[tenolentSC] / results=[3] / label=[ছবি] / type=[headermagazine]

পদত্যাগ করতে বলা হয়েছিল দুই উপদেষ্টাকে

প্রকাশঃ
অ+ অ-
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার

অন্তর্বর্তী সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলম এবং স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়াকে সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে পদত্যাগের পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাঁরা আরও সময় নিতে চেয়েছেন। সরকারের দায়িত্বশীল সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।

সূত্র জানায়, মাহফুজ আলম আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে এখন পর্যন্ত আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। তিনি সরকারের দায়িত্বে থাকতে চান। অন্যদিকে আসিফ মাহমুদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে পদত্যাগ করতে পারেন। তবে কোনো বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।

চেষ্টা করেও দুই উপদেষ্টার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে আসিফ মাহমুদ গত ১৪ আগস্ট সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই তিনি পদত্যাগ করবেন। মাহফুজ আলম ২৮ সেপ্টেম্বর এক অনুষ্ঠানে বলেন, 'দুই মাস ধরে আমি অনিশ্চয়তার মধ্যে আছি যে আমি কখন নেমে যাই। মানে আমি কখন নামব, আমি জানি না।'

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ৮ আগস্ট অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। বর্তমানে উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য প্রধান উপদেষ্টাসহ ২৩ জন। তাঁদের মধ্যে দুজন ছাত্র প্রতিনিধি।

সূত্র বলছে, ছাত্র প্রতিনিধিদের কেউ না কেউ উপদেষ্টা পরিষদে শেষ পর্যন্ত থাকুক, এটা চান ছাত্র উপদেষ্টারা। তাঁদের মনে হয়, না থাকলে উপদেষ্টা পরিষদে কেউ তাঁদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করতে পারেন।

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ৮ আগস্ট অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। বর্তমানে উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ২৩ জন, যার মধ্যে দুজন ছাত্র প্রতিনিধি।

সরকার গঠনের সময় উপদেষ্টা পরিষদে ছিলেন ছাত্র প্রতিনিধি মো. নাহিদ ইসলাম। তিনি পরে ২৫ ফেব্রুয়ারি পদত্যাগ করে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক হন। এনসিপি গঠন করেছেন জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া তরুণেরা।

মাহফুজ আলম শুরুতে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ছিলেন। তিনি নিয়োগ পান গত বছরের ২৮ আগস্ট এবং ১০ নভেম্বর উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেন। সে সময় কোনো মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। নাহিদ ইসলাম পদত্যাগের পর তাঁকে তথ্য উপদেষ্টার দায়িত্ব দেওয়া হয়।

অন্যদিকে আসিফ মাহমুদ শুরুতে ছিলেন শ্রম মন্ত্রণালয় ও যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে। এ এফ হাসান আরিফকে (প্রয়াত) সরিয়ে তাঁকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয় গত বছরের নভেম্বরে। বর্তমানে তিনি স্থানীয় সরকার ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে রয়েছেন।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, এই দুই ছাত্র প্রতিনিধি উপদেষ্টা এনসিপির ঘনিষ্ঠ এবং দলটির পরামর্শকের ভূমিকায় রয়েছেন। সর্বশেষ জুলাই জাতীয় সনদ স্বাক্ষর নিয়ে সংকটের মধ্যে ১৪ অক্টোবর রাতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন এনসিপির সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক বৈঠক করে। বৈঠকে দলটির পক্ষে অন্য নেতাদের সঙ্গে একজন ছাত্র প্রতিনিধি উপদেষ্টাও অংশ নেন।

অবশ্য এনসিপি নেতাদের মত হলো, অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের সময় বিভিন্ন দলের কাছ থেকে নাম নিয়ে উপদেষ্টা পরিষদ করা হয়েছে। সে ক্ষেত্রে শুধু দুজন ছাত্র প্রতিনিধি উপদেষ্টাকে সরকার থেকে সরে যেতে বলা তাঁদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়।

এনসিপি নেতারা মনে করছেন, অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের সময় বিভিন্ন দলের নাম নিয়ে উপদেষ্টা পরিষদ তৈরি করা হয়েছিল। তাই শুধু দুজন ছাত্র প্রতিনিধি উপদেষ্টাকে সরে যেতে বলা তাঁদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। এই বিষয়টি এনসিপি নেতারা গতকাল বুধবার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে তুলেছেন, জানিয়েছে একটি দায়িত্বশীল সূত্র।

আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণের দিন ঠিক করা হতে পারে। ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে তফসিল ঘোষণা হওয়ার সম্ভাবনা আছে। এই পরিস্থিতিতে উপদেষ্টা পরিষদ নিয়ে নানা ধরনের আলোচনা রাজনীতিতে সৃষ্টি হয়েছে। বিএনপি চাইছে, উপদেষ্টা পরিষদ থেকে তাদের দলীয় লোকদের সরিয়ে দেওয়া হোক।

এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, অনেক উপদেষ্টা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যোগসাজশ করে ফেলেছেন। জামায়াতে ইসলামের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহেরও কিছু উপদেষ্টার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলেছেন।

এ বিষয়ে লেখক ও গবেষক মহিউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, উপদেষ্টা পরিষদ নিয়ে যেসব বক্তব্য আসছে, তা সরকার ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের ভাবমূর্তির জন্য ক্ষতিকর। এসব বক্তব্যের কারণে জনগণের মধ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে সন্দেহ তৈরি হতে পারে। তাই প্রধান উপদেষ্টাকে সাহসী পদক্ষেপ নিতে হবে। তিনি আরও বলেছেন, দুই ছাত্র উপদেষ্টার উচিত পদত্যাগ করা, অথবা ঘোষণা দেওয়া যে তারা নির্বাচন করবেন না এবং এনসিপির সঙ্গে তাঁদের কোনো প্রকাশ্য বা অপ্রকাশ্য সম্পর্ক নেই।

একটি মন্তব্য করুন

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন