প্রতিনিধি নাটোর
![]() |
নাটোর জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন। রোববার দুপুরে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
দেশে শ্রমিকদের জন্য যে চিকিৎসাব্যবস্থা আছে, তা অপ্রতুল বলে মন্তব্য করেছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন। তিনি বলেন, ‘আমরা শ্রমিকদের জন্য একটা কেন্দ্রীয় হাসপাতাল নির্মাণ করার চিন্তা করছি। সেটা হয়তো ঢাকার আশেপাশে হতে পারে। যেখানে সব ধরনের ডাক্তার পাওয়া যাবে। আর জেলা সদরে যে হাসপাতাল আছে, সেখানে শ্রমিকদের জন্য কয়েকটা বিছানা (বেড) রাখার জন্য বলেছি।’
সংশয় প্রকাশ করে এম সাখাওয়াত বলেন, ‘জানি না আমাদের এই নির্দেশনা মানা হবে কি না। মন্ত্রণালয় থেকে এ–সংক্রান্ত যে চিঠি দেওয়া হয়েছে, তা সিভিল সার্জন কার্যালয়ে পৌঁছেছে কি না। আপনারা বিদ্যমান সরকারি হাসপাতালগুলোয় শ্রমিকদের বিছানা প্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করবেন।’
রোববার দুপুরে নাটোর জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে এ কথা বলেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন। বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনের চেক হস্তান্তর এবং স্থানীয় প্রশাসন ও ট্রেড ইউনিয়ন নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে তিনি বক্তব্য দেন।
জেলা প্রশাসক আসমা শাহীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, শিল্প–কলকারখানায় ও পরিবহন দুর্ঘটনায় প্রতিনিয়ত শ্রমিকেরা অসুস্থ হন। তাঁদের সুচিকিৎসা না দিতে পারলে শিল্প এগোবে না, কলকারখানা চলবে না। অথচ দেশে শ্রমিকদের জন্য যে চিকিৎসাব্যবস্থা আছে, তা অপ্রতুল।
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বলেন, ‘অনেক শিল্পপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। বিশেষ করে গার্মেন্টস কারখানার মালিকরা শ্রমিকদের প্রাপ্য সঠিকভাবে বুঝিয়ে দেন না। আমি তাঁদের উদ্দেশে প্রায়ই বলে থাকি, অনেকে আমার কথায় রাগ করেন। দেশের অনেক শিল্প–মালিক আছেন যাঁরা টাকা চুরি করার জন্য কারখানা করেন। শ্রমিকদের দেখাশোনা না করে নিজেরা দেশ থেকে পালিয়েছেন। এ কারণে আমাকে কঠোর হতে হচ্ছে। তাঁদের জমি জায়গা নিয়ে নিয়েছি। মন্ত্রণালয় থেকে সেসব প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ করে দিয়েছি। তাঁরা যেখানেই থাকুক, শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ করে বাড়ি কারখানা বুঝে নিক। না পারলে সেসব প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিক।’
এর আগে উপদেষ্টা নাটোরের ২২ জন শ্রমিকের হাতে সন্তানদের জন্য শিক্ষাভাতা ও শ্রমিকদের চিকিৎসাভাতার চেক হস্তান্তর করেন। তিনি উপস্থিত বিভিন্ন ট্রেড ইউনিয়ন নেতার বক্তব্য শোনেন। তিনি প্রত্যেককে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে নেতা নির্বাচনের আহ্বান জানান। সেই সঙ্গে ভাতাভোগীদের তালিকা তৈরির সময় স্বচ্ছতা বজায় রাখার ওপর গুরুত্ব দেন।
সভায় আরও বক্তব্য দেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব অমল কৃষ্ণ মণ্ডল, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আমজাদ হোসাইন, সিভিল সার্জন মুক্তাদির আরেফিন প্রমুখ।