চাঁপাইনবাবগঞ্জে ২০ বছরে সর্বোচ্চ বৃষ্টি, শহর জলমগ্ন
![]() |
| রাতের প্রবল বৃষ্টিতে ডুবে যায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের বিভিন্ন এলাকা। চাঁপাইনবাবগঞ্জ সার্কিট হাউসের ফটকের সামনে। আজ শনিবার সকালে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
চাঁপাইনবাবগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলায় গড়ে ১৯১ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ২৬০ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। এতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভাসহ আশপাশের অনেক এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে।
অতিরিক্ত বৃষ্টিতে জনজীবনে ভোগান্তির পাশাপাশি মাঠের ধান হেলে পড়েছে। মাসকলাই ও সবজি ক্ষেতেরও ক্ষতি হয়েছে। কৃষি বিভাগ মাঠে নেমে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণে কাজ করছে।
গতকাল শুক্রবার প্রায় সারা রাত বৃষ্টির পর আজ শনিবার সকালে শহরের বিভিন্ন এলাকায় পানি জমে থাকতে দেখা যায়। সার্কিট হাউস সড়ক, নিউমার্কেট, ক্লাব সুপার মার্কেটের সামনের সড়ক, পুরাতন বাজার, নিমতলা, বাতেন খাঁ মোড়সংলগ্ন এলাকা, প্রফেসর পাড়া, জেলা ও দায়রা জজ ও জেলা প্রশাসকের বাসভবন এলাকা—সবখানেই ছিল জলাবদ্ধতা।
শনিবার দুপুর পর্যন্তও কোর্ট এলাকার আশপাশে পানি জমে ছিল। স্থানীয়দের অভিযোগ, অপরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থার কারণে পানি নামতে দেরি হচ্ছে।
![]() |
| বৃষ্টিতে জলমগ্ন হয়ে পড়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের অক্ট্রয় মোড় এলাকা | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ইয়াছিন আলী বলেন, ‘গত ২০ বছরে এক দিনে এত বৃষ্টি হয়নি চাঁপাইনবাবগঞ্জে। শুক্রবার রাতে রেকর্ড বৃষ্টি হয়েছে জেলাজুড়ে।’
তিনি জানান, সদরে ২৬০ মিলিমিটার, শিবগঞ্জে ১৭৫ মিলিমিটার, গোমস্তাপুরে ১৮০ মিলিমিটার, নাচোলে ১৭৫ মিলিমিটার ও ভোলাহাটে ১৬৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। জেলায় গড় বৃষ্টির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৯১ মিলিমিটার।
ইয়াছিন আলী বলেন, ‘অনেক জায়গায় মাঠের ধান কিছুটা হেলে পড়েছে। কৃষিতে কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা জানার জন্য আমরা খোঁজ নিচ্ছি।’
সদর উপজেলার দেবীনগর ইউনিয়নের রানীনগর গ্রামের কাবিরুল ইসলাম বলেন, গত রাতের প্রবল বর্ষণে পানির স্রোতে দেবীনগর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড ও আলাতুলি ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের মাঝের একটি কালভার্ট হেলে পড়েছে। এটি তিন–চার মাস আগে নির্মাণ করা হয়েছিল।
একই ইউনিয়নের বালুগ্রাম এলাকার মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, গত রাতে বৃষ্টির পানিতে পদ্মার ১৪ ও ১৫ নম্বর এলাকার বেড়িবাঁধের কিছু অংশ ভেঙে গেছে। এতে তাঁর দুই বিঘা পাঁচ কাঠা পেঁয়াজের জমি নদীতে তলিয়ে গেছে।
তিনি আরও জানান, দেবীনগর ও আলাতুলি ইউনিয়নের মাঝের ঢাবের মাঠের প্রায় এক হাজার বিঘা জমির শীতকালীন সবজি ও ফসল পানিতে ডুবে গেছে। এতে কৃষকেরা বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বেন।
গোমস্তাপুর উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান হাসানুজ্জামান নুহু বলেন, গতকালের ভারী বৃষ্টিতে জমির ধানের গাছগুলো হেলে পড়েছে। এতে ফসলহানির আশঙ্কা করছেন কৃষকরা।
ভোলাহাট উপজেলার পোলাডাঙ্গা এলাকার মো. আমিরুল ইসলাম বলেন, বৃষ্টির কারণে ভোলাহাটের বেশ কিছু জলাশয় ভেসে গেছে। এর ফলে সবজি ও ফসলের মাঠও ডুবে গেছে। এতে মিষ্টিকুমড়া ও টমেটোর জমি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন