[tenolentSC] / results=[3] / label=[ছবি] / type=[headermagazine]

‘প্রধান শিক্ষিকা ডাকলেন, নাহলে হয়তো আমিও সেদিন লাশ হয়ে যেতাম’

প্রকাশঃ
অ+ অ-

নিজস্ব প্রতিবেদক ঢাকা

উত্তরার দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের আত্মার মাগফিরাত ও আহত ব্যক্তিদের দ্রুত আরোগ্য লাভের কামনায় শোক ও দোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করে কর্তৃপক্ষ। সেখানে কথা বলেন অধ্যক্ষ ক্যাপ্টেন জাহাঙ্গীর আলমের (অব.) | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন  

‘পৌনে দুই বছর ধরে আমি এই কলেজের দায়িত্বে আছি। কোনো দিন একটার সময়, ছুটির সময় আমি বাইরে যাই না। আমি বারান্দায় দাঁড়াই, হাঁটাহাঁটি করি, শিক্ষকদের, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দায়িত্ব পালন দেখি, স্টুডেন্টদের দেখি। ওই দিন প্রধান শিক্ষিকা ডেকে নিয়ে গেলেন, ১টার সময় দুজন নতুন শিক্ষকের সাক্ষাৎকার নেবেন। বেলা ১টা ৪ মিনিটের দিকে বের হয়ে সেখানে গেলাম। আর ১টা ১২ থেকে ১৩ মিনিটের মাঝামাঝি সময়ে দুর্ঘটনা ঘটল। না হলে হয়তো আমিও লাশ হতে যেতাম।’

আজ শনিবার সকালে উত্তরার দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের আত্মার মাগফিরাত ও আহত ব্যক্তিদের দ্রুত আরোগ্য লাভের কামনায় শোক ও দোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করে কর্তৃপক্ষ। সেখানে এসব কথা বলেন অধ্যক্ষ ক্যাপ্টেন জাহাঙ্গীর আলমের (অব.)।

নিহত ছেলের কথা বলতে গিয়ে কাঁদছেন বাবা হাবিবুর রহমান | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন  
 
অধ্যক্ষ বলেন, ‘যে বাচ্চারা আমাদের ছেড়ে গেছে, তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করি। এই দুর্ঘটনা যদি ১টা ৪-৫ মিনিটের দিকেও হতো, তাহলে আমরা যে কত কিছু হারাতাম, আরও কতজন মা-বাবা যে সন্তানহারা হতেন; কারণ, স্কুল ছুটির পর প্রায় ১০ মিনিট লাগে বাচ্চাদের বের হতে।’

এ সময় অধ্যক্ষ উদ্ধারকাজে শিক্ষক-কর্মচারীদের ভূমিকার কথা স্মরণ করেন। তিনি বলেন, ‘আপনাদের কষ্ট, আপনাদের বেদনা সবকিছুর প্রতি আন্তরিক শ্রদ্ধা জানাই। যদি কারও মনে এতটুকুও মনে হয় অবহেলাজনিত কারণে, এর দায় একমাত্র আমার আর কারও নয়। আপনারা যেকোনো বিচার করতে পারেন।’

অনুষ্ঠানে মাইলস্টোন স্কুলের সপ্তম শ্রেণির ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষার্থী জারিফ হাসানের বাবাকে কিছু বলার জন্য অনুরোধ জানানো হয়। বাবা হাবিবুর রহমান বলেন, ‘সেদিন নাকি ও স্কুলে আসতে চায়নি। ওর মা বলল।’ তিনি আরও বলেন, ‘ছেলেটা আমার খুব চটপটে ছিল। সে খুব ফ্রেন্ডলি ছিল।’

শোকে কাতর দুই অভিভাবক | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন  

স্কুলের বাংলা মাধ্যমের সহকারী শিক্ষক মাসুকা বেগমও যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় নিহত হয়েছেন। তাঁর শরীরের ৮৫ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল। সহকর্মীরা বলেছেন, তিনি চাইলে কক্ষ থেকে দৌড়ে বের হয়ে যেতে পারতেন। কিন্তু বাচ্চাদের রেখে রুম থেকে বের হননি।

মাসুকার দুলাভাই খলিলুর রহমান বলেন, ‘আমরা ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনা শুনতে পাই। সঙ্গে সঙ্গে মাসুকার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করি। কিন্তু পাচ্ছিলাম না। ঢাকায় স্কুলে এসেও তাঁর খোঁজ নেওয়া হয়। তারপরও পাচ্ছিলাম না। পরে হাসপাতালে তাঁর খোঁজ পাওয়া যায়।’

শোক ও দোয়া অনুষ্ঠানের শুরুতে নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। পরে বক্তব্য দেন প্রধান শিক্ষিকা খাদিজা আক্তার। শেষে নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে দোয়া করা হয়। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন কলেজের ইংরেজি শিক্ষক নুসরাত আলম।

Fetching live reactions...
Was this article helpful?

Comments

Comments

Loading comments…
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন