[tenolentSC] / results=[3] / label=[ছবি] / type=[headermagazine]

রাজশাহীতে খুনের মামলা প্রত্যাহারে বিএনপি নেতার ‘জোর সুপারিশ’

প্রকাশঃ
অ+ অ-

হত্যা মামলাকে রাজনৈতিক মামলা হিসেবে প্রত্যাহারের আবেদনের প্রতিবাদে ভুক্তভোগী পরিবারের সংবাদ সম্মেলন। সোমবার দুপুরে রাজশাহী নগরের সিটি প্রেসক্লাবে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন 

রাজশাহীতে পূর্বশত্রুতার জেরে এক ব্যক্তিকে হত্যার মামলাকে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে দেখিয়ে প্রত্যাহার করার চেষ্টা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন নিহত ব্যক্তির ভাই রঞ্জু আহমেদ।

সোমবার দুপুরে রাজশাহী সিটি প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি বলেন, মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদ আওয়ামী লীগ-সমর্থক আসামিদের মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করেছেন। তিনি নিজের এবং পরিবারের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশও করেছেন।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদকে ফোন করা হলেও তিনি সাড়া দেননি। হোয়াটসঅ্যাপেও বার্তা পাঠানো হলেও কোনো উত্তর মেলেনি।

রঞ্জু আহমেদ জানান, ২০০৯ সালের ৬ অক্টোবর চারঘাট উপজেলার রায়পুর বাজারের পথে প্রতিপক্ষের হামলার শিকার হন তিনি। চিৎকারে ভাই মনিরুল ইসলাম, মো. মন্টু ও বাবা শামসুল হক এগিয়ে আসলেও হামলাকারীরা তাদের ওপরও চড়াও হয়। আহত মো. মন্টুকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান। ঘটনার দিনই তিনি চারঘাট থানায় ২২ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। মামলাটি বর্তমানে রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ-৩ আদালতে বিচারাধীন। সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হওয়ার পর ১৪ অক্টোবর যুক্তি তর্কের দিন ধার্য আছে।

মামলাটি চূড়ান্ত নিষ্পত্তির দিকে এগোচ্ছিল, ঠিক তখনই আসামিরা এটিকে রাজনৈতিক মামলা হিসেবে প্রত্যাহারের চেষ্টা শুরু করেছে বলে অভিযোগ করেছেন রঞ্জু আহমেদ। তিনি বলেন, '১ নম্বর আসামি এমদাদুল হক আবু তালেবসহ আটজন আসামি জেলা প্রশাসকের কাছে মামলাটি প্রত্যাহারের জন্য আবেদন করেছেন। তবে এই মামলা মূলত দুটি পরিবারের পূর্বশত্রুতির কারণে, কোনো রাজনৈতিক বিষয় এজাহার বা অভিযোগপত্রে উল্লেখ নেই।' 

রঞ্জু আহমেদ বলেন, দুঃখজনক হলো রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ প্রত্যেক আসামির আবেদনপত্রে ‘জোর সুপারিশ করছি’ লিখে স্বাক্ষর করেছেন। অথচ আসামিরা সবাই স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ও ভায়ালক্ষ্মীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মজিদের অনুসারী।

তিনি নিজেকে ও পরিবারের মানুষদের বিএনপির সমর্থক দাবি করে বলেন, ‘আমি বিএনপি করার কারণে দীর্ঘ ১৫ বছর জেল-জুলুম সহ্য করেছি। ৫ আগস্টের পরও যদি ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত করার জন্য আবু সাঈদের মতো নেতারা কাজ করেন, তাহলে দল ও দেশের ভবিষ্যত কোথায় যাবে, আমরা জানি না।’

সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও জানান, প্রথমে স্থানীয় আওয়ামী লীগ–সমর্থিত চেয়ারম্যান ৯ বিঘা জমির বিনিময়ে মামলাটি আপস করার প্রস্তাব দেন। রাজি না হওয়ায় সম্প্রতি আবু সাঈদ নিজে এসে ৫০ লাখ টাকার বিনিময়ে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য চাপ দেন। রাজি না হওয়ায় তাঁর সমর্থকেরা তাঁকে হুমকি দিচ্ছে, যার কারণে তিনি এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। 

রঞ্জু আহমেদ জেলা প্রশাসক ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে লিখিতভাবে আপত্তি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, তাঁর এই আবেদনে রাজশাহী মহানগর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক এরশাদ আলীও সুপারিশ করেছেন। এছাড়া আবু সাঈদের বিরুদ্ধে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বরাবর লিখিত অভিযোগও দিয়েছেন।

ভাইয়ের হত্যার সুষ্ঠু বিচার চেয়ে রঞ্জু আহমেদ বলেন, ‘সরকারের কাছে আমার আবেদন, এই হত্যা মামলা যেন কোনোভাবেই রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে প্রত্যাহার করা না হয়।’ 

Fetching live reactions...
Was this article helpful?

Comments

Comments

Loading comments…
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন