মনোনয়ন পরিবর্তন চেয়ে কুষ্টিয়া-৪ আসনে সড়ক অবরোধে বিএনপি সমর্থকরা
![]() |
| কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার হলবাজার এলাকায় মনোনয়নবঞ্চিত নেতার অনুসারীদের বিক্ষোভ মিছিল। বুধবার বিকেলে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
কুষ্টিয়া-৪ (কুমারখালী-খোকসা) আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমীর মনোনয়ন পরিবর্তনের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন কুমারখালী উপজেলা বিএনপির সভাপতি নুরুল ইসলাম আনছার প্রামাণিকের অনুসারীরা। বুধবার বিকেলে কুমারখালী গোলচত্বর এলাকায় কুষ্টিয়া-রাজবাড়ী আঞ্চলিক মহাসড়ক অবরোধ করে তারা বিক্ষোভ করেন।
রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে গত সোমবার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে ২৩৭টি আসনে দলীয় প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। কুষ্টিয়া-৪ আসনে মনোনয়ন পান বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমী। এই আসনে মনোনয়নপ্রার্থী ছিলেন কুমারখালী উপজেলা বিএনপির সভাপতি নুরুল ইসলাম আনছার প্রামাণিক।
বিক্ষোভের আগে বিকেল পাঁচটার দিকে কুমারখালী হলবাজার এলাকায় সংবাদ সম্মেলন করেন আনছার প্রামাণিকের অনুসারী ও সমর্থকরা। কুমারখালী-খোকসা তৃণমূল বিএনপির ব্যানারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন শিলাইদহ ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী নেওয়াজ। এ সময় পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি কে এম আলম, চাঁদপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি কাজী মোমেনুল হক, জগন্নাথপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আব্দুল করিম, নন্দলালপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাকসহ শতাধিক নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন।
লিখিত বক্তব্যে বিএনপি নেতা আলী নেওয়াজ বলেন, দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে কুষ্টিয়া-৪ আসন সম্পর্কে জানাতে আজকের সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে। জাতীয় নির্বাচনে খোকসা-কুমারখালী আসনে সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমিকে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। কিন্তু গত ১৭ বছর তিনি মাঠে ছিলেন না। সাধারণ মানুষের কাছে মেহেদী আহমেদ একজন জনবিচ্ছিন্ন নেতা। ৫ আগস্টের পর তিনি হঠাৎ উদয় হয়ে কোন কারণেই মনোনয়ন পেয়েছেন, তা স্থানীয়রা জানেন না। তবে গত ১৭ বছরে কুমারখালী উপজেলা বিএনপির সভাপতি নুরুল ইসলাম আনছার প্রামাণিক জুলুম-নির্যাতন, হামলা-মামলা মোকাবিলা করে দলীয় নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষের উপকার করেছেন।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়েছে, কুমারখালীতে ভোটের সংখ্যা ২ লাখ ৯৮ হাজার এবং খোকসায় ১ লাখ ১৫ হাজার। কুমারখালীতে দ্বিগুণের বেশি ভোট থাকা সত্ত্বেও প্রতিবারই খোকসা থেকে (মেহেদীর গ্রামের বাড়ি) মনোনয়ন দেওয়া হয়। আসন্ন নির্বাচনে প্রার্থী পরিবর্তন না করলে এই আসনে বিএনপিকে জয়লাভ করানো সম্ভব হবে না।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি কে এম আলম বলেন, 'জনগণের আশা ও তৃণমূল নেতা-কর্মীদের প্রত্যাশা না মেনে মেহেদী রুমিকে মনোনয়ন দেওয়ায় সবাই ক্ষুব্ধ। প্রার্থী পরিবর্তন করে না দিলে এখানে বিএনপির ভরাডুবির শঙ্কা আছে। ৩ নভেম্বর মনোনয়ন ঘোষণার পর থেকে তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা প্রার্থী পরিবর্তনের আন্দোলন চালিয়ে আসছেন। আজকের সংবাদ সম্মেলনও সেই নিয়মিত কর্মসূচির অংশ।'
সংবাদ সম্মেলন শেষে বিএনপির শতাধিক নেতা-কর্মী বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিলটি কুমারখালী হলবাজার, গণমোড়, থানা মোড়, স্টেশন বাজার প্রদক্ষিণ করে কুষ্টিয়া-রাজবাড়ী আঞ্চলিক মহাসড়কের কুমারখালী গোলচত্বর এলাকায় সড়ক অবরোধ করে। এতে সাময়িকভাবে সাধারণ মানুষ ভোগান্তিতে পড়েন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন