সুনামগঞ্জে অবৈধ বালু তোলা বন্ধে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন, ভাঙনের ঝুঁকিতে স্কুল-কলেজ
সুনামগঞ্জে ধোপাজান (চলতি) নদ থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী। আজ সোমবার দুপুরে বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার পিয়ারপুল এলাকার বেড়িবাঁধের ওপর এ কর্মসূচির আয়োজন করে ‘এসো কাজ করি’ নামের একটি সামাজিক সংগঠন।
বক্তারা জানান, ধোপাজান নদে বালু উত্তোলন নিষেধ। ইজারা না থাকা সত্ত্বেও ড্রেজার দিয়ে নদ থেকে অবাধে বালু উত্তোলন চলছে। কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। এতে ঝুঁকিতে পড়েছে বেড়িবাঁধ। এটি ভাঙলে স্কুল–কলেজ, জনবসতি ও ফসলি জমির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হবে।
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি জাহানারা বেগমের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য দেন স্থানীয় রতারগাঁও উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ মুহসীন আহমদ, শিক্ষক হাবিবুর রহমান, আবদুল হালিম ও আবুল মনসুর, শিক্ষার্থী নাঈম আহমদ ও আশরাফুল ইসলাম।
প্রশাসন ও স্থানীয়দের সূত্রে জানা গেছে, সুনামগঞ্জের সদর ও বিশ্বম্ভরপুর উপজেলাজুড়ে ধোপাজান নদ বয়ে গেছে। ভারত থেকে নেমে আসা এই নদ মিশেছে সুরমা নদীতে। ২০১৮ সাল থেকে নদটির ইজারা বন্ধ আছে। এর মধ্যেও বিভিন্ন সময়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন হয়েছে। বিশেষ করে ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর নদটিতে প্রকাশ্যে বালু লুট শুরু হয়। এ সময় প্রায় কয়েক কোটি টাকার বালু লুট হয়। এখনো নানাভাবে নদটি থেকে বালু তোলা হচ্ছে। এর মধ্যে গত মাসে সেখান থেকে ‘লিমপিড ইঞ্জিনিয়ারিং’ নামের একটি প্রতিষ্ঠানকে ১ কোটি ২১ লাখ ঘনফুট বালু উত্তোলনের অনুমতি দিয়েছে বিআইডব্লিউটিএ। ওই প্রতিষ্ঠান সিলেট–ঢাকা মহাসড়কের চলমান কাজে এই বালু ব্যবহার করবে বলে জানানো হয়েছে। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর সুনামগঞ্জে পরিবেশ আন্দোলনের কর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষ নদে আবারও বালু লুটের আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
এই নদ থেকে বালু–পাথর উত্তোলন বন্ধ এবং বালু উত্তোলনের অনুমতি বাতিলের দাবিতে ১৭ সেপ্টেম্বর চারটি মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ১৭ কর্মকর্তাকে চিঠি দেয় বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা)। চিঠিতে বলা হয়, বালু উত্তোলনের এই সিদ্ধান্ত দেশের প্রচলিত আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন এবং আদালত অবমাননার শামিল।

Comments
Comments