[tenolentSC] / results=[3] / label=[ছবি] / type=[headermagazine]

প্রাথমিক শিক্ষকদের তিন দফা দাবিতে কর্মবিরতি শুরু, ৬৫ হাজার স্কুলে ক্লাস বন্ধ

প্রকাশঃ
অ+ অ-
বেতনের গ্রেড বৃদ্ধি করাসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলনরত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের ওপর চড়াও হলো পুলিশ। কাঁদানে গ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেড ও জলকামান নিয়ে পুলিশ তাদের ওপর হামলা চালায়। সড়কে পড়ে ছিল অনেকের ভাঙা চশমা ও কলম। শনিবার বিকেলে রাজধানীর শাহবাগে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

দশম গ্রেডসহ তিন দফা দাবি আদায় ও শাহবাগে পুলিশি হামলার প্রতিবাদে আজ রোববার থেকে দেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পূর্ণ দিবস কর্মবিরতি শুরু করেছেন সহকারী শিক্ষকেরা। এর ফলে বিদ্যালয়ে কোনো পাঠদান হচ্ছে না। শিক্ষকেরা একই সঙ্গে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন।

গতকাল শনিবার তিন দফা দাবিতে আন্দোলনে নেমে পুলিশি লাঠিপেটার শিকার হওয়ার পর নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। নতুন কর্মসূচি অনুযায়ী, তারা শহীদ মিনারে লাগাতার অবস্থান চালিয়ে যাবেন এবং বিদ্যালয়গুলোতে পূর্ণ দিবস কর্মবিরতি পালন করবেন। আন্দোলনকারী ‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ’-এর নেতা মোহাম্মদ শামছুদ্দীন মাসুদ শনিবার সন্ধ্যায় এ তথ্য জানিয়েছেন। 

সহকারী শিক্ষক পদটি ১০ম গ্রেডে করার দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন শিক্ষকেরা। তাঁদের অন্য দুটি দাবি হলো শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতি এবং চাকরির ১০ ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড দেওয়া।

এর আগে বিকেলে শাহবাগে প্রাথমিক শিক্ষকদের মিছিলে পুলিশ চড়াও হয়। লাঠিপেটা, কাঁদানে গ্যাস, জলকামান ও সাউন্ড গ্রেনেডে শতাধিক শিক্ষক আহত হন। শিক্ষকেরা অভিযোগ করেছেন, পুলিশ হামলা চালিয়েছে বিনা উসকানিতে। অন্যদিকে পুলিশ বলছে, শিক্ষকেরা বাধা উপেক্ষা করে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার দিকে এগোলে তাদের ছত্রভঙ্গ করা হয়।

হামলার পর শামছুদ্দীন মাসুদ জানিয়েছেন, তারা শহীদ মিনারে ফিরে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করবেন। তিনি প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতির সভাপতি। আরও কয়েকটি সংগঠন নিয়ে ‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ’ গড়ে উঠেছে এবং এ আন্দোলন চালাচ্ছে।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের বার্ষিক প্রাথমিক বিদ্যালয় শুমারি (এপিএসসি) অনুযায়ী, দেশে মোট প্রাথমিক বিদ্যালয় ১ লাখ ১৪ হাজার ৬৩০টি। এর মধ্যে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ৬৫ হাজার ৫৬৭টি। সরকারি ও বেসরকারি মিলিয়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি শিক্ষার্থী প্রায় দুই কোটি। এর মধ্যে এক কোটি শিক্ষার্থী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ে।

বর্তমানে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকেরা জাতীয় বেতন–স্কেলের ১৩তম গ্রেডে বেতন পান। তবে তারা এখন ১০ম গ্রেডে বেতন বৃদ্ধি করতে দাবিতে আন্দোলন করছেন। তাদের অন্য দুই দাবি হলো—শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতি এবং চাকরির ১০ ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড দেওয়া।

কিছুদিন আগে তারা সহকারী শিক্ষকদের বেতন ১১তম গ্রেডে উন্নীত করার দাবি জানিয়েছিলেন। এবার তারা আরও এগিয়ে ১০তম গ্রেডের দাবিতে আন্দোলন চালাচ্ছেন। এত দিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বেতন ছিল ১১তম গ্রেড। দীর্ঘ আইনি লড়াই শেষে ৪৫ জন প্রধান শিক্ষকের রিট আবেদন মেনে তাদের বেতন এক ধাপ বাড়িয়ে ১০ম গ্রেডে উন্নীত করা হয়েছে। এর ফলে দেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বেতন ১০ম গ্রেডে উন্নীত হওয়ার পথ তৈরি হয়েছে।

এই প্রক্রিয়া বাস্তবায়নের জন্য শিগগিরই সরকারি সিদ্ধান্ত আসতে পারে। সরকারি সূত্র জানিয়েছে, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সহকারী শিক্ষকদের বেতন ১১তম গ্রেডে উন্নীত করার চেষ্টা করছে। 

প্রাথমিক শিক্ষকদের পাশে দাঁড়ালেন হাসনাত আব্দুল্লাহ
তিন দফা দাবিতে আন্দোলনরত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের পাশে থাকার ঘোষণা দিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ। একই সঙ্গে তিনি শিক্ষকদের ওপর পুলিশের হামলারও নিন্দা জানিয়েছেন। শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে তিনি এই ঘোষণা দিয়েছেন। 

একটি মন্তব্য করুন

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন