[tenolentSC] / results=[3] / label=[ছবি] / type=[headermagazine]

ককটেল বিস্ফোরণ ও আগুনের পর ঢাকায় নেমেছে নিস্তব্ধতা

প্রকাশঃ
অ+ অ-
কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ১৩ নভেম্বর ‘ঢাকা লকডাউন’ কর্মসূচি ঘিরে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে চেকপোস্টে তল্লাশি করছে পুলিশ। এদিকে সড়কে যানবাহনের সংখ্যাও কম দেখা যায়। ছবি ফার্মগেট ও রামপুরা এলাকা থেকে তোলা | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

রাজধানীতে ককটেল বিস্ফোরণ ও যানবাহনে আগুন লাগার ঘটনায় সাধারণ মানুষ আতঙ্কিত। নগরের বিভিন্ন এলাকায় মানুষের উপস্থিতি স্বাভাবিক দিনের তুলনায় অনেক কম। সড়কে গাড়ির সংখ্যা ও উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে।

ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের ঢাকার দিকে যাওয়া পথে পুলিশ বাস থামিয়ে যাত্রীদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে। এই সময় তাদের ব্যাগ ও মুঠোফোনও পরীক্ষা করা হচ্ছে  | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

বুধবার রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশ, বিজিবি ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক অবস্থানে আছে। রাতে শহরের বিভিন্ন স্থানে পুলিশের তল্লাশি কার্যক্রমও জোরদার করা হয়। একাধিক এলাকায় ছড়িয়ে পড়া ককটেল বিস্ফোরণ ও আগুনের ঘটনায় সাধারণ মানুষ উদ্বিগ্ন হয়েছেন। তবে এখন পর্যন্ত বড় কোনও হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ।

গুলিস্তান জিরো পয়েন্টের মোবাইল রিচার্জ দোকানী রফিকুল ইসলাম বলেন, 'আজ সকাল থেকে ককটেল বিস্ফোরণ আর বাসে আগুন লাগার খবর শুনে সবাই আতঙ্কিত। রাস্তায় মানুষ কম, আমাদের দোকানেও গ্রাহক খুব কম এসেছে। সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা খুব জরুরি।' 

মেট্রোরেলে চড়ে কারওয়ান বাজার থেকে আগারগাঁও যাচ্ছেন শফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, 'আজ সকালে মেট্রোরেলে চড়ে দেখলাম রাস্তায় মানুষ অনেক কম। ককটেল বিস্ফোরণ ও বাসে আগুন লাগার খবর শুনে সবাই আতঙ্কিত। সাধারণ মানুষ নিরাপদে যাতায়াত করতে পারছে না।' 

শহীদবাগ কাঁচা বাজারে সবজি বিক্রি করেন মোহাম্মদ আলী বলেন, 'আজ সকাল থেকে বাজারে মানুষ অনেক কম এসেছে। বিক্রি তেমন হচ্ছে না।'  

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় রিক্সা চালক রফিকুল ইসলাম বলেন, 'রাস্তা ফাঁকা থাকায় যাত্রী কম'

মিরপুরের একটি চায়ের দোকানে সম্প্রতি দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলছিলেন কয়েকজন স্থানীয়। তারা বলেন, 'নগরীতে নাশকতা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা মানুষকে ভীত করেছে। বাইরে বের হওয়া এখন কম হয়েছে, মানুষের দৈনন্দিন জীবনও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।'

একই সময় একজন আরও যোগ করেন, 'বিভিন্ন সড়কে চেকপোস্টে তল্লাশি চালাচ্ছে। এতে সাধারণ মানুষের চলাচল সীমিত হয়ে গেছে এবং যানজটও বেড়েছে।' 

এক বাস চালক বলেন, 'বাসে আগুনের ঘটনা ঘিরে সারা শহরে ভীতি দেখা দিয়েছে, তাই বাসে উঠছে খুব কম মানুষ।' 

সকাল থেকে রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও স্থাপনার সামনে বিজিবি সদস্যদের অবস্থান নিতে দেখা গেছে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডে জড়িতদের ধরতে অভিযান চলছে এবং রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

সোমবার গভীর রাত থেকে বুধবার ভোর পর্যন্ত যাত্রাবাড়ী, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার গেট, উত্তরা ও মিরপুর ১ নম্বরে চারটি বাস ও একটি প্রাইভেটকারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

অগ্নিকাণ্ডের তথ্য নিশ্চিত করেছেন ফায়ার সার্ভিস নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ডিউটি অফিসার রাশেদ বিন খালিদ।

বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মিরপুর ১ নম্বরে সনি সিনেমা হলের সামনে ‘শতাব্দী’ পরিবহনের একটি বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা।

রাজধানীর শাহ আলী থানা এলাকায় আজ বুধবার বেলা একটার দিকে শতাব্দী পরিবহনের একটি বাসে আগুন দেওয়া ঘটনা ঘটে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

মঙ্গলবার রাত ১২টা ৫৫ মিনিটে যাত্রাবাড়ীর রায়েরবাগ এলাকায় রাজধানী পরিবহনের একটি বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। এরপর রাত ২টা ৮ মিনিটে যাত্রাবাড়ীর ইবনে সিনা হাসপাতালের সামনে রাইদা পরিবহনের আরেকটি বাসে আগুন লাগে।

রাত ২টা ৩৫ মিনিটে ১০০ ফুট রোড সংলগ্ন বসুন্ধরা গেট এলাকায় একটি প্রাইভেটকারে আগুন লাগে। এরপর ভোর ৪টায় উত্তরার সোনারগাঁও জনপদের খালপাড় এলাকায় রাইদা পরিবহনের আরেকটি বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা।

মঙ্গলবার রাত ৮টায় ধানমন্ডির ১১/এ এলাকায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের (আইসিটি) তদন্ত সংস্থা কার্যালয়ের সামনে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।

২০ মিনিটের চেষ্টায় বাসের আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে বাসের সব সিট আগুনে পুড়ে গেছে | ছবি : ফায়ার সার্ভিসের সৌজন্যে 

এছাড়াও সোমবার রাজধানীর ধানমন্ডি, মোহাম্মদপুর, আগারগাঁও, মিরপুর, বাংলামোটরসহ বিভিন্ন স্থানে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটেছে। 

এসব ঘটনায় কেউ হতাহত না হলেও নগরবাসীর মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

একটি মন্তব্য করুন

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন