[tenolentSC] / results=[3] / label=[ছবি] / type=[headermagazine]

রেলওয়ের ইয়ার্ডে দেড় যুগ ধরে অচল ৩০০ মালবাহী ওয়াগন

প্রকাশঃ
অ+ অ-

খোলা আকাশের নিচে রোদ-বৃষ্টিতে নষ্ট হচ্ছে রেলওয়ের পুরোনো ওয়াগন। সম্প্রতি পার্বতীপুর জংশন এলাকা থেকে তোলা | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

বাংলাদেশ রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন ইয়ার্ডে প্রায় দেড় যুগ ধরে পড়ে আছে ৩০০টিরও বেশি মালবাহী ওয়াগন। একদিকে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন ওয়াগন আমদানি করা হচ্ছে, অন্যদিকে পুরোনোগুলো খোলা আকাশের নিচে রোদ-বৃষ্টিতে নষ্ট হচ্ছে। সান্তাহার, পার্বতীপুর ও সৈয়দপুর ইয়ার্ডে এসব ওয়াগন বেশি দেখা যায়। মেরামতের উদ্যোগ না থাকায় এগুলো এখন স্ক্র্যাপ বা পরিত্যক্ত মাল হিসেবে বিক্রির চেষ্টা চলছে।

নীলফামারীর সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার শ্রমিকেরা বলছেন, প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশ সরবরাহ পেলে ওয়াগনগুলো মেরামত করে আবার ব্যবহার করা যেত। এতে রাষ্ট্রীয় অর্থের বিপুল সাশ্রয় হতো। কিন্তু মেটালিসটিক রাবার ইউনিটের ঘাটতি ও চাহিদার অজুহাতে দীর্ঘদিন ধরে এগুলো ফেলে রাখা হয়েছে।

তথ্যমতে, পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন ইয়ার্ডে প্রায় ১৭৫ কোটি টাকার ৩২৯টি বিসি ধরনের মালবাহী ওয়াগন অচল অবস্থায় রয়েছে। প্রতিটির দাম ৫০ থেকে ৫৫ লাখ টাকা। বছরের পর বছর খোলা আকাশের নিচে পড়ে থেকে অকার্যকর হয়ে যাচ্ছে সেগুলো।

সৈয়দপুর রেলওয়ের এক উপসহকারী প্রকৌশলী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, মেটালিসটিক রাবার ইউনিটের সরবরাহ না থাকায় দেড় যুগ ধরে ওয়াগনগুলো মেরামত সম্ভব হয়নি। সান্তাহার জংশন ইয়ার্ডে রয়েছে ৯০টি বিসি ও ২৫টি বিসিএফজি বা হপার ওয়াগন। এ ছাড়া পাবনার ঈশ্বরদী থেকে মেয়াদোত্তীর্ণ আরও ৫০টি ওয়াগন সেখানে রাখা হয়েছে। একই কারণে পার্বতীপুর ওয়াগন ডিপোতে ১২০টি ওয়াগন অচল অবস্থায় পড়ে আছে।

রেল কর্তৃপক্ষ বলছে, এসব ওয়াগনের অর্থনৈতিক আয়ুষ্কাল অনেক আগেই শেষ হয়েছে। পশ্চিমাঞ্চলের প্রধান যান্ত্রিক প্রকৌশলী সাদেকুর রহমান জানান, সাধারণত একটি ওয়াগনের আয়ু ৪০ থেকে ৪৫ বছর। কিন্তু বর্তমানে ইয়ার্ডে পড়ে থাকা ওয়াগনগুলোর বয়স ৭০ বছরের বেশি। বডি, চাকা, বেয়ারিংসহ গুরুত্বপূর্ণ অংশ ক্ষতিগ্রস্ত। ফলে এগুলো আর ব্যবহারযোগ্য নয়।

অন্যদিকে রেলওয়ে শ্রমিক ইউনিয়নের কারখানা শাখার সাধারণ সম্পাদক শেখ রোবায়েতুর রহমানের দাবি, একদিকে রেলওয়ে বলছে মালবাহী ওয়াগনের চাহিদা নেই, অন্যদিকে সম্প্রতি ভারত থেকে ৪২০টি নতুন ওয়াগন আমদানি করা হয়েছে। অথচ স্বল্পমূল্যের রাবার ইউনিট ও কিছু যন্ত্রাংশ না থাকায় পুরোনো ওয়াগনগুলো অচল অবস্থায় পড়ে আছে। 

তাঁর মতে, কাগজে-কলমে অর্থনৈতিক মেয়াদ শেষ হলেও অবকাঠামো ভালো থাকলে মেরামতের মাধ্যমে সেগুলোকে আবার ব্যবহার উপযোগী করা সম্ভব। যেমন মেয়াদোত্তীর্ণ যাত্রীবাহী কোচগুলো জিওএইচ প্রকল্পের মাধ্যমে নতুনভাবে চালু করা হয়। একইভাবে অচল মালবাহী ওয়াগনগুলোকেও আধুনিক রূপে ফিরিয়ে আনা যেত।

রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পড়ে থাকা ওয়াগনগুলোর ভবিষ্যৎ নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে একটি কমিটি কাজ করছে। তাদের প্রতিবেদনের ভিত্তিতেই পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

Fetching live reactions...
Was this article helpful?

Comments

Comments

Loading comments…
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন