[tenolentSC] / results=[3] / label=[ছবি] / type=[headermagazine]

চুরির অভিযোগে সালিশি বৈঠকের আয়োজন, সকালে যুবকের মরদেহ উদ্ধার

প্রকাশঃ
অ+ অ-

লাশ উদ্ধার | প্রতীকী ছবি

নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলায় একটি গাছে ঝুলন্ত অবস্থায় এক তরুণের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় উপজেলার চানন্দী ইউনিয়নের প্রকল্প বাজার এলাকা থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।

নিহত তরুণের নাম মো. জাফর (১৮)। তিনি ওই এলাকার জাকের হোসেনের ছেলে। স্থানীয়রা জানান, গত শুক্রবার সন্ধ্যায় জাফরের বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগ তুলে প্রকল্প বাজারে সালিস বসান স্থানীয় এক বিএনপি নেতা। এরপর সকালে বাজারের পাশের একটি গাছে জাফরের লাশ পাওয়া যায়।

নিহত জাফরের পরিবার দাবি করেছেন, চুরির অভিযোগে জাফরকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে। তবে অভিযুক্ত বিএনপি নেতা এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

পুলিশ জানায়, মো. জাফর উপজেলার চানন্দী ইউনিয়ন বিএনপির পশ্চিম শাখার সভাপতি মো. সোহেল মাহমুদের বাড়িতে মাসিক চুক্তিতে কাজ করতেন। দুই সপ্তাহ আগে তিনি কাজ শুরু করেন, কিন্তু পাঁচ দিন আগে হঠাৎ কাজ ছেড়ে চলে যান। সোহেল মাহমুদের অভিযোগ, জাফর তাঁদের বাড়ি থেকে আলমারির চাবি, মুঠোফোনের চার্জার ও কিছু টাকা চুরি করেছেন।

স্থানীয়রা জানান, চুরির অভিযোগ নিয়ে গতকাল সন্ধ্যায় হরণী ইউনিয়নের আলী বাজার এলাকা থেকে জাফরকে ধরে নিয়ে যান সোহেল মাহমুদ। এরপর তাঁকে প্রকল্প বাজারে সালিসে হাজির করা হয় এবং স্থানীয় লোকের সামনে চুরির বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জাফরের বাবা জাকের হোসেনকেও সেখানে ডাকা হয়। একপর্যায় তিনি ছেলেকে রেখে বাড়ি চলে যান। স্থানীয় বিএনপির অনেক নেতা-কর্মীও তখন উপস্থিত ছিলেন।

নিহত জাফরের বাবা জাকের হোসেন অভিযোগ করেন, 'তার ছেলেকে চুরির অভিযোগে আটক করে সালিসে নির্যাতন করা হয়েছে। তিনি বলছেন, বাজারে গিয়ে ছেলেকে নিয়ে আসতে চেয়েছিলেন, কিন্তু বাধা দেওয়া হয়। পরে তার ছেলেকে হত্যা করে গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। তিনি এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করেছেন।'

বিএনপি নেতা সোহেল মাহমুদ এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, 'জাফর তাঁর বাড়ি থেকে বিভিন্ন ইলেকট্রনিক যন্ত্র ও টাকা চুরি করেছেন। রাতে জাফরের দেখা মেলায় তাঁকে প্রকল্প বাজারে জিজ্ঞাসাবাদের পর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। হত্যা ও নির্যাতনের অভিযোগ মিথ্যা।'

উপজেলার মোর্শেদ বাজার তদন্তকেন্দ্রের উপপরিদর্শক লিয়াকত আলী বলেন, 'গত রাতে জাফরকে আটক করে প্রকল্প বাজারে সালিসে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জাফর চুরির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এবং পরে ছেড়ে দেওয়া হয়। নিহত জাফরের শরীরে আঘাতের কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে প্রকৃত ঘটনা খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে।' 

হাতিয়া থানার ওসি এ কে এম আজমল হুদা জানান, 'প্রাথমিক তদন্তে হত্যাকাণ্ড না আত্মহত্যা তা নিশ্চিত নয়। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন আসলে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।' 

একটি মন্তব্য করুন

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন