প্রতিনিধি পঞ্চগড়
![]() |
বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত | প্রতীকী ছবি |
পঞ্চগড়ের দুটি সীমান্ত এলাকা দিয়ে নারী-শিশুসহ নয়জনকে ঠেলে পাঠিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে তেঁতুলিয়া উপজেলার বাংলাবান্ধা সীমান্ত ও সদর উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়নের ঘাগড়া সীমান্ত এলাকা থেকে তাঁদের আটক করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
বিজিবি ও স্থানীয় সূত্র জানায়, বাংলাবান্ধা সীমান্ত দিয়ে গতকাল দুপুরে এক মা ও তাঁর তিন ছেলেমেয়েসহ চারজনকে এবং রাতে সদর উপজেলার ঘাগড়া সীমান্ত থেকে পাঁচজন নারীকে ঠেলে পাঠায় বিএসএফ। বৃহস্পতিবার রাতে সীমান্ত এলাকা থেকে তাঁদের আটক করে বিজিবি। পরে পঞ্চগড় সদর ও তেঁতুলিয়া থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। আটক ব্যক্তিদের বাড়ি যশোর ও ময়মনসিংহ জেলার বিভিন্ন এলাকায়।
বিজিবি জানায়, গতকাল রাত সোয়া আটটার দিকে তেঁতুলিয়ার বাংলাবান্ধা ইউনিয়নে বাংলাবান্ধা সীমান্তের ৭৩২ নম্বর মেইন পিলারের ৪ নম্বর সাব পিলার থেকে প্রায় ২০০ গজ বাংলাদেশের ভেতরে বিজিবির বাংলাবান্ধা বিওপির সামনে থেকে এক নারী ও তাঁর তিন ছেলেমেয়েকে আটক করে বিজিবি। দুপুরের দিকে ওই সীমান্ত দিয়ে তাঁদের বাংলাদেশের দিকে ঠেলে পাঠানো হয়।
অন্যদিকে গতকাল দিবাগত রাত একটার দিকে সদর উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়নের ঘাগড়া সীমান্তের ৭৫৬ মেইন পিলার থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার বাংলাদেশের ভেতরে ঢাঙ্গীপুকুর বাজার এলাকায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও লোকজনের সহায়তায় পাঁচজন নারীকে আটক করেন বিজিবির ঘাগড়া বিওপির সদস্যরা।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক ব্যক্তিরা বলেন, তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে ভারতে বসবাস করছিলেন এবং বিভিন্ন এলাকায় কাজ করতেন। সম্প্রতি তাঁদের মুম্বাইসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে আটক করে ভারতীয় পুলিশ। পরে উড়োজাহাজ ও বাসে করে সীমান্তে এনে বিএসএফের মাধ্যমে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠানো হয়।
পঞ্চগড় ১৮ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, গত বুধবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে বাংলাবান্ধা সীমান্তের ৭৩১ নম্বর মেইন পিলারের ১৬ নম্বর সাব পিলার থেকে প্রায় ২০০ গজ ভারতের ভেতরে ২২ বছর বয়সী এক বাংলাদেশি নারীকে আটক করেন বিএসএফের ফুলবাড়ী ক্যাম্পের সদস্যরা। পরে বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে ওই সীমান্তের কোম্পানি কমান্ডার পর্যায়ে সৌজন্য সাক্ষাতের মাধ্যমে বিজিবির বাংলাবান্ধা বিওপির সদস্যদের কাছে ওই নারীকে হস্তান্তর করা হয়। তিনি দিনাজপুর জেলার বাসিন্দা। প্রায় এক বছর আগে ওই নারী স্বামীর সঙ্গে ভারতে অনুপ্রবেশ করে শিলিগুড়ি এলাকায় একটি মন্দিরে কাজ নিয়েছিলেন। পরে তাঁকে তেঁতুলিয়া মডেল থানায় হস্তান্তর করে বিজিবি।
সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আশীষ কুমার শীল বলেন, ঠেলে পাঠানো পাঁচজন নারীকে থানায় হস্তান্তর করেছে বিজিবি। প্রাথমিকভাবে তাঁরা নিজেদের বাংলাদেশি বলে জানিয়েছেন। পরিচয় ও নাগরিকত্ব যাচাই করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
তেঁতুলিয়া মডেল থানার ওসি মো. মুসা মিয়া বলেন, বিজিবির হস্তান্তর করা মোট পাঁচজনের বিষয়ে যাচাই-বাছাই চলছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) মাধ্যমে তাঁদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
এর আগে চলতি বছরের ১৬ মে থেকে ৩১ জুলাই ভোর পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে পঞ্চগড় সীমান্ত দিয়ে ১৫৪ জনকে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠায় বিএসএফ।