{getBlock} $results={3} $label={ছবি} $type={headermagazine}

স্পিডবোটে হাওরের গ্রামে গ্রামে ঘুরছেন লুৎফুজ্জামান বাবর

প্রকাশঃ
অ+ অ-

নেত্রকোনার হাওরের গ্রামে গ্রামে ঘুরছেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর। শুক্রবার সকাল থেকে হাওরদ্বীপ উপজেলা হিসেবে খ্যাত খালিয়াজুরিতে অবস্থান করছেন তিনি | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন   

নেত্রকোনার হাওরের গ্রামে গ্রামে ঘুরছেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর। টানা তিন দিন ধরে তিনি তাঁর নির্বাচনী এলাকা নেত্রকোনা-৪ (মোহনগঞ্জ-মদন ও খালিয়াজুরি) আসনের বিভিন্ন গ্রামে যাচ্ছেন। এর মধ্যে গতকাল শুক্রবার সকাল থেকে হাওরদ্বীপ উপজেলা হিসেবে খ্যাত খালিয়াজুরিতে অবস্থান করছেন। সেখানে স্পিডবোটের সাহায্যে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে গিয়ে লোকজনের খোঁজখবর নিচ্ছেন।

দীর্ঘদিন পর বাবরকে কাছে পেয়ে কর্মী-সমর্থকেরাও উচ্ছ্বসিত। আগামীকাল রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত তাঁর খালিয়াজুড়িতে থাকার কথা আছে। পরে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হবেন। লুৎফুজ্জামান বাবরের গ্রামের বাড়ি মদন উপজেলার বাড়িবাদেরা এলাকায়। তিনি নেত্রকোনা-৪ আসন থেকে তিনবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। বিএনপি সরকারের আমলে তিনি স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ছিলেন।

 শনিবার বিকেলে লুৎফুজ্জামান বাবর খালিয়াজুরির কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে স্পিডবোট দিয়ে ঘুরছিলেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মান্নান তালুকদার, খালিয়াজুরি বিএনপির সভাপতি আবদুর রউফ (স্বাধীন), সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান, জেলা স্বেচ্ছাসবেক দলের সহসাধারণ সম্পাদক আবদুর রব (জুয়েল) প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সকাল ১০টা থেকে খালিয়াজুরি সদর ইউনিয়নের গ্রামগুলো ঘুরে বিকেলে নগর ইউনিয়নের আমানীপুর এলাকায় এসে লুৎফুজ্জামান বাবর সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, ‘শুধু বাবর ভাই স্লোগান দিলে হবে না। ১৭ বছর আমি জেলে ছিলাম। সেই সময়ে যারা শিশু ছিল, তারা এখন যুবক। এই যুবকদের তিনভাবে স্বাবলম্বী হতে হবে। ভালোভাবে পড়াশোনা করে, কারিগরি শিক্ষার মাধ্যমে বৈদেশিক কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও ব্যবসা করে। আর অযথা সময় নষ্ট করা যাবে না।’

নেত্রকোনার হাওরের গ্রামে গ্রামে ঘুরছেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর। শুক্রবার সকাল থেকে হাওরদ্বীপ উপজেলা হিসেবে খ্যাত খালিয়াজুরিতে অবস্থান করছেন। দীর্ঘদিন পর বাবরকে কাছে পেয়ে কর্মী-সমর্থকরাও উচ্ছ্বসিত | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন  

এর আগে দুপুরে কৃষ্ণপুর এলাকায় সমাবেশে বাবর বলেন, ‘জনগণের যেকোনো অধিকার, দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের বিষয়ে আপস করব না, অতীতেও করিনি, এখনো করব না ইনশা আল্লাহ। দলকে যাঁরা ভালোবাসেন, দলকে যাঁরা পছন্দ করেন, দলের আদর্শ যাঁরা ধারণ করেন, তাঁদের দলের নির্দেশনা মেনে চলতে হবে। কেন্দ্র থেকে যে নির্দেশনা দেওয়া হবে আপনাদের তা মানতে হবে। সামনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন, অনেক কঠিন পথ আমাদের অতিক্রম করতে হবে। সে জন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। নিজেদের মধ্যে সব বিভেদ ভুলে সংগঠিত থাকবে হবে, ঐক্য ধরে রাখতে হবে।’

নিজের ওপর হওয়া নির্যাতনের বর্ণনা দিতে গিয়ে বাবর বলেন, ‘আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকার মিথ্যা মামলা মৃত্যুদণ্ডসহ সব রকমের সাজা দিয়েছিল। আপনারা আমার জন্য নামাজ পড়ে দোয়া করেছেন, রোজা রেখেছেন। আপনাদের দোয়া ও ভালোবাসায় আল্লাহর রহমতে আজ মুক্ত হয়ে আসতে পেরেছি। আপনাদের প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা ও ভালোবাসা।’

স্থানীয় লোকজন ও বিএনপি দলীয় সূত্রে জানা গেছে, লুৎফুজ্জামান বাবর ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা, চট্টগ্রামে ১০ ট্রাক অস্ত্র চোরাচালান মামলাসহ সব মামলা থেকে খালাস পেয়ে গত ১৬ জানুয়ারি কারামুক্ত হন। এরপর তিনি নিজ নির্বাচনী এলাকায় গেলেও বেশি সময় অবস্থান করেননি। এবার গত বৃহস্পতিবার থেকে এলাকায় অবস্থান করছেন তিনি। দীর্ঘ ১৭ বছর কারাবাসের পর বাবরকে কাছে পেয়ে কর্মী-সমর্থকদের মধ্যেও উদ্দীপনা দেখা যাচ্ছে।

স্বেচ্ছাসেবকদল নেতা আবদুর রব বলেন, লুৎফুজ্জামান বাবর শুক্রবার সকাল থেকে খালিয়াজুরি মেন্দিপুর, চাকুয়া, গাজীপুর, নগর, কৃষ্ণপুরসহ ছয়টি ইউনিয়নের গ্রামে গ্রামে ঘুরছেন। বেশ কয়েকটি হাটবাজারে পথসভা করছেন। এর মধ্যে তিনি ৬৪টি গ্রামের প্রায় ৪২টি গ্রামের মানুষের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেছেন। গ্রামগুলোর চারদিকে পানি থাকায় নৌযাতায়াত সহজে করা যাচ্ছে।

খালিয়াজুরির পুরানহাটি গ্রামের কৃষক শামছুল হক বলেন, দীর্ঘদিন পর বাবরকে কাছে পেয়ে তাঁরা আনন্দিত। তিনি দলীয় কোনো সভা-সমাবেশ না করে সাধারণ মানুষের সঙ্গে কুশল বিনিময় করছেন।

একটি মন্তব্য করুন

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন