নির্বাচন হলে দেশের স্থিতিশীলতা আরও ভালো হবে: সেনাবাহিনী
![]() |
| বুধবার দুপুরে সেনাসদরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন সেনা সদরের ট্রেনিং অ্যান্ড ডকট্রিন কমান্ডের লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. মাইনুল রহমান | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
দেশের জনগণ চাইছে, সরকার ঘোষিত রূপরেখা অনুযায়ী অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হোক। রূপরেখায় নির্ধারিত সময়সীমাও রয়েছে। নির্বাচনের পর দেশের স্থিতিশীলতা বাড়বে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হবে বলে আশা করছে সেনাবাহিনী। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তারা আবার ব্যারাকে ফিরে যাবে।
আজ বুধবার দুপুরে সেনাসদরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সেনা সদরের ট্রেনিং অ্যান্ড ডকট্রিন কমান্ডের লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. মাইনুল রহমান এসব কথা বলেন।
লেফটেন্যান্ট জেনারেল মাইনুল রহমান বলেন, ‘সরকার যে রূপরেখা ঘোষণা করেছে, সেই অনুযায়ী সেনাবাহিনী প্রস্তুতি নিচ্ছে। প্রশিক্ষণ এখন সীমিত পরিসরে হলেও নির্বাচনের সময়ে সেনাবাহিনীর দায়িত্বকে কেন্দ্র করেই পরিকল্পনা করা হচ্ছে। শান্তিকালীন সময়ে সেনাবাহিনীর মূল কাজ হলো যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া। কিন্তু গত ১৫ মাস ধরে আমরা মাঠে দায়িত্ব পালন করছি। প্রয়োজনে নির্বাচন ও পরবর্তী কিছু সময়ও এই দায়িত্ব অব্যাহত রাখতে হতে পারে। ফলে মূল প্রশিক্ষণে বিঘ্ন ঘটছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘গত ১৫ মাসে দায়িত্ব পালন সহজ ছিল না। তাই আমরা চাই, একটি সুষ্ঠু নির্বাচন হোক এবং আমরা সেনানিবাসে ফিরে যাই।’
সেনাবাহিনীকে ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত গুজব প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন স্বার্থান্বেষী চক্র সেনাবাহিনীর নেতৃত্বকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য মিথ্যা অপপ্রচার চালিয়েছে। আমি নিশ্চিত করতে চাই, সেনাবাহিনীর সব সদস্য সেনাবাহিনীর প্রধান ও সিনিয়র লিডারশিপের প্রতি শতভাগ অনুগত। এখন সেনাবাহিনী আরও ঐক্যবদ্ধ, সুশৃঙ্খল এবং দৃঢ়।’
লেফটেন্যান্ট জেনারেল মাইনুল রহমান বলেন, ‘সেনাবাহিনী দেশের জনগণের সেনাবাহিনী; তাই জনগণের স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় দায়িত্ব আমরা পালন করে যাব।’
দুদিন আগে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য দলীয় প্রার্থীদের মনোনয়ন ঘোষণা করা হয়েছে। এর পর কিছু এলাকায় উত্তেজনা ও সংঘাতের ঘটনা ঘটেছে। সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে সাংবাদিকরা সেনাবাহিনীর মিলিটারি অপারেশনস অধিদপ্তরের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল দেওয়ান মোহাম্মদ মনজুর হোসেনকে এই বিষয়ে প্রশ্ন করেন। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ সেনাবাহিনী আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অন্য সব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সহযোগিতা করছে এবং ভবিষ্যতেও করবে।’
নির্বাচনকালীন সরকার বা নির্বাচন পেছানোর গুজবের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ সেনাবাহিনী একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী এবং নির্বাচন কমিশনের পরিপত্র অনুযায়ী সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে।’
সেনাবাহিনীর আসন্ন নির্বাচনে ভূমিকা নিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধান সাক্ষাৎ করেছেন। আলোচনার বিষয়বস্তু ইতিমধ্যে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য প্রয়োজন স্থিতিশীল আইনশৃঙ্খলা। আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে আমরা কাজ করতে বদ্ধপরিকর।’
তিনি আরও জানান, ‘নির্বাচনের সময় ৯০ হাজার থেকে ১ লাখ সেনাসদস্য মাঠে মোতায়েন থাকবে, যা এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ। জেলা, উপজেলা ও আসন ভিত্তিক ক্যাম্প স্থাপন করে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখা হবে। নির্বাচন কমিশনকে সহযোগিতা করার জন্য যা যা প্রয়োজন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী তা করতে প্রস্তুত।’

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন