[tenolentSC] / results=[3] / label=[ছবি] / type=[headermagazine]

মানবাধিকার নিয়ে প্রেস সচিবের বক্তব্য শুনে 'অসুস্থ' বোধ করছেন নূর খান

প্রকাশঃ
অ+ অ-

জুলাই অভ্যুত্থান-পরবর্তী এক বছরে দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকে উপস্থিত বক্তারা। বুধবার বিকেলে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন  

প্রধান উপদেষ্টা কার্যালয়ের প্রেস সচিব শফিকুল আলম মনে করেন, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল। মানবাধিকার লঙ্ঘনের যে চিত্র গণমাধ্যমে দেখা যায়, বাস্তবতা তার চেয়ে অনেক ভালো।  বুধবার বিকেলে ঢাকার বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে মানবাধিকার সংগঠন সপ্রাণ আয়োজিত এক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন।

প্রেস সচিব বলেন, বাংলাদেশের মানবাধিকার প্রতিবেদনের একটি বড় সমস্যা হলো পত্রিকাগুলোর রিপোর্টের ওপর নির্ভর করা। যে পত্রিকার রিপোর্টের ভিত্তিতে প্রতিবেদন তৈরি করা হয়, সেই রিপোর্ট কতটা বিশ্বাসযোগ্য ও নির্ভরযোগ্য, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। তিনি হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মতো আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলোর মাধ্যমে বাংলাদেশের ঘটনাগুলোর সত্যতা নিশ্চিত করার কথা জানান।

বৈঠকে শফিকুল আলম আরও বলেন, অনেক চ্যালেঞ্জ থাকা সত্ত্বেও অন্তর্বর্তী সরকার ভালো কাজ করছে। তবে বক্তব্যের শেষে জরুরি কাজ থাকায় তিনি বৈঠক ত্যাগ করেন।

তবে প্রেস সচিবের এ ধরনের বক্তব্যের সমালোচনা করেছেন একাধিক বক্তা। গুমসংক্রান্ত কমিশনের সদস্য ও মানবাধিকারকর্মী মো. নূর খান বলেন, “সরকারের বয়ান শুনে অসুস্থ বোধ করছি।” তিনি বলেন, শফিকুল আলম যে অভিযোগ দিয়েছেন—যে মানবাধিকার সংগঠনগুলো সব পরিসংখ্যান নেয় পত্রিকা থেকে, সরকারের প্রশাসন যে রিপোর্ট করে সেটি সত্য, আর মানবাধিকারকর্মী ও সাংবাদিকরা যে রিপোর্ট করেন, তার সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা—তা দুর্ভাগ্যজনক। নূর খানের মতে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের একজন প্রতিনিধির কাছ থেকে এমন বক্তব্য শোনা মর্মাহত করার মতো।

জুলাই অভ্যুত্থান-পরবর্তী এক বছরে দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। বুধবার বিকেলে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন  

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা সাইমুম পারভেজ বলেন, প্রেস সচিব সংবাদপত্রের তথ্য থেকে মানবাধিকার-সংক্রান্ত প্রতিবেদন তৈরি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি সংবাদপত্রের প্রতিবেদনের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। তবে শেখ হাসিনার সময়ের মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা সংবাদপত্রের প্রতিবেদন থেকেই জানা গেছে। সাইমুম পারভেজ প্রশ্ন তোলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সমালোচনা করতে হলে কি নতুন প্রতিষ্ঠান গঠন এবং নতুন রাষ্ট্রকাঠামো গড়ে তুলতে হবে।

তিনি বলেন, 'প্রেস সচিব যে বলেছেন ‘বাস্তবতা ভালো’, সেটা ঠিক না। বাস্তবতা মোটেও ভালো নয়।' 

মানবাধিকারকর্মী রেজাউর রহমান লেনিন অভিযোগ করেন, প্রেস সচিব ‘প্রবঞ্চনামূলক’ বক্তব্য দিয়েছেন। তিনি বলেন, 'কথায় কথায় জাতিসংঘ, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালকে উল্লেখ করা, তাদের দিয়ে গবেষণা করানো এবং দেশে প্রতিবেদনগুলো মিথ্যা দেখানোর চেষ্টা—সরকারের এমন বক্তব্য বন্ধ করা উচিত।' 

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মানজুর-আল-মতিন বলেন, 'প্রেস সচিব যে দৃষ্টিকোণে পৃথিবী, বাংলাদেশ ও ঘটনাগুলো দেখেছেন, পুলিশও সেই দৃষ্টিকোণেই দেখেছিল। তখন আন্দোলনকারীরাই আবু সাঈদকে হত্যা করেছিল। যদি সরকারে সবাই শুধু পুলিশের ভাষ্যকেই সত্য ধরে নিতে চায়, তাহলে আমাদের জন্য এটা বড় চিন্তার বিষয়।' 

একটি মন্তব্য করুন

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন