লালদিয়ার পর ধাপে ধাপে নিউমুরিং টার্মিনাল প্রকল্পও এগোচ্ছে
![]() |
| চট্টগ্রাম বন্দরের স্থাপনা বিদেশি কোম্পানির কাছে না দেওয়ার দাবিতে মশাল মিছিল করেছে বন্দর রক্ষা পরিষদ। আজ সন্ধ্যায় নগরের বড়পোল এলাকায় পোর্ট কানেকটিং সড়কে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল বা এনসিটি বিদেশি কোম্পানির হাতে ছেড়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া এগিয়ে নিচ্ছে সরকার। আগামী ডিসেম্বরে সংযুক্ত আরব আমিরাতের কোম্পানি ডিপিওয়ার্ল্ডের সঙ্গে চুক্তির জন্য কাজ এগিয়ে নিচ্ছে।
এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে ১৬ নভেম্বর প্রকল্পের দরপত্র মূল্যায়নের জন্য ৭ সদস্যের একটি কমিটি গঠনের প্রস্তাব করেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে এই কমিটির অনুমোদনের জন্য চিঠি দেন বন্দরসচিব মো. ওমর ফারুক। প্রস্তাবিত কমিটিতে আহ্বায়ক করা হয়েছে বন্দর পর্ষদের সদস্য অতিরিক্ত সচিব মো. মাহবুব আলম তালুকদারকে।
গত সোমবার লালদিয়ার চরে টার্মিনাল নির্মাণ ও পরিচালনার জন্য ঢাকার একটি হোটেলে ডেনমার্কের মায়ের্সক গ্রুপের এপিএম টার্মিনালসের সঙ্গে চুক্তি করে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। টার্মিনাল নির্মাণ ও পরিচালনার জন্য ডেনমার্কের কোম্পানির সঙ্গে ৩৩ বছরের জন্য কনসেশন চুক্তি হয়। একই দিন বিকেলে বুড়িগঙ্গার তীরে পানগাঁও নৌ টার্মিনাল ২২ বছর পরিচালনার জন্য সুইজারল্যান্ডের মেডলগ এসএ কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি হয় বন্দরের।
এদিকে নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল ‘এনসিটি’ পরিচালনায় চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি–সম্পর্কিত প্রক্রিয়ার প্রশ্নে রুল শুনানি আজ বুধবার হওয়ার কথা রয়েছে। বাংলাদেশ যুব অর্থনীতিবিদ ফোরামের পক্ষে সংগঠনটির সভাপতি মির্জা ওয়ালিদ হোসাইন চলতি বছর রিট করেন।
আদালতে বিচার চলমান অবস্থায় বন্দর কর্তৃপক্ষ নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনালে প্রক্রিয়া এগিয়ে নেওয়ার সুযোগ নেই বলে জানান রিট আবেদনকারীর আইনজীবী। রিটকারীর আইনজীবী মো. আনোয়ার হোসেন মঙ্গলবার বলেন, ‘রিট শুনানির জন্য অপেক্ষামাণ। আদালতে বিচারাধীন থাকা অবস্থায় কার্যক্রম গ্রহণ আদালত অবমাননার শামিল।’
উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম বন্দরের বড় এই টার্মিনাল তৈরি হয় ২০০৭ সালে। টার্মিনালটি নির্মাণ ও যন্ত্রপাতি বসাতে বন্দর কর্তৃপক্ষ ধাপে ধাপে মোট ২ হাজার ৭১২ কোটি টাকা খরচ করেছে। বন্দরের আমদানি–রপ্তানি কনটেইনারের বেশির ভাগ এই টার্মিনাল দিয়ে আনা–নেওয়া হয়। বর্তমানে নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল পরিচালনা করছে নৌবাহিনীর প্রতিষ্ঠান চিটাগং ড্রাইডক লিমিটেড। বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে দেওয়ার আগপর্যন্ত চিটাগং ড্রাইডক লিমিটেড এই টার্মিনালটি চালাবে।
‘লাভজনক টার্মিনালগুলো বিদেশিদের দেওয়া যাবে না’
নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল ‘এনসিটি’ ও চিটাগাং কনটেইনার টার্মিনালসহ ‘সিসিটি’ চট্টগ্রাম বন্দরের স্থাপনা বিদেশি কোম্পানির কাছে না দেওয়ার দাবিতে মশালমিছিল ও সড়ক অবরোধ করেছে বন্দর রক্ষা পরিষদ। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নগরের বড়পোল এলাকায় পোর্ট কানেকটিং সড়কে এ কর্মসূচি পালন করেন তাঁরা। এ সময় কিছুক্ষণ যান চলাচল বন্ধ থাকে।
মিছিল–পরবর্তী সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন গণসংহতি আন্দোলনের রাজনৈতিক পরিষদ সদস্য সৈয়দ মোহাম্মদ হাসান মারুফ। বন্দর রক্ষা পরিষদের আহ্বায়ক আবু সাইদ হারুনের সভাপতিত্বে প্রধান বক্তা ছিলেন শ্রমিক নেতা মো. হুমায়ুন কবীর। বক্তব্য দেন বন্দরের সাবেক সিবিএ নেতা মোজাহের হোসেন, মো. আবুল কালাম প্রমুখ।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন