সিলেট ও বান্দরবানের ১৭টি পাথর কোয়ারি থেকে পাথর উত্তোলন বন্ধের নির্দেশ
![]() |
| হাইকোর্ট | ফাইল ছবি |
সিলেট জেলার ৭টি ও বান্দরবান জেলার ১০টি পাথর কোয়ারি পরিবেশবান্ধব টেকসই ইকো-ট্যুরিজম হিসেবে সংরক্ষণে তিন মাসের মধ্যে মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরোর মহাপরিচালক, সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার এবং সিলেট ও বান্দরবানের জেলা প্রশাসকসহ বিবাদীদের প্রতি এ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি কাজী জিনাত হক ও বিচারপতি আইনুন নাহার সিদ্দিকার সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রোববার রুলসহ এ আদেশ দেন।
এর আগে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) জনস্বার্থে ওই রিট করে। আদালতে বেলার পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মিনহাজুল হক চৌধুরী, তাঁকে সহায়তা করেন আইনজীবী এস হাসানুল বান্না। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মুহা. এরশাদুল বারী খন্দকার।
সিলেট জেলার সাতটি (জাফলং, শাহ আরেফিন টিলা, ভোলাগঞ্জ, উৎমাছড়া, শ্রীপুর, বিছনাকান্দি ও লোভাছড়া) এবং বান্দরবান জেলার ১০টি ঝিরি-ছড়া পাথর কোয়ারি থেকে ধ্বংসাত্মক, ক্ষতিকর ও বিপজ্জনকভাবে পাথর উত্তোলন, আহরণ ও অপসারণ বন্ধে ব্যর্থতা ও নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ও জনস্বার্থবিরোধী ঘোষণা করা হবে না রুলে তা জানতে চাওয়া হয়েছে। উল্লিখিত পাথর কোয়ারিগুলো কেন প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা ঘোষণা এবং পরিবেশবান্ধব টেকসই ইকো-ট্যুরিজম হিসেবে রক্ষা ও ব্যবস্থাপনার নির্দেশ দেওয়া হবে না, রুলে তা–ও জানতে চাওয়া হয়েছে। অননুমোদিত ও অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন, আহরণ ও অপসারণের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কেন আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ, পাথর উত্তোলনের ক্ষতিকর প্রভাব নিরূপণ এবং প্রকৃত দোষী ব্যক্তিদের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায়ের নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, তা–ও জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে।
বেলার আইনজীবী এস হাসানুল বান্না বলেন, ‘ওই পাথর কোয়ারিগুলো থেকে ধ্বংসাত্মক, ক্ষতিকর ও বিপজ্জনক পাথর উত্তোলন, সংগ্রহ ও অপসারণের কার্যক্রম যাতে আর না ঘটে, সে বিষয়ে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। পরিবেশবান্ধব টেকসই ইকো-ট্যুরিজম হিসেবে সংরক্ষণে তিন মাসের মধ্যে একটি মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাথর কোয়ারি ব্যবস্থাপনাসংক্রান্ত গত ২৭ এপ্রিল অনুষ্ঠিত সভার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য একটি কর্মপরিকল্পনাও এই সময়ের মধ্যে প্রণয়ন করতে বলা হয়েছে।’
এস হাসানুল বান্না বলেন, ‘সিলেটের সাতটি পাথর কোয়ারিসহ সিলেটের বিভিন্ন স্থান থেকে ধ্বংসাত্মক ও ক্ষতিকরভাবে পাথর উত্তোলনের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রস্তুত ও প্রকৃত দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা–সম্পর্কিত প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দিয়েছেন। ২০২৪ সালের আগস্ট–পরবর্তী সময় থেকে এখন পর্যন্ত সিলেটের পাথর কোয়ারিসহ বিভিন্ন স্থান থেকে পাথর উত্তোলন, আহরণ ও অপসারণ বিষয়ে সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসককে নিজেদের অবস্থান ব্যাখ্যা করতেও বলা হয়েছে। আদেশ বাস্তবায়ন বিষয়ে তিন মাসের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে বিবাদীদের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।’

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন