ডিএসসিসির জায়গা দখল করে অবৈধ স্থাপনা, অভিযোগ বিএনপি-স্বেচ্ছাসেবক দলের বিরুদ্ধে

ইট দিয়ে অবৈধ স্থাপনা দোকান ঘর নির্মাণ করছেন স্থানীয় প্রভাবশালীরা | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী  পুরান ঢাকার বাহাদুর শাহ পার্কের পাশেই রয়েছে শহরের প্রথম পানির ট্যাংক। বহু বছর ধরে ট্যাংকের চারপাশ ধীরে ধীরে দখল হয়ে গেছে। এবার সেখানে স্থায়ীভাবে দোকানঘর তোলার কাজ শুরু করেছেন স্থানীয় প্রভাবশালীরা।

সরেজমিন দেখা গেছে, মাত্র কয়েক দিনের মধ্যে ট্যাংকের গা ঘেঁষে চারটি দোকানের কাঠামো দাঁড়িয়ে গেছে। ইট–বালু–সিমেন্ট দিয়ে গড়ে ওঠা এসব স্থাপনার একটি ইতোমধ্যে শাটার লাগানো হয়েছে। বাকি দুটির ছাদ নির্মাণাধীন। আশপাশের ব্যবসায়ীরা বলছেন, এগুলো দ্রুতই দোকান হিসেবে চালু হবে।

স্থানীয় বাসিন্দা হাজী আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘চারপাশে দখলের উৎসব চলছে। কোথাও খালি জায়গা দখল হচ্ছে, কোথাও দোকান দখল করে ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। সিটি করপোরেশন নীরব দর্শকের মতো বসে আছে।’

আরেক বাসিন্দা তোফাজ্জল হোসেনের ভাষ্য, ‘আগে আওয়ামী লীগের লোকজন দখল করত, এখন ইন্টারিম সরকারের সময় বিএনপির নেতারা করছে। এরা ক্ষমতায় গেলে পুরান ঢাকার অবস্থা আরও করুণ হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই জায়গাটা আগে খালি ছিল। হঠাৎ দেখলাম দোকানঘর তৈরি হচ্ছে। আগে ঝুপড়ি তোলা হলেও এবার একেবারে স্থায়ী দখলের চেষ্টা চলছে। শুধু পানির ট্যাংকের পাশ নয়, খান প্লাজার দিকের খালি জায়গাটিও দখল হয়ে গেছে।’

সূত্রাপুর থানা বিএনপি, স্বেচ্ছাসেবক দল ও কবি নজরুল কলেজ ছাত্রদলের কয়েকজন নেতা এই কাজে জড়িত—এমন অভিযোগ উঠেছে। তবে তারা বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ছাত্রদলের এক আহ্বায়ক বলেন, ‘ছাত্রদলের নামে কেউ দখল করলে সংগঠন ব্যবস্থা নেবে। তবে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সেন্টু ও বিএনপির ওয়ার্ড নেতা হিরা এর সঙ্গে যুক্ত বলে অভিযোগ আছে।’

অভিযোগ জানাতে স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা সেন্টুর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি কল কেটে দেন। বিএনপি নেতা হিরার ফোনও বন্ধ পাওয়া যায়।

ঢাকা মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক জহির উদ্দিন তুহিন বলেন, ‘স্বেচ্ছাসেবক দলে কোনো দখলদার বা চাঁদাবাজের জায়গা নেই। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এ বিষয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা হাসিবা খান বলেন, ‘ঘটনার খবর আমার জানা ছিল না। এখনই খোঁজ নিচ্ছি। ঠিকানা পেলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হলে অভিযান চালিয়ে উচ্ছেদ করা হবে।’