[tenolentSC] / results=[3] / label=[ছবি] / type=[headermagazine]

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় টর্চ জ্বালিয়ে সংঘর্ষে অংশ নেওয়া ১৫ জনের কারাদণ্ড

প্রকাশঃ
অ+ অ-

সরাইল থানা ভবনের সামনের সড়কে অন্ধকারে দুই গ্রামের বাসিন্দাদের সংঘর্ষ। শুক্রবার রাত আটটার দিকে তোলা | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন 

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে সরকারি পুকুরে গোসলকে কেন্দ্র করে দুই গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে রাতভর সংঘর্ষ হয়েছে। টর্চলাইটের আলোয় চলা এই সংঘর্ষ সাড়ে তিন ঘণ্টা ধরে চলেছে। এতে অন্তত অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন। সংঘর্ষে বসতবাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার দুপুরে হালুয়াপাড়ার কয়েকজন শিশু-কিশোর স্থানীয় অন্নদা সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের মালিকানাধীন একটি পুকুরে গোসল করতে যায়। ছোট দেওয়ানপাড়ার কিশোরদের সঙ্গে তাদের কথা-কাটাকাটির ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পুকুরটি সরাইল থানা ভবনের কাছাকাছি অবস্থিত। বিষয়টি মীমাংসার জন্য বিকেলে ছোট দেওয়ানপাড়ার ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য সালাউদ্দিন সুরুজ হালুয়াপাড়া গ্রামে গেলে তাঁকে সেখানে অপদস্থ করা হয়।

এর জেরে সন্ধ্যা সাতটার দিকে উভয় গ্রামের লোকজন দা-বল্লম, ইটপাটকেল ও লাঠিসোঁটা নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষ চলাকালে ছোট দেওয়ানপাড়ার লোকজন সরাইল থানা সড়কে অবস্থান নেয়, আর হালুয়াপাড়ার লোকজন অন্নদা সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের মাঠ ও ভবনের ছাদে অবস্থান নিয়ে পাল্টাপাল্টি হামলা চালায়।

রাত আটটার পর হালুয়াপাড়ার পক্ষে মৌঘলটুলা, চানমনিপাড়া, হাবেলিপাড়া ও স্বল্পনোয়াগাঁও গ্রামের লোকজন সংঘর্ষে যোগ দেন। ছোট দেওয়ানপাড়ার পক্ষে সৈয়দটুলা, নিজসরাইল ও আলীনগর গ্রামের লোকজন অংশ নেয়। রাত ৯টার দিকে সংঘর্ষ সরাইল বৈকাল বাজার পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। এতে ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দেয় এবং সরাইল-অরুয়াইল সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

গুরুতর আহত ছোট দেওয়ানপাড়ার কলেজছাত্র আল আমিন (১৯), ব্যবসায়ী সালমান মিয়া (৩৫), কালা মিয়া (৪০) ও মৌঘলটুলা গ্রামের রাজন মিয়া (২৬) জেলা সদরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আহত অন্যরা স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়েছেন। সংঘর্ষ চলাকালে ছোট দেওয়ানপাড়ার ব্যবসায়ী সালমান মিয়া ও প্রবাসী জাবেদ মিয়ার বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়। একই গ্রামের ছোটন মিয়ার ছাগলের খামার থেকে ২৮টি ছাগল লুট করে নিয়ে যায় প্রতিপক্ষের লোকজন।

রাত সাড়ে ১০টার পর পুলিশ ও যৌথ বাহিনীর সদস্যরা সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হন। যৌথ বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থল থেকে ১৫ জনকে আটক করে ভ্রাম্যমাণ আদালতে সোপর্দ করেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মোশারফ হোসাইন রাতে তাঁর কার্যালয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে ১ জনকে তিন দিনের এবং অন্য ১৪ জনকে দুই দিনের কারাদণ্ড দেন। তবে আটক ব্যক্তিদের মধ্যে কেউই সংঘর্ষে জড়িত দুই গ্রামের বাসিন্দা নয়।

এ ব্যাপারে সরাইল থানার ওসি মোরশেদুল আলম চৌধুরী বলেন, যাঁদের ভ্রাম্যমাণ আদালতে সাজা দেওয়া হয়েছে, তাঁদের সবাইকে ঘটনাস্থল থেকেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি বলেন, 'তারা যদি সংঘর্ষে জড়িত না হতেন, তাহলে তিন-চার ঘণ্টা ধরে চলা সংঘর্ষের সময় ওই এলাকায় কীভাবে অবস্থান করতেন?' দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের আজ শনিবার বেলা ১১টার দিকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। 

একটি মন্তব্য করুন

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন