আবরার ফাহাদের মৃত্যুবার্ষিকী ৭ অক্টোবরকে ‘আধিপত্যবাদবিরোধী দিবস’ ঘোষণার দাবি
![]() |
কুষ্টিয়া কুমারখালী উপজেলার রায়ডাঙ্গা গ্রামে আবরার ফাহাদের কবর জিয়ারত করেন ডাকসুর ভিপি সাদিক কায়েমসহ অন্য নেতারা। বৃহস্পতিবার রাতে তোলা | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের মৃত্যুবার্ষিকী ৭ অক্টোবরকে ‘আধিপত্যবাদবিরোধী দিবস’ ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সহসভাপতি (ভিপি) আবু সাদিক কায়েম।
বৃহস্পতিবার রাত ১১টার পর কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার কয়া ইউনিয়নের রায়ডাঙ্গা গ্রামে আবরার ফাহাদের কবর জিয়ারত শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি এ দাবি জানান।
সাদিক কায়েম বলেন, ‘আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে জানিয়েছি, প্রতিবছর ৭ অক্টোবরকে আধিপত্যবাদবিরোধী দিবস ঘোষণা করা হোক। আশা করি, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও দেশের সব ক্যাম্পাসে এ দিনটিকে আগ্রাসনবিরোধী ও আধিপত্যবাদবিরোধী দিবস হিসেবে ঘোষণা করবে। ডাকসুর পক্ষ থেকেও এ দিনটিকে আধিপত্যবাদবিরোধী দিবস হিসেবে পালন করা হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘শহীদ আবরার ফাহাদ বাংলাদেশের জাতীয় ঐক্যের প্রতীক, আমাদের প্রেরণার বাতিঘর। আধিপত্য আর আগ্রাসনের বিরুদ্ধে কথা বলার কারণেই খুনি হাসিনা ও তাঁর সহযোগীরা (নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ) সারা রাত নির্যাতন চালিয়ে তাঁকে হত্যা করেছে। শহীদ আবরার আমাদের যে পথ দেখিয়েছেন, সেই পথ ধরেই জুলাই বিপ্লব হয়েছে। আবরারের যে চেতনা ছিল, জুলাইয়ের সব শহীদও সেই চেতনা ও আকাঙ্ক্ষা ধারণ করেছিলেন।’
ডাকসুর সহসভাপতি (ভিপি) সাদিক কায়েম বলেছেন, গত ১৬ বছরে দেশে ফ্যাসিবাদী শাসন চলেছে। প্রতিটি ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা গণরুম কালচার চালু করে শিক্ষার্থীদের অধিকার কেড়ে নিয়েছিল। আধিপত্য আর আগ্রাসনের বিরুদ্ধে যাঁরা কথা বলেছেন, তাঁদের নানাভাবে ট্যাগ দিয়ে, ফাঁসিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ সময় বাংলাদেশ ভারতের ‘সাবজেক্ট কলোনি’তে পরিণত হয়েছিল। ভারতের নির্দেশেই দেশের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সবকিছু নির্ধারিত হতো।
তিনি বলেন, ‘সেই সময় শহীদ আবরার সব শোষণ, আগ্রাসন আর ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের নির্যাতনের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিলেন, কথা বলেছিলেন এবং পুরো জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন। আমরা তাঁকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি। বাংলাদেশের মানুষও সব শহীদকে সম্মানের সঙ্গে স্মরণ করবে।’
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ভিপি সাদিক কায়েম বলেন, ‘আজ জুলাই বিপ্লবের এক বছর পূর্ণ হলো। শহীদরা জীবন দিয়েছেন একটি বৈষম্যবিরোধী, ন্যায়ভিত্তিক বাংলাদেশ গড়ার জন্য। কিন্তু আমরা দেখছি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সেই আকাঙ্ক্ষাকে যথাযথভাবে ধারণ করছে না। এটা আমাদের কষ্ট দিয়েছে। আমরা অনুরোধ করব, শহীদদের স্বপ্নকে ধারণ করতে। যদি তা না হয়, তাহলে খুনি হাসিনা ও ফ্যাসিবাদীদের যেরকম পরিণতি হয়েছে, তার চেয়ে ভয়াবহ পরিণতি তাঁদের হবে।’
আবরার ফাহাদের কবর জিয়ারতের সময় উপস্থিত ছিলেন তাঁর বাবা বরকত উল্লাহ, ডাকসুর কার্যনির্বাহী সদস্য রায়হান উদ্দিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আরাফাত হোসাইন ও শাকিলসহ আরও অনেকে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন