বগুড়া-২ আসনে নিজের প্রার্থিতা ঘোষণা দিলেন মাহমুদুর রহমান মান্না
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বগুড়া-২ (শিবগঞ্জ) আসন থেকে প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিলেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না। আসনটি তাঁকে বিএনপি ছেড়ে দিতে পারে বলে গুঞ্জন আছে। কেননা, বগুড়ার সাতটি সংসদীয় আসনের মধ্যে বগুড়া–২ বাদে বাকি ছয়টিতে প্রাথমিক প্রার্থী ঘোষণা করেছে বিএনপি।
এরপরও স্থানীয় বিএনপির একটি অংশ কয়েক দিন ধরে দাবি করে আসছে, শিবগঞ্জ নয়, মাহমুদুর রহমান মান্নাকে ঢাকায় কোনো আসন ছেড়ে দিতে পারে বিএনপি। তবে আজ বুধবার বিকেলে শিবগঞ্জ উপজেলার কিচক বাজারে নাগরিক ঐক্য আয়োজিত সমাবেশে বিষয়টি স্পষ্ট করেছেন দলের সভাপতি। প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাহমুদুর রহমান মান্না জানান, শিবগঞ্জ থেকেই প্রার্থী হচ্ছেন তিনি।
এ বিষয়ে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি আরও বলেন, ‘যেহেতু আমার বাড়ি শিবগঞ্জে। আমি চাই, আমি শিবগঞ্জে রাজনীতি করব। আমাকে ধাক্কা দিয়ে অন্য জায়গায় পাঠাতে পারবে না। এইটা আমার জায়গা। শিবগঞ্জের উন্নয়ন যাতে হয়, ভালো যাতে হয়, সেই লক্ষ্যে কাজ করব। আমি আপনাদের সাথে চাই, সমর্থন চাই। ভোট যদি হয়, আমি এখানে দাঁড়াব। আমার দল আছে, দলের নিবন্ধন আছে; মার্কা আছে। আমার মার্কায় আমি ভোট করব।’
সমাবেশে মাহমুদুর রহমান মান্না আরও বলেন, ‘কারও সঙ্গে শত্রুতা নেই, যে ভালো কাজ করবে, তার সাথে আছি। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আমাকে বলেছেন, “আমরা আপনাদের চাই, আপনারা ভালো মানুষ। আপনারা বিগত দিনে আন্দোলন করেছেন, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছেন।” আমি বলেছি, আমার কোনো দাবি নাই, আমার দাবি জনগণের পক্ষে। এই দাবি যদি মেলে, তাহলে সবার পক্ষে আছি।’
বিএনপির সঙ্গে ভোটের জোটের বিষয়ে মাহমুদুর রহমান মান্না জানান, আসন ভাগাভাগি নিয়ে বিএনপির সঙ্গে আলোচনা চূড়ান্ত হয়নি, আগে থেকেই সমঝোতা ছিল। তিনি বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছি। সরকার পরিবর্তনের আন্দোলন নয়, সমাজ পরিবর্তনের আন্দোলন করছি। কোথায় কার কী অবস্থা আছে, আসন নিয়ে এ সপ্তাহের মধ্যে আলোচনা হবে। আরপিও যা বলবে, তার বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই। আমরা দাবি করতে পারি, সংশোধনের জন্য। আমরা জোটগতভাবে ১৪২ আসন এবং নাগরিক ঐক্যের জন্য ৫০-৬০টি আসন চাইব। এর মধ্যে ২৫ থেকে ৩০টি আসনে নাগরিক ঐক্য লড়াই করতে পারবে। আমরা যৌথভাবে নির্বাচন করার চেষ্টা করছি, এখনো সবকিছু চূড়ান্ত হয়নি।’
সমাবেশে নাগরিক ঐক্যের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাকিব আনোয়ার, গাজীপুর নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক রানা, ছাত্র ঐক্যের নেতা তৌফিক হাসান প্রমুখ বক্তব্য দেন।
বগুড়া–২ আসনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে যাঁরা আলোচনায় আছেন, তাঁদের মধ্যে অন্যতম জেলা বিএনপির সহসভাপতি ও শিবগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মীর শাহে আলম। দলীয় মনোনয়নের তালিকায় তাঁর নাম না থাকলেও তিনি এলাকায় সভা-সমাবেশ, গণসংযোগের মতো কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছেন।
মাহমুদুর রহমান মান্নার সমাবেশ থেকে শিবগঞ্জে প্রার্থী হওয়ার ঘোষণার বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপি নেতা মীর শাহে আলম বলেন, ‘বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বগুড়া-২ আসনে নির্বাচনী প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন। নির্দেশমতো ধানের শীষের পক্ষে জনমত গঠন ও দলীয় প্রতীকে ভোট চেয়ে এলাকায় নানা কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছি। বগুড়া-২ (শিবগঞ্জ) আসনটি বিএনপির দুর্গ। এখানে ধানের শীষের জনপ্রিয়তা তুঙ্গে। শরিক দল নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্নাকে এ আসন ছেড়ে দেওয়ার গুঞ্জন থাকলেও তাঁর দলের প্রতীক আলাদা। ধানের শীষ ছাড়া অন্য প্রতীকে নির্বাচন করে এখানে জয় নিশ্চিত করা কঠিন হবে।’

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন