতাংশ পরিবেশে চলে যাচ্ছে। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রে এসব বর্জ্য বিশেষ পাত্রে সিল করে মাটির গভীরে পুঁতে রাখা হয়। আবার অনেক দেশ আই-১২৯-কে অগভীর ভূগর্ভস্থ স্থানে সংরক্ষণ করে, যা ঝুঁকিপূর্ণ। শত শত বছর পর যদি কেউ ভুলবশত সেই জায়গা খনন করে, তাহলে নতুন ঝুঁকি তৈরি হতে পারে।

নিউক্লিয়ার বর্জ্য সংরক্ষণ নিয়ে বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ বাড়ছে। ভবিষ্যতে কোনো ব্যর্থতা ঘটলে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে। বিজ্ঞানী হারুকো ওয়েনরাইট বলেন, আই-১২৯ সংরক্ষণ অত্যন্ত জরুরি। কিছু দেশ বিপুল পরিমাণে আই-১২৯ পরিবেশে ছাড়ছে। পরিবেশ সুরক্ষার ইতিহাসে ১৯৬০-এর দশক থেকেই পারমাণবিক বর্জ্য ফেলা ও নিঃসরণ নিয়ে উদ্বেগ শুরু হয়। বায়ু ও পানিতে এসব বর্জ্য ছড়িয়ে পড়ার কারণে দুশ্চিন্তা আরও বাড়ছে।

একটি মন্তব্য করুন

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন