দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডে পাসের হার ও জিপিএ-৫ উভয়ই কমেছে, ইংরেজিতে অকৃতকার্য বেশি
![]() |
| উচ্চ মাধ্যমিকের ফলাফল হাতে পেয়ে শিক্ষার্থীদের বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস। আজ বৃহস্পতিবার সকালে দিনাজপুর শহরের হলিল্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডে এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলে পাসের হার ও জিপিএ-৫ উভয়ই কমেছে। গত ছয় বছরের মধ্যে এবারই সর্বনিম্ন পাসের হার ও জিপিএ-৫ পাওয়া গেছে। তবে দুই ক্ষেত্রেই মেয়েরা এগিয়ে আছেন। এবার বোর্ডটিতে শিক্ষার্থীর পাসের হার ৫৭ দশমিক ৪৯ শতাংশ।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান মহা. তৌহিদুল ইসলামের স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। পরে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।
দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের সূত্রে জানা যায়, এবার ৬৬৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে এক লাখ ৫ হাজার ৮৯১ জন পরীক্ষায় অংশ নেন। এর মধ্যে পাস করেছেন ৬০ হাজার ৮৮২ জন, আর অনুত্তীর্ণ হয়েছেন ৪৫ হাজার ৯ জন, যা শতকরা ৪২ দশমিক ৫০। শুধু এক বিষয়ে ফেল করেছেন ২৭ হাজার ৮৪১ জন। এছাড়া ৪৩টি কলেজ থেকে কোনো শিক্ষার্থীই পাস করেননি।
চেয়ারম্যান তৌহিদুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, 'গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার ফলাফল অপেক্ষাকৃত খারাপ। শিক্ষার্থীদের মধ্যে ইংরেজি ও একাধিক বিষয়ে ফেলের হার বেশি।'
৪৩টি কলেজে কোনো শিক্ষার্থী পাস না হওয়ার বিষয়ে তিনি জানান, ওই কলেজগুলোতে প্রকৃতপক্ষে শিক্ষার্থীর সংখ্যা খুব কম। এমনও কলেজ আছে যেখান থেকে মাত্র একজন বা দুজন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন। তবে এসব কলেজকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হবে। তদন্ত কমিটি গঠন করে শিক্ষার মান যাচাই সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা যায়, দিনাজপুর বোর্ডে এবার পাসের হার ৫৭ দশমিক ৪৯ শতাংশ। যেখানে ২০২৪ সালে পাসের হার ছিল ৭৭ দশমিক ৫৬, ২০২৩ সালে ৭৪ দশমিক ৪৮, ২০২২ সালে ৭৯ দশমিক ০৮, ২০২১ সালে ৯২ দশমিক ৪৩ এবং ২০২০ সালে ১০০ শতাংশ। অন্যদিকে এবার জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৬ হাজার ২৬০ জন শিক্ষার্থী। তুলনায় ২০২৪ সালে ১৪ হাজার ২৯৫, ২০২৩ সালে ৬ হাজার ৪৫৯, ২০২২ সালে ১১ হাজার ৮৩০ এবং ২০২১ সালে ১৫ হাজার ৩৪৯ শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছিলেন।
মেয়েরা পাস ও জিপিএ-৫-এ এগিয়ে
দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডে গত সাত বছর ধরে পাসের হার ও জিপিএ-৫-এ মেয়েরা ধারাবাহিকভাবে ছেলেদের চেয়ে এগিয়ে থাকছেন। এবার ছেলেদের পাসের হার ৫২ দশমিক ৬৫ শতাংশ, আর মেয়েদের পাসের হার ৬১ দশমিক ৯২ শতাংশ। জিপিএ-৫ প্রাপ্ত ছেলেদের সংখ্যা ২ হাজার ৭৭৪, মেয়েদের ৩ হাজার ৪৮৬। চলতি বছরের পরীক্ষার্থী ছিলেন ৫৫ হাজার ৩৭৪ মেয়ে এবং ৫০ হাজার ৫১৭ ছেলে।
পাস ও জিপিএ-৫-এ রংপুর জেলা শীর্ষে
এই শিক্ষা বোর্ডের অধীনে রংপুর বিভাগের ৮টি জেলার ৬৬৬টি কলেজের শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিয়েছেন। পাসের হারে প্রথম স্থানে রয়েছে রংপুর জেলা, যেখানে পাসের হার ৬৮ দশমিক ২৯ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে নীলফামারী জেলা, পাসের হার ৬১ দশমিক ৭৩ শতাংশ। জিপিএ-৫-এও রংপুরের শিক্ষার্থীরা এগিয়ে আছেন। এ জেলায় মোট ২ হাজার ৬২৬ জন শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছেন।
৪৩ কলেজে কোনো শিক্ষার্থীই পাস করেননি
এবার ৪৩টি কলেজ থেকে কোনো শিক্ষার্থী পাস করেননি। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১০টি কলেজ নীলফামারীতে। এছাড়া কুড়িগ্রামের ৯টি, ঠাকুরগাঁওয়ের ৬টি, লালমনিরহাটের ৫টি, রংপুরের ৪টি, দিনাজপুরের ৪টি, পঞ্চগড়ের ৩টি এবং গাইবান্ধা জেলার ২টি কলেজ থেকে কোনো শিক্ষার্থী পাস করতে পারেননি।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন