ভোটের দিন ব্যালট বাক্স নিয়ে গেলে পুলিশ কি বাধা দেবে: মাহমুদুর রহমান মান্না
![]() |
জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘জুলাই সনদ ও নির্বাচন’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন জাতীয় নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না। ৭ আগস্ট, জাতীয় প্রেসক্লাব, ঢাকা | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন যদি কোনো প্রার্থী পেশিশক্তি দেখিয়ে ব্যালট বাক্স নিয়ে চলে যেতে চায়, তাহলে পুলিশ সেই প্রার্থীকে বাধা দেবেন কি না, জানতে চেয়েছেন জাতীয় নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না।
আজ রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘জুলাই সনদ ও নির্বাচন’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন মাহমুদুর রহমান মান্না। এই আলোচনা সভার আয়োজন করেছে গণশক্তি সভা।
সাম্প্রতিক সময়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয় লোকজনের সংঘর্ষ, রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে নুরুল হক ওরফে নুরাল পাগলার দরবার শরিফে হামলা-ভাঙচুরের ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।
এমন পরিস্থিতিতে ভোট হলে পুলিশ কতটা ভূমিকা রাখবে, সেই প্রশ্ন তুলে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘যেদিন ভোট হবে সেই দিন যার যেখানে শক্তি আছে, তার যদি মনে হয় যে আমি জিততে পারব না, উনি গিয়ে ব্যালটবাক্সগুলো নিয়ে বাড়িতে চলে গেল। পুলিশ কি বাধা দেবে? এই প্রশ্নগুলো সমাধান না করে, সংস্কার বলেন অন্য যে কথাই বলেন, একটা কথারও মূল্যায়ন হবে না।’
দেশ গভীর সংকটে রয়েছে, মন্তব্য করে এই সংকট কাটাতে সবাইকে ধৈর্য রাখতে হবে বলেন মাহমুদুর রহমান মান্না। তিনি পরস্পরের প্রতি আস্থা রেখে, দেশের কথা বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে বলে জানান।
জুলাই সনদের আইনি বৈধতা দিতে নতুন একটি প্রস্তাব উপস্থাপন করেন মাহমুদুর রহমান মান্না। তিনি বলেন, ‘খুবই গভীর সংকট। যিনি রাষ্ট্রপতি আছেন, উনি যে-ই হন, কী করতে পারি আমরা? যিনি রাষ্ট্রপতি আছেন, উনি সুপ্রিম কোর্টের কাছে সংবিধানের ১০৬ ধারার ভিত্তিতে রায় চাইতে পারেন। জুলাই সনদকে যাতে আইনি কাভারেজ দেওয়া যায়। সুপ্রিম কোর্ট যদি কোনো রায় দেয়। তখন আপনি বলতে পারেন, হ্যাঁ এটার আইনি বৈধতা আছে। এটা দিয়েই নির্বাচন করতে হবে।’
ভালো নির্বাচন নিশ্চিত করা সব রাজনৈতিক দলের দায়িত্ব—উল্লেখ করে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘রাজনৈতিক দল যত বড়, তার দায়িত্ব তত বড়। এই নির্বাচন যাতে হয়, সে ব্যাপারে গ্যারান্টি বা দায়িত্ব বিএনপিকে দিতে হবে, জামায়াতকেও দিতে হবে৷ আর যারা দল আছে, তাদেরও দিতে হবে।’
শাহবাগের আন্দোলনকে কোনো মিডিয়া মব বলেনি উল্লেখ করে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদি বলেন, ‘বাংলাদেশে স্বাধীনতার ইতিহাসে সবচেয়ে নিকৃষ্টতম ভয়াবহ মবের নাম শাহবাগের সন্ত্রাস।’
ওসমান হাদি আরও বলেন, ‘বিএনপি আধিপত্যবাদবিরোধী আন্দোলনের একটি বড় শক্তি। এই শক্তিকে এত বেশি কর্নারড করা যাবে না, যাতে তারা গিয়ে আওয়ামী লীগের হাত ধরে ফেলে। তারা যদি আওয়ামী লীগের হাত ধরে ফেলে তাহলে লড়াইটা আমাদের জন্য আরও কঠিন হয়ে যাবে।’
লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) হাসিনুর রহমান বলেন, গ্রামে মানুষ যেই জনপ্রতিনিধিকে ভোট দেন, সেই জনপ্রতিনিধি নির্বাচনে হেরে গেলে তাঁর ভোটারদের পরের পাঁচ বছর মাথা নিচু করে থাকতে হয়। এই বাস্তবতায় পিআর (সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন) পদ্ধতিকে আমলে নেওয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি।
গণশক্তি সভার সভাপতি সাদেক রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন সাবেক সচিব আব্দুল্লাহ আল মামুন, মেজর (অব.) জামাল হায়দার, নাগরিক নারী ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক ফেরদৌসী আক্তার, গণমুক্তি জোটের মহাসচিব মো. আক্তার হোসেন, জাস্টিস পার্টির চেয়ারম্যান আবুল কাশেম, জনতা ফ্রন্টের চেয়ারম্যান আহাদ আল মামুন, অধ্যাপক দেওয়ান সাজ্জাদ, গণমুক্তি জোটের চেয়ারম্যান শাহরিয়ার ইফতেখার।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন