[tenolentSC] / results=[3] / label=[ছবি] / type=[headermagazine]

তওবা ও আখেরি মোনাজাতে শেষ হলো চরমোনাই মাহফিল

প্রকাশঃ
অ+ অ-
আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে চরমোনাই দরবার শরিফের তিন দিনব্যাপী মাহফিল শেষ হয়েছে। শনিবার সকালে চরমোনাই দরবার শরিফে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন 

আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে বরিশালে চরমোনাই দরবার শরিফের তিন দিনব্যাপী মাহফিল শেষ হয়েছে। আজ শনিবার সকালে সমাপনী বয়ানের পর কীর্তনখোলার তীরে লাখো মুসল্লির উপস্থিতিতে আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে এ মাহফিল শেষ হয়। মোনাজাত পরিচালনা করেন চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম।

মোনাজাতে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে হতাহত ব্যক্তিদের জন্য বিশেষ দোয়া করেন চরমোনাই পীর। একই সঙ্গে দেশকে চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসীদের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেন। বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের নিপীড়িত মানুষের জন্য শান্তি ও নিরাপত্তা কামনা করেন তিনি।

সমাপনী বয়ানে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম বলেন, দুনিয়ার লোভই সব পাপের মূল। ব্যক্তিজীবনের আর্থিক অনিয়ম থেকে শুরু করে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের দুর্নীতি ও ফ্যাসিবাদের পেছনে আছে দুনিয়ামুখিতা। অথচ দুনিয়া খুব তুচ্ছ। জীবন শেষ হলে কোনো সম্পদই কারও কাজে আসে না। তাই দুনিয়ার মোহ ছেড়ে আখিরাতমুখী জীবন গড়ার আহ্বান জানান তিনি।

চরমোনাই পীর বলেন, ‘মানুষ আজ বারবার আল্লাহকে ভুলে অবাধ্যতা করছে। অথচ কবরে গিয়ে আল্লাহর ক্ষমা না পাওয়া পর্যন্ত মানুষের নিজেকে নিকৃষ্ট পশুর মতো মনে করা উচিত। তাকওয়া বা আল্লাহভীতি অর্জনের মাধ্যমেই রবের সন্তুষ্টি নিয়ে কবরে যাওয়ার প্রস্তুতি নিতে হবে; যার অন্তরে আল্লাহর ভয় নেই—সে আলেম, মুফতি বা পীর হলেও তাঁর কোনো মূল্য নেই।’

সমাপনী বয়ানে আত্মশুদ্ধির জন্য অহংকার ত্যাগ, হিংসা–বিদ্বেষ পরিহার, রাগ নিয়ন্ত্রণ, নিয়মিত জিকির, অন্তর পরিশুদ্ধ রাখা, গিবতসহ বড় গুনাহ থেকে বাঁচার ওপর গুরুত্ব দেন সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম। পাশাপাশি পরিবারে দ্বীনি শিক্ষা নিশ্চিত করা, পর্দা রাখা, নেশা থেকে বিরত থাকা, আল্লাহওয়ালাদের কিতাব পাঠ, হালকায়ে জিকির ও তালিমে অংশ নেওয়া এবং সঠিকভাবে কোরআন তিলাওয়াতের আহ্বান জানান তিনি।

মাহফিল সফল করতে সম্পৃক্ত সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে চরমোনাই পীর আখেরি মোনাজাতে উপস্থিত প্রশাসন, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, ওলামায়ে কেরাম ও গণমাধ্যমকর্মীদের ধন্যবাদ জানান। আখেরি বয়ানের পর তিনি লিখিত প্রশ্নের উত্তর দেন এবং মুরিদদের সঠিক পথে চলার নির্দেশনা দেন। পরে তিনি সবাইকে তওবা করিয়ে গুনাহ থেকে বাঁচার শপথ করান।

চলতি বছর মাহফিলে মূল সাতটি বয়ানের পাশাপাশি দেশের নামী ওলামায়ে কেরামও বয়ান করেন। আয়োজকেরা জানান, চরমোনাই দরবারের এ মাহফিলের সূচনা ১৯২৪ সালে। প্রতিবছর অগ্রহায়ণ ও ফাল্গুন মাসে দুটি মাহফিল হয়। এর মধ্যে অগ্রহায়ণে ছোট আকারে এবং ফাল্গুনে সবচেয়ে বড় আয়োজনে মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। গত বুধবার শুরু হওয়া মাহফিল আজ সকাল ৯টায় আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হয়।

ইসলামী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় মিডিয়া সেলের প্রধান সমন্বয়ক কে এম শরীয়াতুল্লাহ বলেন, তিন দিনব্যাপী মাহফিলে প্রতিদিন সকাল ও সন্ধ্যায় মোট সাতটি প্রধান বয়ান হয়। উদ্বোধনী ও সমাপনী বয়ান পেশ করেন চরমোনাই পীর সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম এবং মাঝের তিনটি বয়ান পেশ করেন বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটির নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম। এ ছাড়া দেশের বড় বড় দরবারের পীর ও শীর্ষ আলেমরা মাহফিলে বয়ান করেন।

Fetching live reactions...
Was this article helpful?

Comments

Loading comments…
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন