[tenolentSC] / results=[3] / label=[ছবি] / type=[headermagazine]

রাজশাহী আবৃত্তি পরিষদের তিন যুগের উচ্চারণ ‘সপ্রাণ থাকো রে মন সবান্ধবে’

প্রকাশঃ
অ+ অ-

রাজশাহী আবৃত্তি পরিষদের ৩৬ বছর পূর্তি উপলক্ষে অনুষ্ঠান। শুক্রবার রাতে রাজশাহী সাংস্কৃতিক সংঘের মাঠে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

হলদে পাখির হাটের মধ্যে কে যেন মুড়ি-মুড়কির ডালা নিয়ে ঢুকলেন। এবার সবাই হামলে পড়লেন ডালায়। হলুদ রঙে হারিয়ে গেলেন ডালার মালিক। তখন মঞ্চে চলছে ছোট পাখিদের ছড়ার কিচিরমিচির। মুড়ির ডামাডোলে সব যেন ডুবে গেল।

গোধূলি থেকে গভীর রাত পর্যন্ত রাজশাহী সাংস্কৃতিক সংঘের মাঠটি যেন হলুদ রঙের হাট হয়ে উঠেছিল। কারও পরনে হলুদ শাড়ি, কারও গায়ে পাঞ্জাবি—সব মিলেমিশে শরৎ সন্ধ্যায় যেন বসন্তের আয়োজন চলছিল। বক্তৃতায় কেউ একজন বললেন, রাজশাহী আবৃত্তি পরিষেদের গায়েহলুদ হচ্ছে। আসলে এমন রঙের আয়োজনটা ছিল জন্মদিনের। শুক্রবার এই পরিষদের তিন যুগ পূর্তি হলো। অনুষ্ঠানের ব্যানারে লেখা ছিল, ‘সপ্রাণ থাকো রে মন সবান্ধবে’।

সন্ধ্যা ছয়টায় অনুষ্ঠান শুরু হয়ে যায়। তখন ছোট–বড় সবাই মঞ্চে। আবৃত্তি পরিষদের সদস্য শোভনের উপস্থাপনায় জানা গেল শুরু থেকে কারা পরিষদে যুক্ত ছিলেন। পরিষদ যাঁদের হারিয়েছে, তাঁদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হলো। এরপর সুকান্ত ভট্টাচার্যের জন্ম শতবর্ষ পূর্তি স্মরণে তাঁর ‘আগামী’ কবিতাপাঠের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়।

অনুষ্ঠানে সুকুমার রায়ের ‘আবোল তাবোল’ ছড়াটি ছিল ছোট ছেলেমেয়েদের দলীয় পরিবেশনা। তাদের হইচইয়ে মুখর ছিল পুরো মাঠ। আবৃত্তি পরিষদের সদস্য মিলন ও ছনি মঞ্চে আসেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রেমের কবিতা সংকলন নিয়ে। আরও দুই সদস্য হাবীব ও ইপ্সিতা পূর্ণেন্দুপত্রীর ‘কথোপকথন’ চালিয়ে গেলেন এই পর্বে।

নওগাঁ থেকে অনুষ্ঠানে এসেছেন সংগঠনের পুরোনো সদস্য তানিয়া খন্দকার। আবৃত্তি পরিষদের সদস্য শান্তা আবৃত্তির নেপথ্য সুর সংযোজনের কাজ করছেন। এরই মধ্যে মুড়ি-মুড়কি, চানাচুর আর বাতাসার ডালা এল। বলার অপেক্ষা রাখে না, অল্পক্ষণের মধ্যেই ‘হরিলুট’ হয়ে গেল ডালার মুড়ি।

অনুষ্ঠানের মাঝেমধ্যে অনুভূতি ব্যক্ত করার পর্ব চলছে। অনুভূতি প্রকাশ করেন হিন্দোল সংগীত বিদ্যালয়ের কর্ণধার সলক হোসেন, প্রথম আলোর রাজশাহীর নিজস্ব প্রতিবেদক আবুল কালাম মুহম্মদ আজাদ, তানিয়া খন্দকার প্রমুখ।

এরপর ছিল গান, কবিতা ও মাউথ বিট বাদ্যযন্ত্রের পরীক্ষামূলক একটি পরিবেশনা। মাউথ বিট বাজাচ্ছিলেন শিল্পী মোরসালিন।

পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সদস্যসচিব (বর্তমানে সহসভাপতি) মনিরা রহমান সবকিছু তদারক করে বেড়াচ্ছেন। অনেক দিন পর যাঁরা এসেছেন, তাঁদের খোঁজখবর নিচ্ছেন। এরই মধ্যে এই পর্বের উপস্থাপক ঔড়ব আজাদকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। মাইক্রোফোনে মনিরা রহমান ঘোষণা দিলেন, অনুষ্ঠান ঘোষণা ফেলে উপস্থাপক নিজের কাজ করে বেড়াচ্ছেন। এরপর চারদিকে হাসির রোল পড়ে গেল।

পঞ্চকন্যা পূর্বাশা, সোনাক্ষী, রিমঝিম, তোরসা ও রুদ্রার যৌথ আবৃত্তি পরিবেশনা। এরপর বারীন ঘোষের কচি–কাঁচাদের নাটক ‘রূপবদলের রূপকথা’। ছেলেমেয়েরা বিভিন্ন চরিত্রে সেজেছে—টিয়া দৈত্য রাজা, আসল রাজা, হরিণ, দৈত্য রানি, আসল রানি, প্যাঁচা, ময়ূর। নাটক দেখলেন সবাই মুগ্ধ হয়ে।

রাজশাহী আবৃত্তি পরিষদের সদস্য ঔড়ব ও সামিতের স্মৃতিচারণা ছিল জন্মের কত দিন পর থেকে তারা আবৃত্তি পরিষদে আসতে শুরু করেছে, তা নিয়ে। রাজশাহী আবৃত্তি পরিষদের ৩৬ বছরের উচ্চারণ এভাবেই সাজানো হয়েছিল। অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে সংগঠনের সভাপতি জয়দেব ভাদুড়ী আবৃত্তি পরিষদের জন্য শুভকামনা জানালেন। ৩৬ বছরের কথা বললেন কয়েকটি বাক্যে।

Fetching live reactions...
Was this article helpful?

Comments

Comments

Loading comments…
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন